বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: পঞ্চগড়ের বেশিরভাগ শ্রমজীবী মানুষের প্রধান জীবিকা নদী থেকে পাথর তোলা। কখনো কড়া রোদে পুড়ে, কখনো বৃষ্টিতে ভিজে আবার কখনো হীমশীতল পানিতে নেমে নদীর তলদেশ থেকে নুড়ি পাথর তুলে আনে তারা। যুগ যুগ ধরে এই কষ্টসাধ্য কাজটি করে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের হাজারো মানুষ।
নদী থেকে নুড়ি পাথর সংগ্রহ করে সেই পাথর বিক্রি করে চলে এই শ্রেণির মানুষের সংসারের চাকা। তাদের সংগ্রহ করা পাথর যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এই পাথর শ্রমিকদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা জানাতে ব্যতীক্রমী এক আয়োজন করে পঞ্চগড় শুভসংঘ।
পঞ্চগড় শুভসংঘের আয়োজনে করতোয়া নদীর তুলারডাঙ্গা এলাকায় সম্প্রতি পাথর শ্রমিকদের একবেলা খাবারের আয়োজন করে সংগঠনটি। দুপুরের কাঠফাঁটা রোদে শুভসংঘের বন্ধুরা নিজেরাই খিচুরি মাংস রান্না করে তা নিয়ে হাজির হয় নদীর পাড়ে। সেখানে কাজ করতে থাকা ৫০ জন পাথর শ্রমিককে সাথে নিয়ে দুপুরের খাবার খায় শুভসংঘের সদস্যরা।
ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে বিস্মিত হন পাথর শ্রমিকরা। নানা গল্প গুজব আর হাসি ঠাট্টার মধ্য দিয়ে দুপুরের খাবার পর্ব শেষ করেন তারা। সাইফুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক বলেন, এমনভাবে আমাদের জন্য কেউ কখনো ভালোবাসা প্রকাশ করেনি। শুভসংঘের এই ভালোবাসা আমাদের মতো শ্রমজীবী মানুষকে আরো উৎসাহ জোগাবে। আমরা আশা করি শুভসংঘের সদস্যদের মতো তরুণদের হাত ধরেই সমাজে শুভ কাজ আরো তরান্বিত হবে।
পঞ্চগড় শুভসংঘের সভাপতি ফিরোজ আলম রাজিব বলেন, কিছু কাজের কোনো প্রাপ্তি থাকে না, থাকে আত্মতৃপ্তি ও মনের আনন্দ। আমরা সেই কাজটিই করেছি। আমরা সবাই শ্রমজীবী মানুষদের সাথে নিয়ে একবেলা খাবার খেয়েছি। তারা যে কতটা খুশি হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা তাদের মুখে এই হাসিটুকুই দেখতে চেয়েছিলাম এবং আমরা সফল হয়েছি। আমরা লক্ষ্য করেছি এই শ্রেণির মানুষেরা দিন এনে দিন খায়। তাদের মধ্যে কোন লোভ নেই। খুব সাধারণ জীবন যাপন করে তারা। কিন্তু কেউ কেউ তাদের ছোট করে দেখে এবং তাদের তেমন মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা চাই শ্রমজীবী মানুষের পাশে থাকতে এবং শুভ কাজে সবার পাশে থাকতে।
শ্রমিকদের প্রতি এক মুঠো ভালোবাসা বিলিয়ে দেওয়ার এই কাজে অংশ নেয় শুভসংঘ পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি ফিরোজ আলম রাজিব, সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম আলিফ, সহসভাপতি হৃদয় চন্দ্র সিংহ, সহসভাপতি ইমরান নাজির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান বাপ্পী, ইয়ানুর আক্তার, নওমীন জাহান ঝুমুর, আকাশ, জান্নাতুন মিরানা, হ্যাপি, সাথী, মুন, সুব্রত।