সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউপিস্থ সাইচাপাড়া গ্রামে ফসলি কৃষি জমি রক্ষায় অবৈধ ড্রেজার ও মাটি বিক্রেতার বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করায় অভিযোগ দায়ের কারীদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে মনু মুন্সী নামক স্থানিয় এক প্রভাবশালী মাটি বিক্রেতার বিরুদ্ধে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া গ্রামের নজর আলী মুন্সী বাড়ির মৃত ঝাড়ু মিয়ার ছেলে মনু মুন্সী ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ অবৈধ ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে আসছে, ফলে পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের, ফসলি কৃষি জমি ভাঙ্গনের সম্ভাবনা থাকায় তাদের নিজেদের জমি রক্ষার জন্য, অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করতে প্রথমে এলাকার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের বলেন; এতে প্রতিকার না পাওয়ায় পরে প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন, ভূক্তভোগী জমির মালিকরা।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ ড্রেজার চালানো বন্ধ করায় মাটি বিক্রেতা মনু মুন্সী অভিযোগ দায়েরকারীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা ৪নং আমলী আদলতে একটি হয়রানী মূলক, মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
ওই মিথ্যা মামলায় একই এলাকার মৃত রজ্জব আলী পুত্র মো. মোবারক হোসেন ও মো. আমির ইসলাম, মো. আমির ইসলাম এর পুত্র মো. আলা উদ্দিন, মো. মোবারক হোসেন এর পুত্র মো.রায়মন ও মো. মেহেদী হাসানকে আসামী করেন।
এ বিষয়ে মামলার বিবাদী ভূক্তভোগী কৃষি জমির মালিক মোবারক হোসেন বলেন, মনু মুন্সী এলাকায় একজন জবরদখলকারী ও প্রভাশালী হিসাবে পরিচিত। এই মনু মুন্সী তার একটি জমিতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে দীর্ঘদিন যাব্যৎ মাটি বিক্রি করে আসছে। তার জমির পাশে আমাদের ফসলি কৃষি জমি আছে। ওই জমিতে চাষাবাদ করে আমরা আমাদের সংসার চালাই।
মনু মুন্সীর মাটি বিক্রয়ের ফলে আমাদের জমিগুলো দিন দিন হুমকির মুখে পরতে থাকে। আমরা কৃষিজমির মালিকরা আমাদের জমি রক্ষার জন্য তাকে ড্রেজারে মাটি কাটা বন্ধ করার অনুরুধ করলেও সে বন্ধ না করায় আমরা বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট জানিয়ে কোন সুরাহা না পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও থানা বরাবর অবৈধ ড্রেজার বন্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করলে প্রশাসনের উদ্যোগে থানা পুলিশ ড্রেজারটি বন্ধ করে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অবৈধ মাটি বিক্রেতা মনু মুন্সী গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ইং তারিখে কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর ৪নং আমলী আদালতে বাংলাদেশ (২)/৩৪ দন্ডবিধির ৩৭৯/৪২৭/৪৪৮/৫০৬ ধারায় আমাদের বিরুদ্ধে একটি হয়রানীমুলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বনোয়াট এবং ভিত্তিহীন।
তিনি আরও বলেন, অবৈধ মাটি বিক্রেতা মনু মুন্সী এলাকায় একজন দুষ্ট প্রকৃতির প্রভাবশালী লোক হিসাবে বেশ পরিচিত। তার অত্যাচারে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই সে মামলার ভয় দেখানোসহ নানা প্রকার হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি আপনারা খোঁজ নিলে জানতে পারবেন।
এবিষয়ে এলাকাবাসী জানায়, আমরা মোবারক গং এর বিরুদ্ধে মনু মন্সীর দায়ের করা মামলার বিষয়টি শুনেছি। মামলার বিরবনে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এই দায়েরকৃত মামলার বিষয়টি সম্পূর্ণ হয়রানীমূলক ও মিথ্যা। মামলার বিবরনে উল্লেখিত এমন কোন ঘটনা আমাদের সাইচাপাড়া গ্রামে ঘটেনাই।
মামলা দায়েরকারী মনু মুন্সী স্থানীয় ভাবে একজন মুখোশধারী, দুষ্ট প্রকৃতির লোভী, প্রভাবশালী ও মামলাবাজ লোক। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায়না। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে তাকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি ও মামলার ভয় দেখায়। পক্ষান্তরে মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা সমাজে অত্যন্ত সহজসরল ও শান্তিপ্রিয় লোক হিসাবে ব্যপক পরিচিত।
মনু মুন্সী তার জমিতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মাটি কেটে অধিক মূল্যে বিক্রি করে আসছে। যার ফলে পার্শ্ববর্তী কৃষিগুলো ভাঙ্গনের কবলে পরে হুমকীর সম্মুখীন হচ্ছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে স্বল্পমূল্যে ঐ জমিগুলো কিনে নেওয়ার পায়তারা করে। এতে ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনায় ফসলের মাঠ। যে মাঠে ধানসহ বিভিন্ন শাকসবজি ফলায় স্থানীয় কৃষকরা।
নিজেদের ফসলি কৃষি জমি অবৈধ ড্রেজারের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রতিবাদ করায় পার্শ্ববর্তী কৃষি জমির মালিক মোবারক গংদের সাথে মাটি বিক্রেতা মনু মুন্সী বিরোধ সৃষ্টি হয়। মোবারক গং তাদের জমি বাঁচাতে প্রশাসন বরাবর অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধ করার অভিযোগ দায়ের করলে প্রশাসন উক্ত ড্রেজার বন্ধ করায় তাদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেছে মনু মুন্সী এমটাই ধারনা স্থানীয় সচেতন মহলের। সংবাদ অনুসন্ধান কালে উপস্থিত স্থানীয় সচেতন জনতা মোবারকগং এর বিরুদ্ধে মাটি বিক্রেতা মনু মুন্সীর দায়েরকৃত হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
এবিষয়ে জানতে মনু মুন্সীর বাড়িতে খুজ করে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার ব্যবহৃত ফোন নাম্বারে একাধিক বার ফোন করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।