বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তার পরিবার। আজ রোববার (১২জুন) বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
জাহিদ হোসেন বলেন, হৃদপিন্ডে আরও দুটি ব্লকসহ নানা জটিলতার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে এভার কেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড।
তিনি বলেন, শনিবার (১০ জুন) ম্যাডামের হার্টে এনজিওগ্রাম করার পর তিনটি ব্লক পাওয়া যায়। একটা ব্লক মেইন গ্রেট ভ্যাসেলে, যেটা বাম দিকের মধ্যে ৯৫%-এর বেশি ব্লক ছিল। যে কারণে উনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। এনজিও গ্রামের পর ওখানে সঙ্গে সঙ্গে স্টেন্টিং করা (রিং পরানো) হয়েছে। এখন উনি সিসিইউতে কার্ডিওলজিস্টদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন।
ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন আরও বলেন, এখন পর্যন্ত উনি (খালেদা জিয়া) শারীরিকভাবে যে অবস্থায় আছেন ডাক্তারদের বক্তব্য হলো যে, ৭২ ঘণ্টা না গেলে কোনো মন্তব্য করা সঠিক হবে না।
বাকি দুইটি ব্লক সম্পর্কে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ম্যাডামের শরীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে অপসারণ করা হবে। কারণ উনার ক্রনিক কিডনি ডিজিজ ও ক্রনিক লিভার ডিজিস আছে। যেসব ওষুধ উনি সেবন করেন সেক্ষেত্রে কিডনির ক্ষতিগ্রস্থতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেজন্য আরও দুটি ব্লক অপসারণের কাজ বাকী রাখা হয়েছে। নানা দিক বিবেচনা করে মেডিকেল বোর্ড ক্রিটিক্যালি যেটা বেশি উনাকে বেশি শারীরিকভাবে কষ্ট দিচ্ছে সেটাতে স্টেন্টিং করেছে।
তিনি বলেন, রোগীর চিকিৎসার ব্যাপারে ডাক্তাররা সার্বক্ষণিকভাবে নজর রাখছেন। টাইম টু টাইম উনার স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখছেন। ম্যাডামের পরিবারসহ কাউকে ডাক্তাররা রোগীর কাছে এলাউ করছেন না। আমরা নিজেরাও সেখানে বেশি যাতায়াত করছি না। বাইরে থেকে যতটুকু সহযোগিতা করার করছি।
গত শুক্রবার (১০ জুন) দিনগত গভীর রাতে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় হঠাৎ বুকে ব্যাথা অনুভব করলে দ্রুত রাজধানীর বসুন্ধরায় এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তার শরীরে কয়েক দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়। ২৮ নভেম্বর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে সেই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাতেও তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে দণ্ড স্থগিত করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ছয় মাসের জন্য সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।