বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নৌকার লজ্জাজনক ভরাডুবি হয়েছে। গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয় পেছেন মাত্র একজন আওয়ামী লীগ প্রার্থী।
কালিয়াকৈর পৌরসভায় বিএনপির স্বতন্ত্র এবং ৬ ইউনিয়নে জিতেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা প্রার্থী। পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন তৃতীয় হয়েছেন।
জাতীয় নির্বাচনে পর পর তিনবার কালিয়াকৈর থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিজীয় হয়ে তিনি সরকারের মুক্যিুদ্ধ বিষয়ক পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের এ ভরাডুবি হলো।
এদিকে নৌকার ভরাডুবিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়। ‘কেন পরাজয় ঘটলো আওয়ামী লীগের’ সেই জল্পনা চলছে জেলা জুড়ে। রবিবার রাত ৮টার দিকে রাতুন মন্ডল নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন রাখেন, ‘গাজীপুর নৌকার ঘাঁটি কিন্তু নৌকার ভরাডুব কেন? রাজনৈতিক কোন্দল? নাকি অন্য কিছু? স্থানীয়দের মতে ‘দুর্বল প্রার্থীদের মনোনয়ন এবং দলীয় প্রঅর্থীদের পক্ষে না থেকে আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ নিরব থাকা, এই দুই কারণেই শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে নৌকার প্রার্থীদের।
জানা গেছে, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. রেজাউল করিম রাসেল। আনরাস প্রতীক নিয়ে ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কামাল শিকদার। স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে কামাল শিকদারের পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনে হেরে যান নৌকা প্রতীকের রাসেল।
এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা হলে যেসব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা করেছিলেন এবার তারাও প্রার্থী হন। আওয়ামী লীগের একটি অংশ যেসব প্রার্থী উপজেলায় আনারস নির্বাচন করেছিলেন সেসব চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নৌকার বিরোধীতার তথ্য প্রামান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে পাঠায়। এতে আটকে যায় তাদের মনোনয়ন। পরে তড়িঘড়ি প্রার্থী করে যাদের নাম পাঠানো হয় তারা এলাকায় ছিল অজনপ্রিয়। কেউ কেউ ছিল আর্থিক অস্বচ্ছল। ফলে দলীয় কোন্দল আর দুর্বল প্রার্থীর কারণে রবিবারের নির্বাচনে নৌকার চরম ভরাডুবি ঘটে।
একমাত্র ফুলবাড়িয়াতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের এডভোকেট শাহ আলম সরকার। এখানে দ্বিতীয় হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র এডভোকেট জাকিরুল ইসলাম।
দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মুরাদ কবীর বলেন, ‘পরাজয়ের মূল কারণ দলীয় বিদ্রোহীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এবং দলীয় বিভক্তি। অনেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করছেন। তাছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে ৬-৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। এক জন পেয়েছেন। বাকীরা নৌকার বিরোধিতা করছেন।