মামুনুর রশীদ, কুমিল্লা জেলা পতিনিধি : কুমিল্লার দেবীদ্বারে কলেজে ভর্তি হতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে নুসরাত জাহান মুন্নী(১৬) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা করার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সকাল ৭টায় উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কুড়াখাল গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কুড়াখাল গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ৪ মেয়ে ও ২ পুত্র সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান নুসরাত জাহান মুন্নী ধামতী কামিল মাদ্রাসায় আলীম শ্রেণীর প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মঙ্গলবার সকাল ৭টায় নিজ ঘরের একটি কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে নুসরাত জাহান মুন্নী আত্মহত্যা করে। পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার কারন বলতে না পারলেও তার সহপাঠীদের বক্তব্য, মুন্নী কলেজে ভর্তি হতে না পাড়ায় রাগ ও অভিমানে আত্মহত্যা করতে পারে।
তার মৃত্যু সংবাদে দেখতে আসা কয়েকজন বান্ধবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নুসরাত জাহান মুন্নী এবং তার ছোট বোন ইসরাত জাহান ইভা আমাদের সাথে ধামতী কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করে। মুন্নীর ইচ্ছা ছিল কলেজে লেখা পড়া করবে। তার ইচ্ছা উপেক্ষা করেন তার ‘বাবা- মা’। বাধ্য হয়ে ধামতী কামিল মাদ্রাসায় ভর্তি হতে হয়। সেই থেকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে সে মাদ্রাসায় ভর্তি হলেও মাদ্রাসায় লেখা পড়ায় অমনোযোগী ছিল। ঘটনার তিনদিন পূর্বে উপজেলার উজানীজোড়া গ্রামে সে ও তার ছোট বোন ইভাসহ নানার বাড়ি থেকে গত সোমবার বাড়িতে আসে। মঙ্গলবার আমাদের সাথে মাদ্রায় যাওয়ার কথা ছিল। তাই বাড়িতে আসার আগেই শুনি মুন্নী আত্মহত্যা করেছে।
নিহতার মা’ রুমি আক্তার জানান- তার দুই মেয়ে মুন্নী এবং ইভা তাদের নানার বাড়ি থেকে বেড়ায়ে গতকাল দুপুরে বাড়ি আসে। রাতে খাবার খেয়ে পাশের কক্ষে দুই বোন এক সাথে ঘুমায়। আজ (২৪ জানুয়ারী মঙ্গলবার) সকালে উঠে নামাজ পড়ে, আমি রান্না ঘরে যাই, কারন ওরা মাদ্রাসায় যাবে। এসময় মুন্নী পাশের কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আবারো ঘুমাতে যায়। খাবার তৈরী করে তাকে অনেক ডাকা ডাকি করে কোন সাড়া না পেয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে দেখি ঘরের তীরের সাথে ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। পরে তার বাবা দরজা ভেঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করলে দেখি আমাদের মেয়ে আর জীবীত নেই।
মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কলেজে ভর্তি না করিয়ে মাদ্রাসায় কেন ভর্তি করালেন জানতে চাইলে তার বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার মেয়ে যেহেতু মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছে, তাই তাকে মাদ্রাসায়ই ভর্তি করি। আমার মেয়ের সাথে কোন ছেলের সম্পর্ক ছিলনা, মোবাইল ও ব্যবহার করতনা, তবে সে খুব এক রোখা জেদী ছিল, সে যেটা বলত তাই করত।
এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কুষ্ণ ধর জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে আনি। আত্মহত্যার কারন অজ্ঞাত, নিহতের মরদেহ ছোরতহাল রিপোর্ট তৈরী এবং থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি।