1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করে প্রজ্ঞাপন জারি সাধারণ মানুষ খাদ্যের নিশ্চয়তা ও জীবনের নিরাপত্তা চায়: চরমোনাই পীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩৭ সাংবাদিকের সদস্যপদ স্থগিত ডেঙ্গু আক্রান্তে আজ ৬ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ১০৮৩ আমাদের সাহায্য করার চেষ্টা থেমে গেলে চলবে না: তারেক রহমান হাসিনা নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ভাবতে পারেন, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন: ড. ইউনূস ৪৪তম বিসিএসে ৪ হাজার জনের মৌখিক পরীক্ষা বাতিল আগামী মার্চ-এপ্রিলে নির্বাচন দিতে হবে : এ্যানি কখন নির্বাচন দেওয়া হবে, জানালেন উপদেষ্টা নাহিদ পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না- পুলিশ সংস্কার কমিশন চেয়ারম্যান

“নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের তওবা এবং তাঁর হজ্জ পরবর্তী রাজনীতি (২য় পর্ব)”

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৮৪ বার দেখা হয়েছে

বঙ্গনিউজবিডি রিপোর্ট : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব শামীম ওসমান তার হুমকি-ধমকি সমন্বিত বিবিধ মুখরোচক বক্তব্যের জন্য বরাবরই আলোচনায় থাকেন। গত হজ্জ ব্রত পালনার্থে যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে নারায়ণগঞ্জ বাসির নিকট ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, “যারা আমাকে পছন্দ আর যারা পছন্দ করেন না, সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমি ফেরেশতাও না, শয়তানও না। আমি মানুষ, আমার ভুল ত্রুটি থাকতে পারে।” তার এই বক্তব্যের পর অনেকেই আশ্বস্ত হয়েছিলেন যে, নারায়নগঞ্জের আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে পরমত সহিষ্ণুতা ফিরে আসবে। চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা, মারামারি-কাটাকাটি, খুনোখুনি, সন্ত্রাস ইত্যাদি চিরতরে বিদায় নিবে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের কিছু ঘটনা নারায়ণগঞ্জ বাসিকে রীতিমতো হতাশ করেছে।

গত ১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ২ নং রেলগেট সংলগ্ন চুনকা পাঠাগারের নিকট জড়ো হয়। এ সময় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তাদের রাস্তায় না নামার জন্য বলে। কিন্তু বিএনপি র‍্যালি শুরু করলে পুলিশ লাঠি চার্জ শুরু করে। বিএনপি কর্মীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। প্রায় দেড় ঘন্টা সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে জানা যায় যুবদল কর্মী শাওন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ২০ বছর বয়সের শাওনের বুকে গুলির চিহ্ন ছিল।

গত ৪ আগষ্ট রোববার সকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাদি হয়ে নারায়নগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গোয়েন্দা পুলিশের এস আই মাহফুজুর রহমান কনক-কে প্রধান আসামি করে ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে ১ টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেট ৩০২ ধারায় তা খারিজ করে দেন। এই প্রতিবেদক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারেন। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি তাদের সব ধরনের প্রোগ্রাম দীর্ঘদিন যাবত চাষাঢ়ায় করে আসছিল। বলতে গেলে এটা বিএনপির জন্য একটা নিয়মে পরিনত হয়েছিল। কিন্তু ঐ দিন হঠাৎ করে তাদের প্রোগ্রাম কেন ২ নং রেলগেটে নিয়ে গেল তা এখন নারায়ণগঞ্জে একটি মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। কার পরামর্শে তাদের এই স্থান পরিবর্তন? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেলে শাওন হত্যার বিষয়টি উন্মোচিত হবে বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন। ২ নং রেল গেট এলাকা নাসিক মেয়র (প্রতিমন্ত্রী) সেলিনা হায়াত আইভি’র এলাকা হিসেবে ব্যাপক ভাবে পরিচিত। জনশ্রুতি রয়েছে যে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের আইভি বিরোধী অংশের শীর্ষ নেতৃত্বের ইশারায় বিএনপি ঐ দিন তাদের প্রোগ্রাম স্থল চেঞ্জ করে, যাতে করে যে কোন অঘটনের দায় মেয়র আইভি ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের উপর বর্তানো যায়। তবে মেয়র আইভি’র ভাগ্য ভালো, ঐ দিন তিনি একটি জাপানি ডেলিকেটের সাথে দিন ব্যাপি মিটিংএ ছিলেন। ফলে একজন খুন হলেও ষড়যন্ত্রকারিদের উদ্দেশ্য সফল হতে পারে নাই।

কথিত পুলিশের গুলিতে শাওনের নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীবৃন্দ কর্তৃক আওয়ামী লীগের অফিস আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য এডভোকেট আনিসুর রহমান দীপু একটি প্রতিবাদ মিছিল সংশ্লিষ্ট এলাকা প্রদক্ষিণ করেন, ফলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে নাই। এড. দীপুর সাথে আরো যারা ছিলেন তারা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত-সহ অনেকেই। মজার বিষয় হলো, সেসময় বিএনপির ঘন্টা বাজিয়ে দিয়ে খেলার আহ্বান জানানো শামীম ওসমান বা তার চেলা-চামুন্ডাদের কাউকেই প্রতিবাদ মিছিলটিতে দেখা যায় নাই।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের দূর্ভাগ্য যে, যখনই নারায়ণগঞ্জে কোন ঝামেলা হয় কিংবা হত্যাকান্ড ঘটে তখনই জেলাটির আপামর জনসাধারণ দলমত নির্বিশেষে তার দিকে আঙ্গুল তুলে তাকে দোষারোপ করার চেষ্টা করেন। এর আগে ৭ খুনের ঘটনা ঘটলো। ঐ মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সাথে শামীম ওসমানের একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ পেয়ে গেল। খুনের সাথে শামীম ওসমানও জড়িত মর্মে সাধারণ মানুষ কানাঘুষা করতে লাগলো। তখন তার এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এডভোকেট আনিসুর রহমান দীপু বহু দৌড়-ঝাপ দিয়ে কাঠখড় পুড়িয়ে সংশ্লিষ্ট হত্যা মামলার যাবতীয় নথিপত্র থেকে শামীম ওসমানের নাম বাদ দিতে সক্ষম হন্। তাছাড়া বিএনপি সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে প্রায় ২৫০ টি মামলা হয়েছিল, এড. দীপু বিনে পয়সায় সব মামলা তামাদি করতে সক্ষম হন্। আর এই কারণে বহু মানুষ ন্যায় বিচার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়।

তারপর ঘটলো তরুণ সাংস্কৃতিক কর্মী “তক্বী” হত্যার মতো ঘটনা। নিউজ নারায়ণগঞ্জ’র গত ২৭ আগস্টের রিপোর্টে জানা যায়, নাসিক মেয়র (প্রতিমন্ত্রী) এক কর্মী সমাবেশে বলেন–বিবিধ কারণে “তক্বী” হত্যার বিচার বিলম্বিত হলেও একদিন না একদিন এই হত্যা কান্ডের বিচার হবেই হবে। “তক্বী ” অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে এক প্রতিক হয়ে দাড়িয়েছে। শামীম ওসমানের স্ত্রী লিপি ওসমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ২০০১ সালে কিভাবে বোরকা পরে পালিয়েছে শামীম ওসমান তা সবাই জানে। ‘৭৫ সালের বিয়োগান্ত ঘটনার পরও আপনারা পালিয়েছিলেন।আমরা পালাই নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম বেঁচা বন্ধ করেন। নাটক বন্ধ করেন। মিথ্যা বলা ছেড়ে দেন। রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বানানো ছেড়ে দেন। এই শহরের মানুষ একদিন আপনাদের পিটিয়ে মারবে। প্রেস নারায়ণগঞ্জ’র রিপোর্ট মতে মেয়র আইভি গত ৩ সেপ্টেম্বর দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন, ওমুক ভাই তমুক ভাই শ্লোগান বন্ধ করেন। শুধু মাত্র শেখ হাসিনার নামে শ্লোগান দেন। এসব ভাই ভেসে যাবে যদি শেখ হাসিনা না থাকেন। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন দীর্ঘদিন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সোনারগাঁও-এ কি আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীর আকাল পড়েছে যে বারবার জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে হবে।

লাইভ নারায়ণগঞ্জ’র রিপোর্ট মোতাবেক গত ৩০ আগস্ট মেয়র আইভি এক কর্মী সমাবেশে শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার পরিনতি খুব খারাপ হবে। ১/১১’র সময় অনেককে গ্রেফতার করা হলো, তখন কোন নেতাকে রাস্তায় দেখা যায় নাই। আমরা এখানে অনেকেই আছি, যারা তখন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। উজ্জ্বল এখনো ঐ মামলার আসামি। জাহাঙ্গীর সাহেবেরতো ফাঁসি হয়ে যেতো। আমার উপর হামলা করলেন, আমি ৯ জনকে আসামি করে মামলা দিলাম। এতে নাকি আমি বিরাট ভুল করে ফেলেছি। শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনি হুংকার বাদ দেন। ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতাকে ঐ এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান বানালেন, কই আপনার মিটিংএ তো সে আসে নাই। আপনি টাকার বিনিময়ে মানুষের ক্ষতি করেন। আপনি দলের মধ্যে সব চাইতে বেশি বিভেদ সৃষ্টি করেন। আপনি হেফাজতের ফেরদৌসকে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। ফেরদৌস ইদানীং দীপু ভাইর বিরুদ্ধেও বলার চেষ্টা করছে। আপনি এসব বাদ দেন।

২১ আগস্ট বন্দর এলাকায় এক সমাবেশে মেয়র আইভি বলেন, যারা মাদকের ব্যবসায় করে, যারা মওজুদদারী করে তাদের তথ্য পুলিশকে দিন। জমি জায়গা যারা দখল করে তাদের সাথে থাকবেন না। ২০১১ সাল থেকে আমি আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি এডভোকেট আনিসুর রহমান দীপু-কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন ছোট কর্মী হিসেবে আজীবন কাজ করে যেতে চাই।

চুনকা পাঠাগারের সামনে ১ সেপ্টেম্বরে শাওন হত্যার পর তাৎক্ষণিক ভাবে জেলা যুব দলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি এক বিবৃতিতে বলেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বা মেরুকরণ এমন ভাবে তৈরি করা যে তারা যা চাইবে তাই করতে পারবে। কোন রকমের কারণ ছাড়াই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বিএনপির ঘন্টা বাজিয়ে দিয়ে খেলার আহ্বান জানান। আর সেই জন্য তিনি ঘোষণা দিয়ে লাখো সমর্থকের উপস্থিতি ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন্। শামীম ওসমানের এসব হিংসাত্মক আহ্বানের পর হঠাৎ করে প্রশাসনের চড়াও হওয়াকে অনেকেই তার পূর্ব পরিকল্পিত ভূমিকাকে দায়ী করছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের সাম্প্রতিক কালের গরম গরম বক্তব্য, ঘন্টা বাজিয়ে দেওয়ার বক্তব্য, কিংবা খেলার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দেশব্যাপী ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বর্ণ টেলিভিশনের রিপোর্ট জানাচ্ছে, সাতক্ষীরা বিএনপি নেতা শেখ তরিকুল ইসলাম বলেন—২০০১ সালে বিএনপি যখন তখন শামীম ওসমান পালিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশকে ডিউটিতে তিনি বক্তব্য দেন, খেলা হবে তিনি খেলবেন। আসলে তিনি একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী গডফাদার। চ্যানেল ২৪ রিপোর্টে এসেছে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা এক সমাবেশে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে একজন খেলোয়াড় আছে যিনি সেখানে একজন মহিলার সাথে খেলতে পারেন না। আমাদের সাথে কি ভাবে খেলবেন। বোরকা পরা শামীম ওসমান এবার খেলেছেন কিন্তু মাঠে আসেন নাই। পুলিশকে দিয়ে খেলেছেন। ইউটিউবে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ছাত্র গন অধিকার পরিষদ নেতা তারেক এক ভিডিও প্রোগ্রামে বলেন,

১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের বিএনপির মিছিল লক্ষ্য করে পুলিশ বলছে সামনে থেকে ২-১ টাকে মারো। আগে দিয়ে মারো,২-১ টা মরুক। এটা কি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথা হতে পারে। এস আই কনকের জন্য বরাদ্দ ছিল পিস্তল। কিন্তু সে চায়নিজ রাইফেল পেল কোথায়? অর্থাৎ সে অন্যের রাইফেল দিয়ে গুলি করে অন্যের উপর দোষ চাপাতে চেয়েছিলো। আর্থনিউজবিডির রিপোর্টে এসেছে গত ৩ সেপ্টেম্বর এক কর্মী সমাবেশে বিএনপি নেতা মীর্জা আব্বাস বলেন, নারায়ণগঞ্জে পুলিশ কনক সরাসরি গুলি করে শাওনকে হত্যা করেছে। এই হত্যার জন্য কেউ না কেউ নির্দেশ দিয়েছে। আপনারা বর্ডারে কিছু করতে পারেন না অথচ দেশের মানুষকে মারছেন। দেশবিদেশের ৫ সেপ্টেম্বরের রিপোর্টে এসেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেওয়া শর্ত মেনে চললে বিএনপির সমাবেশে কোন সংঘাত হবে না। অন্য দিকে বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশকে সতর্ক করে বলা হয়েছে যে র‍্যাবের মতো তারাও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট ২ সাংবাদিক তক্বী হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের সার্থে শামীম ওসমানের গ্রেপ্তার দাবি করে আসছেন দীর্ঘদিন যাবত। নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডিজিটাল ‘র রিপোর্ট মারফত জানা যায় নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান মাসুম সাংসদ শামীম ওসমান-কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি উন্নয়নের কথা বলছেন বলতে থাকেন। কিন্তু আপনি যদি হত্যাকান্ডের নির্দেশ দিয়ে থাকেন তাহলে আপনি মুক্তি পেতে পারেন না। তিনি দাবি করেন, তক্বী হত্যার চার্জশীট দ্রুত প্রকাশ করতে হবে। আপনি খুনি, আমরা আপনার বিরুদ্ধে। আপনি জনপ্রতি ৩০০/- টাকা করে দিয়ে জনসভা করেন। কারণ নারায়ণগঞ্জে নতুন ডিসি এসপি আসলে তাদেরকে আপনার দেখাতে হয়। আর এখন গিয়ে লন্ডন বসে আছেন। পরিশেষে তিনি বলেন, তক্বী হত্যার বিচার চাই শামীম ওসমানের বেল নাই।

এই প্রতিবেদক নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে আলাপ কালে জানতে পারলেন, শামীম ওসমান যখন গরম গরম বক্তৃতা দিতে শুরু করেন তখন এখানকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে যান এ কথা ভেবে যে, কোথায় জানি কোন অঘটন ঘটে। কার জানি হায়াত ফুরিয়ে এসেছে ইত্যাদি ভাবনায়। শামীম ওসমান হজ্জে যাওয়ার পূর্বে তওবা করে যে প্রতিশ্রুতি মূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন বর্তমানে তিনি তা থেকে যোজন যোজন দূরে। পূরো আগস্ট মাস তিনি নারায়ণগঞ্জের আনাচকানাচে গরম গরম বক্তৃতা দিয়ে বেড়িয়েছেন। তখন অনেকেই আশংকা করেছিলেন নারায়নগঞ্জে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। ১ সেপ্টেম্বরের শাওন হত্যার ঘটনায় তার কোন হাত আছে কি-না তা সহসা হয়তো জানা যাবে না। তবে বিষয়টি এখন নারায়ণগঞ্জ জেলার টক-অব-দ্যা-টাউন।

নিউজ নারায়ণগঞ্জ’র গত ১২ আগস্টের রিপোর্ট মোতাবেক জানা যায়, শামীম ওসমান এক কর্মী সমাবেশে বলেন, শয়তান সারা জীবন শয়তানী করে কিন্তু সফল হয় না। যারা ষড়যন্ত্র করছেন তাদের বলছি “বি কেয়ারফুল”। বাংলাদেশকে যারা অস্থিতিশীল করতে চান তাদের নাম জানি কিন্তু বলবো না। তারা ধর্মের নামে জেহাদ করে। ধর্মের প্রতি তাদের আস্থা নাই, আস্থা থাকলে মানুষ হত্যা করতো না। ” বি কেয়ারফুল” এবার শেখ হাসিনা বললেও থামবো না। বিদেশে বসে বাংলাদেশকে যারা নতুন করে ধ্বংস করতে চায় তাদের আমি চিনি কিন্তু নাম বলবো না। এক পর্যায়ে তিনি নিজ পরিবারের এক সময়কারের দূরাবস্থার কথা বলতে গিয়ে বলেন, তিন বেলার যায়গায় এক বেলা খেয়েছি। বড় ভাই বাস চালাতেন, মুরগী বেচতেন ইত্যাদি। বর্তমানে ওসমান পরিবারের হালহকিকত দেখলে তার বক্তব্য বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। এখন তারা বিশাল অর্থ বিত্তের অধিকারী। যখন মন চায় আজ লন্ডন তো কাল আমেরিকা পরশু কানাডা। শামীম ওসমান পুরো পরিবার নিয়ে আমেরিকায় মাস খানেক কাটিয়ে আসার পর এখন আবার লন্ডনে আছেন। অবশ্য নিজ এলাকায় খুনখারাবি হওয়ার পর তিনি নিয়ম মোতাবেক দেশের বাইরে কিছু দিন কাটিয়ে আসেন।

চ্যানেল ২৪ গত ১৫ আগষ্টের রিপোর্ট মোতাবেক জানা যায় এক কর্মী সমাবেশে তিনি বলেন, খেলবেন খেলতে চান, আমারা খেলবো এবং জিতবও। হজ্জ করে এসেছি আল্লাহর ঘরকে সাক্ষী রেখে বলছি ঘটনা অনেক ঘটবে, হয়তো শামীম ওসমান থাকবে না। আমার বয়স এখন ৬১ নয় ১৬ হয়ে গিয়েছে, যারা খেলতে চাচ্ছেন তাদের বলতে চাই এমন যায়গায় যাবেন না যেখানে গেলে কেউ নিষেধ করলেও আমরা শুনবো না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কি আঙুল চুষবো?

যুগান্তর গত ১৬ আগস্ট রিপোর্ট করেছে, এক কর্মী সমাবেশে তিনি বলেন— এবার যদি আমাদের নেত্রী বলেন শান্ত হও তাও হবো না। মেয়র আইভিকে ইঙ্গিত করে বলেন নেতা হন মন্ত্রী হন মেয়র হন আপত্তি নাই। ইমামের পেছনে থাইকেন।আবার হঠাৎ করে বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য আমার বড় মায়া হয়।

নিউজ নারায়ণগঞ্জ গত ১৭ আগস্টের রিপোর্ট মোতাবেক তিনি এক কর্মী সমাবেশে বলেন, জাতির পিতা হত্যার প্রতিবাদ কেন হয় নাই? আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের জবাব কি? যদি শুনি আরো হত্যা হয়েছে আমাদের প্রিপারেশন কি? বড়ো বড়ো লোকসভা বড়ো বড়ো বক্তব্য এগুলো থাকবে তো?

বিডিনিউজ গত ১৮ রিপোর্টে এসেছে–এক বক্তব্যে শামীম ওসমান বলেন, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার পর নেত্রী আমেরিকা গেলেন। সেখানে তিনি কানের চিকিৎসা করাবেন। আমি তখন কানাডায়। নেত্রী ফোন করলেন আমি ফোন ধরছিলাম না। নেত্রীর লোকজন অনুরোধ করলো ফোন রিসিভ করেন আমি ফোন ধরছিলাম না। একটা অপরাধ বোধ কাজ করছিলো।

নিউজ নারায়ণগঞ্জ গত ১৭ তারিখের রিপোর্ট মোতাবেক—এক কর্মী সমাবেশে শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে অপরাজনীতি ও কোন্দল বেশি। পদ পাওয়ার জন্য বেশি বেশি কাজ দেখাচ্ছি, পদ পেয়ে গেলে আর খবর থাকে না। সব নেতার উদ্দেশ্য বলতে চাই, সামনে সময় খুব ভালো নয়। আমার কারণে যদি দল ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে আমাকে দল থেকে বের দেওয়া হোক।

নিউজ নারায়ণগঞ্জ গত ১৯ আগস্টের রিপোর্টে এসেছে –বিএনপিকে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে তিনি বলেন, বাড়াবাড়ি কইরেন না, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ‘মা’ কইতে পারবেন ‘গো’ কইতে পারবেন না। নারায়ণগঞ্জের অনেকে বলছে , শামীম ওসমানের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে। তারা নাকি হুমকি দিচ্ছে রাস্তা তাদের দখলে থাকবে, রাস্তা থাকবে শামীম ওসমানের কর্মীদের দখলে। আমাদের রক্ত খাঁটি রক্ত, টগবগ করে। আবার বলেন, ম্যাডাম জিয়ার জন্য মায়া লাগে।

নিউজ নারায়ণগঞ্জ ২০ আগস্ট রিপোর্ট করেছে — শামীম ওসমান বলেন বিএনপি জামাত আমার অনেক উপকার করেছে। শরীরে চর্বি জমে গিয়েছিল। এখন আমার বয়স ৬১ নয় ১৬। আমরা খেলবো সমস্ত অপশক্তির সাথে খেলবো। আপনাদের শনি আছে। কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন আপনাদের উপর যদি আঘাত আসে নারায়ণগঞ্জের লাখো জনতা মাঠে নেমে আসবে। বন্দরের জনগনকে বলতে চাই, ২০২৪ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় আসবেন।

NAN TV’র ২১ আগস্টের রিপোর্ট মোতাবেক— এক কর্মী সমাবেশে শামীম ওসমান বলেন, ২১ বছর আগে ১৬ জুন ২০০১ একটি ঘটনা ঘটলো। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়। অপরাধ করেছিলাম মুক্তিযোদ্ধার ঘরে জন্ম নিয়েছিলাম বলে। সেদিন আমার উপর হামলা হলো কারণ বলেছিলাম নারায়ণগঞ্জের মাটিতে ‘৭১ এর পরাজিত শক্তিদের থাকতে দেওয়া হবে না।

The Daulatpur News এক রিপোর্টে এসেছে –এক সমাবেশে তিনি বলেন, চারিদিকে আওয়ামী লীগ। গাছের পাতায় পাতায় আওয়ামী লীগ। মাঝে মধ্যে মনে হয় আমি হালায় বিএনপি জামাতের লোক।

NewsLives24.com’র ২৩ আগস্টে রিপোর্টে এসেছে –নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের এক কর্মী সমাবেশে তিনি শামীম ওসমান বলেন, বাংলাদেশে সবচাইতে বড় ধাক্কা আসতেছে, সবচাইতে বড় ষড়যন্ত্র আসতেছে। আমার কথা হালকা ভাবে নিয়েন না। দেশটাকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

নিউজ নারায়ণগঞ্জ গত ২৫ আগস্ট রিপোর্ট করেছে –তরিকুল সুজন নামক জৈনিক নেতা শামীম ওসমানের সমালোচনা করে বলেছেন রাজনীতিটা খেলার মাঠ নয়। রাজনীতি এখন জনগণের কাছে নেই। গনতন্ত্র চর্চার কি ঠেকা পড়েছে — তার এই বক্তব্য ফ্যাসিজমের ইঙ্গিত দেয়।

নিউজ নারায়ণগঞ্জের এক রিপোর্ট মোতাবেক — শামীম ওসমান বলছেন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পর আরো ৪ রাকাত নামাজ পড়ি। ২ রাকাত শোকরানা নামাজ পড়ি বেঁচে আছি বলো আর ২ রাকাত নামাজ পড়ি সারাদিন যে ভুল ভ্রান্তি করেছি তার তওবা স্বরূপ।

দৈনিক ইত্তেফাক গত ২৭ আগস্ট এক রিপোর্ট মোতাবেক– বাবু চন্দন শীলের সভাপতিত্বে আয়োজিত এক সমাবেশে শামীম ওসমান বলেন, কয়েকদিন আগে ঢাকার কস্তুরি হোটেলের সামনে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সেক্রেটারি মামুন মাহমুদকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। একজন পেইড কিলার ধরা পড়েছে। সে ধরা না পড়লে আবারো তক্বী হত্যার মতো মামলা সাজাতো। কিন্তু গত ২১ মে শনিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দুল বারী ভূইয়া বলেন, আমরা সন্দেহ করছি ওনার ইন্ধনে এ ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপির একটি পক্ষের সাথে উনার যোগাযোগ আছে।
২৭ আগস্টের সমাবেশে শামীম ওসমান আরো বলেন, ১৬ আগস্ট জাতীর জনকের কন্যা বলেছেন চারিদিকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ সময় অন্য প্রসঙ্গ টেনে বলেন, খোকন সাহাকে নাকি ন্যাংটা করে ঘুরাবেন। এটা রাজনীতির ভাষা হতে পারে না।

দৈনিক যুগান্তর ২৭ আগস্টের রিপোর্ট মোতাবেক — কর্মী সমাবেশে শামীম ওসমান বলেন, সরকার না ওদের টার্গেট শেখ হাসিনা। নো প্রধানমন্ত্রী নো, চা খাইয়ে ওদের সঙ্গে আপনি গনতন্ত্র চর্চা করেন এটা বাংলার মানুষ চায় না। ফখরুল সাহেবরা মরণ খেলায় নেমেছেন। পরে হঠাৎ করে তিনি প্রতিপক্ষের কাছে খেলার তারিখ চেয়ে বসেন।

চ্যানেল ২৪ এর রিপোর্ট মোতাবেক –নারায়নগঞ্জের বাইরে এক সমাবেশে শামীম ওসমান বলেন, দিনের বেলায় উনারা গরম গরম বক্তৃতা দেন আর রাতে ফোন করে বলেন একটু দেইখেন কিন্তু। কোন লাভ হবে না আমরা খেলবো অবশ্যই খেলবো।

এই প্রতিবেদক নারায়ণগঞ্জ ঘুরে ঘুরে জানতে পেরেছেন শামীম ওসমান আগস্ট মাসের বলতে গেলে পুরাটাই বিভিন্ন জায়গায় কর্মী সমাবেশের আয়োজন করে গরম গরম বক্তৃতা দিয়ে কাটিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক হজ্জ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য একজন আলেমে দ্বীন বলেন, হজ্জ হলো এমন একটি এবাদত যদি কোন মুসলমান খালেছ নিয়তে তওবা করে ভালো হয়ে যাওয়ার নিয়তে হজ্জব্রত পালন করে তাহলে তিনি বাস্তব বিবেচনায় ভালো মানুষে রুপান্তরিত হয়ে যান। আর যদি নিয়তের মধ্যে ভেজাল থাকে উদ্দেশ্য যদি লোক দেখানো হয় তাহলে মানুষটি পূর্বের চাইতেও নিকৃষ্ট চরিত্রের হয়ে যান। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন, আমিন।

এই প্রতিবেদককে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতার সাথে ৩১ আগস্ট রাতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত কয়েকজনের দীর্ঘ মিটিং হয়েছে।

এই প্রতিবেদক নারায়ণগঞ্জ শামীম ওসমানের একজন অন্ধ ভক্তের সন্ধান পেয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড নাম্বার ৮ এর ১ নাম্বার সড়কে বসবাস করেন। তার বাড়ির সদর দরজা হতে শুরু করে ঘরের ড্রইং রুম বেড রুম প্রায় সব জায়গায় শামীম ওসমানের কমপক্ষে ৫০ টি ছবি বাধাঁই করে ঝুলিয়ে রেখেছেন। প্রতিদিন তিনি নিজ হাতে ছবিগুলো অতিব ইজ্জতের সাথে মুছে থাকেন। তার এক প্রতিবেশী জানালো তিনি অচিরেই তার বাড়ির সদর দরজায় নেতার এক আবক্ষ স্ট্যাচু স্থাপন করতে যাচ্ছেন। বাজেট রেখেছেন ৫ লক্ষ টাকা। সম্প্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জের জেলা পরিষদ নির্বাচনে তার আরেক প্রিয় নেতা নমিনেশন পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে নিজ ফেসবুক একাউন্টে শতাধিক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেটা এলাকায় বেশ হাস্যরসের খোরাক জুগিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ভক্তের বাসায় গিয়ে ছবিগুলোর জন্য মুসলমানদের নামাজ পড়তে কিংবা দোয়া কালাম করতে অসুবিধায় পড়তে হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com