বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের এবারের মৌসুমের শুরুতেই ব্যাট হাতে ছন্দে থাকার বার্তা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচে ফিফটি করেও দলকে বাঁচাতে পারেননি তামিম। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে হারে তার দল মিনিস্টার ঢাকা। আজ (শনিবার) দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেও অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন এই ড্যাশিং ওপেনার। লাভ হয়নি তাতেও। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে কাছে ৩০ রানে হার ঢাকার।
এদিন আগে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ১৬১ রানের পুঁজি পায় চট্টগ্রাম। চ্যালেঞ্জিং এই স্কোর টপকাতে নেমে তামিম ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই সুবিধা করতে পারেননি। ফলে ঢাকার ইনিংস থামে মাত্র ১৩১ রানে। ৩০ রানে জয় পায় চট্টগ্রাম। এবারের বিপিএলে এটি তাদের প্রথম জয়। ম্যাচে আলোচনায় নাসুম আহমেদ। তাকে কেন ‘আইকন’ হিসেবে দলে নিয়েছে চট্টগ্রাম, তারই যেন মূল্য বোঝালেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ৪ ওভার বল করে মাত্র ৯ রান দিয়ে একাই নেন ৩ উইকেট।
গত বছরের জুলাইয়ের জিম্বাবুয়ে সফর থেকে চোট নিয়ে ফেরেন তামিম। এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সিরিজের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলেলনি তিনি। ছিলেন না পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের লিগের লঙ্গার ভার্শনেও মাঠে নামতে পারেননি চোটের কারণে। চলতি বিপিএলের আগে বিসিএলের ওয়ানডে সংস্করণে তামিম খেলেন মাত্র ২ ম্যাচ।
এরপর বিপিএলে মাঠে নেমে নিজের প্রথম ম্যাচেই খেলেছেন ৫০ রানের ইনিংস। আজ তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান। এই রান করার পথে মুশফিকুর রহিমকে (২২৮০) ছাড়িয়ে এখন বিপিএলের সর্বোচ্চ রানের মালিক তামিম। ২৩২৩ রান নিয়ে রাজার মুকুট তার মাথায়। তবে দিন শেষে মলিনই থাকল তামিমের মুখ। আগের ম্যাচটির মতো এ ম্যাচেও পরাজিত দলের সদস্য হয়ে থাকলেন।
ম্যাচে ১৬২ রান টপকাতে নেমে ভালো শুরু পায় ঢাকা। মোহাম্মদ শাহজাদ আর তামিমের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৪২ রান। যদিও সেখানে তামিমের অবদানই ঢের। সপ্তম ওভারে মুগ্ধর বলে আউট হওয়া শেহজাদের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৯ রান। দ্বিতীয় উইকেটে জহুরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে দলের রান বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যান তামিম। এরই মাঝে তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজের ৪২তম ফিফটি।
ওই ইনিংসটি অবশ্য বড় করতে পারেননি তামিম। শরিফুলের স্লোয়ার সামলাতে গিয়ে বোল্ড হন ৫২ রান করে। ৪৫ বলের ইনিংসটি সাজান ৬টি চার ও ২টি ছয়ের মারে। তামিমের আউটের পর ধ্বস নামে ঢাকা শিবিরে। জহুরুল ১০, নাঈম শেখ ৪, মাহমুদউল্লাহ ৫ এবং আন্দ্রে রাসেল ১২ রান করে আউট হলে জয়ের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় ঢাকার।
শেষদিকে উসুরু উদানার ১৬, শুভাগত হোমের ১৩ রান ঢাকার হারের ব্যবধানই কমিয়েছে শুধু। ১৩১ রানে অলআউট হয় ঢাকা। এতে ৩০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম। এবারের বিপিএলে চতুর্থ ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেল আগে ব্যাট করা কোন দল। এদিন চট্টগ্রামের পক্ষে শরিফুল ইসলাম ৪ এবং নাসুম আহমেদ নেন ৩ উইকেট।
এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভালো হয়নি চট্টগ্রামের ইনিংসের শুরুটা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে সাজঘরে ফেরেন কেনার লুইস। পেসার রুবেল হোসেনের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ২ রানে আউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
দুবার জীবন পেয়েও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি আফিফ হোসেন। ব্যক্তিগত ১ এবং ২ রানে আফিফের ক্যাচ হাত ফসকান আন্দ্রে রাসেল আর তামিম ইকবাল। পরে উইল জ্যাকসের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে শুরুর বিপর্যয় থেকে সামাল দেন আফিফ। আরাফাত সানির বলে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ১২ বলে সমান ১২ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
আফিফের পর সাজঘরে ফিরেছেন ইংলিশ ব্যাটার জ্যাকস। শুভাগত হোমের বলে বোল্ড হয়ে হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পোড়েন তিনি। ৬টি চার এবং ২টি ছক্কায় ২৪ বলে ৪১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন জ্যাকস। এরপর অবশ্য দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন মেহেদী হাসান মিরাজ এবং সাব্বির। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৪ রান।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন মিরাজ। ফেরেন ২৫ বলে ২৫ রান করে। অবশ্য সাব্বিরও বেশি সময় টিকতে পারেননি। সমান ২টি করে ছক্কা ও চারে ১৭ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে রুবেলের বলে বোল্ড হয়েছেন সাব্বির। শেষ দিকে চট্টগ্রামের রান বাড়িয়েছেন বেনি হাওয়েল। ৩টি ছক্কা ও ১ চারে ১৯ বলে ৩৭ রান করেন এই ডানহাতি। এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৬১ রানের সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম।