মনির মোশাররফ (দেবিদ্বার):
কুমিল্লার দেবিদ্বারে শামিম আহমেদ নামে এক চা’দোকানীকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আব্দুল আলিম খন্দকার নামে এক আওয়ামীলীগ নেতাকে মিধ্যে আসামী করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় উপজেলার ১০নং গুনাইঘর দক্ষিন ইউনিয়নের উজানীজোড়া পুরাতন বাজারে ওই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। পরে উজানীজোড়া আদর্শ কিন্ডারগার্টেন এন্ড স্কুল মাঠে পুত্র মো. আব্দুল আলিমকে হত্যা মামলার আসামী করায় এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে পিতা আবু মুছা খন্দকার এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত স্থানীয় একটি চক্র আমাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার চেস্টায় লিপ্ত আছে। চক্রটি একই উদ্দেশ্যে গত ১২ এপ্রিল রাতে একটি সালিশ বৈঠকে অনাকাংখিত ঘটনাকে পরিকল্পিত ভাবে অতিরঞ্জিত করে আমার ছেলে মো. আব্দুল আলিম খন্দকারের বিরুদ্ধে থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি ও আমার পরিবার এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানাই। প্রকৃত ঘটনা হলো, গত ১২ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে একটি পারিবারিক সালিশ বৈঠকে আমার ছেলে মো. আলিম খন্দকারসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত হয়ে দুই পরিবারের বিবাদ মিমাংসার চেষ্টা করছিল। সালিশ বৈঠকে বাদ-বিবাদ চলা কালে শামীম আহাম্মদ উত্তেজিত হয়ে বক্তব্য রাখার কারণে সে হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে সে রাতেই স্থানীয়রা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে বাড়ি নিয়ে আসে। পরদিন ১৩ এপ্রিল ভোরে বুকে তার ব্যাথা অনুভব হলে তাকে প্রথমে কুমিল্লা এক আত্মীয়র বাসায় নেয়া হয় এবং পরে কুমিল্লা রেল গেইট সংলগ্ন মীম হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঐদিন দুপুর আড়াইটার দিকে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সকলের ধারণা সে স্ট্রোক করে মারা গেছে। মারা যাওয়ার পর পুলিশ তার সুরতহাল রিপোর্টে কোন রকম মারার চিহ্ন বা দাগ পায়নি। তারপরও আলিম খন্দকার ও সুমন খন্দকারকে আসামী করে শামীম আহাম্মদের স্ত্রী মুর্শিদা আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। স্বাভাবিক মৃত্যুকে পিটিয়ে হত্যার নাটক সাজিয়েছে সমাজের একটি চিহ্নিত দুষ্ট চক্র। তারা আমার পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্থ করা এবং আর্থিক ফায়দা নেওয়ার জন্য অপতৎপরতা চালিয়েছে। আমার বিশ্বাস ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে গেলে সব সত্য উন্মোচিত হবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুর রাজ্জাক, আবুল কাসেম খন্দকার, মো. আব্দুল হালিম, আব্দুল আজিজ খন্দকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মবিন খন্দকার, মো. সহিদ খন্দকার, মতিন খন্দকার প্রমূখ।
উল্লেখ্য গত ঈদের ছুটিতে ৪ খুনের ঘটনার একটি ছিল শামিম হত্যা। একটি পারিবারিক সালিসে গত ১২ এপ্রিল রাতে উজানীকান্দি গ্রামের চা’ দোকানদার শামিম আহাম্মদ(৫০)কে সালিসদার আব্দুল আলিম খন্দকার(৪০) ২টি প্লাষ্টিক ও একটি কাঠের চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী মুরশিদা আক্তার বাদী হয়ে আব্দুল আলিম খন্দকার ও সুমন খন্দকারসহ ২জনকে আসামী করে দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিল।