বঙ্গ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : দৈনিক যায়যায়দিন প্রধান কার্যালয় দখল এবং ঠুনকো অজুহাতে পত্রিকা ডিক্লারেশন বাতিলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ বলেন, শফিক রেহমান ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রকাশকের দায়িত্বভার থেকে পদত্যাগ করলেও ২০০৮ সালের ৬ মে পর্যন্ত বেতনভুক্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে তিনি স্বেচ্ছায় সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি তার লিখিত পদত্যাগপত্রে বলেন, ৬ মে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে তার নাম থাকবে। তবে ৭ তারিখ থেকে তার নাম পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে থাকবে না।
শফিক রেহমান পদত্যাগ করার পর শহীদুল হক খান দৈনিক যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে শহীদুল হক খান এ পদ থেকে পদত্যাগ করলে বরুণ শংকর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমতিক্রমে ২০০৮ সালের ২৩ নভেম্বর আমি যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে যায়যায়দিন পত্রিকার মালিকানা হস্তান্তরের পর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নানা প্রতিকূলতায় পত্রিকার বিজ্ঞাপন অস্বাভাবিক হারে কমে গেলেও এর প্রকাশক সাঈদ হোসেন চৌধুরী কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে এখন পর্যন্ত পত্রিকার ছাপা, কাগজ, ইউটিলিটি বিল এবং সংবাদকর্মী ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করে পত্রিকাটি চালু রেখেছেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আরো বলেন, তেজগাঁওয়ের যায়যায়দিন কার্যালয় ও প্রেস বেদখল হওয়ার পর আমরা বিধি মোতাবেক ডিসি অফিসকে অবহিত করে অন্য প্রেস থেকে পত্রিকা ছাপানোর ব্যবস্থা করি। পর পর দুইটি প্রেস পরিবর্তনের বিষয়টিও যথারীতি ডিসি অফিসকে জানানো হয়। কিন্তু ডিসি অফিস শফিক রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঠুনকো অজুহাতে যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে। এরপর চলতি বছরের গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদ হোসেন চৌধুরীর অনুকূলে ঘোষণাপত্র অনুযায়ী দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকাটি এইচআরসি ভবন, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত হবে বলে ঘোষণাপত্র সত্যায়ন করা হয়। ঢাকা জেলা প্রশাসকের ওই কারণ দর্শানো নোটিশের পরবর্তী প্যারায় বলা হয়, শফিক রেহমান যায়যায়দিন পত্রিকাটির ছাপাখানা ও প্রধান কার্যালয় আইনগতভাবে প্রাপ্ত হয়েছেন। অথচ তিনি কোন প্রক্রিয়ায় তা প্রাপ্ত হয়েছেন তার কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
এ ঘটনার পর সাঈদ হোসেন চৌধুরী হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি যায়যায়দিন পত্রিকার সবকিছুই সাঈদ হোসেন চৌধুরীর পক্ষে থাকবে বলে ৩ মাসের স্থিতাবস্থা ঘোষণা করা হয়।
বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য সব উপদেষ্টারা বারবার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলছেন। কোনো অজুহাতে একটি গণমাধ্যমও যাতে বন্ধ না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করছেন। সেখানে যায়যায়দিন আইনগতভাবে নিয়মিত প্রকাশিত হওয়ার পরেও কীভাবে এর ডিক্লারেশন বাতিল করা হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে ডিক্লারেশন বহাল করে যায়যায়দিন পত্রিকার প্রধান কার্যালয় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।