1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
দলিপাড়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কমিটি গঠন সভাপতি আবু জাফর সম্পাদক জালাল খান ইসলামী ব্যাংকের সিলেট জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং সম্মেলন অনুষ্ঠিত জয়পুরহাটে ঘন কুয়াশায় দুই ট্রাকের মুখমুখি সংঘর্ষ নিহত – এক দাগনভূঞা তারুণ্যের মেলা শুভ উদ্ভোধন শিক্ষা ব্যবস্হার আমূল পরিবর্তন চায় বিএনপি : আমিনুল হক গনমাধ্যম ইনস্টিটিউট এর সেমিনার হল এ পরিবেশিত হয় বন্ধন কালচারাল ফোরাম এর ৩৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী BANGLADESHI AND SWEDISH BABA Photo Exhibition Celebrating Modern Fatherhood and Gender Equality জিপিএইচ ইস্পাতের আয়োজনে গ্র্যান্ড ইভেন্ট ‘জিপিএইচ মহারাজ দরবার’ অনুষ্ঠিত বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গাঁজা জব্দ করেছে ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) সমাধীনগর আর্য সংর্ঘ বিদ্যা মন্দির স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

পদ্মা সেতু দেখতে এসে ইলিশে-মজা পেয়ে যা লিখলেন ভারতীয় সাংবাদিক

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২
  • ১৪১ বার দেখা হয়েছে

বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : পদ্মা সেতু দেখতে এসেছিলেন ভারতের হিন্দুস্থান টাইমস পত্রিকার সাংবাদিক প্রসাদ সান্যাল। পদ্মা সেতু দর্শনের পাশাপাশি তিনি ঐতিহ্যবাহী মাওয়া ঘাটে টাটকা ইলিশ ভাজা খেয়েছেন। এতেই তিনি মজেছেন বাংলাদেশের জাতীয় মাছে। এ বিষয়ে তার একটি লেখা মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে তার পত্রিকার বাংলা অনলাইন ভার্সনে। নিচে তার লেখাটি তুলে ধরা হলো :

ভরা জুনের এক ঝলমলে দুপুর। গোটা গাঙ্গেয় বঙ্গে তখন বর্ষা আসব আসব করে প্রায় এসেই গিয়েছে। এমন এক দিনে আমি গিয়েছিলাম মাওয়ায়। ঢাকা থেকে গাড়িতে দু’ঘণ্টার পথ। এই যাত্রার উদ্দেশ্য ছিল পদ্মা সেতু দর্শন। ২৫ জুন যে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়ে গেল।

পদ্মা সেতু। ৬.২ কিলোমিটার লম্বা এই সেতু নিয়ে বাংলাদেশের আবেগের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। দেশের উত্তর-পূর্ব ভাগের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিম ভাগের সংযোগের জন্য এই সেতু বিরাট ভূমিকা নিতে চলেছে। এই সেতু বদলে দিতে চলেছে দেশের অর্থনীতিরও। শাখানদী-উপনদী মিলিয়ে গোটা গঙ্গার উপর এত বড় সেতু আর কোথাও নেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই, অর্থাৎ ১৯৭১ সাল থেকেই বাংলাদেশ এই সেতুর স্বপ্ন দেখছে, যা অবশেষে পূরণ হলো।

কিন্তু এ লেখা পদ্মা সেতু নিয়ে নয়। পদ্মা সেতু ছাড়া বাঙালির জীবনে পদ্মার অন্য এক অবদান নিয়ে। যার নাম ইলিশ। জনপ্রিয়তার নিরিখে পদ্মা সেতুর চেয়ে কোনো অংশে পিছিয়ে থাকবে না এই মৎস্যটি। সেতুদর্শনের পাশাপাশি জুনের দুপুরে পদ্মার এই আকর্ষণের হাতছানি আমিও এড়াতে পারিনি। ফলে যাওয়া যাক, সেই প্রসঙ্গে।

ইলিশ। বিজ্ঞানসম্মত নাম টেনুয়ালোসা ইলিশা। বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় মাছ। এ এমন এক মাছ, যার কথা ভাবলেই জিভ সরস হয়ে ওঠে। গাঙ্গেয় বঙ্গে এ মাছের উপস্থিতি যেন বাঙালিকে দেয়া প্রকৃতির উপহার। ও হ্যাঁ, বলে রাখা দরকার, ইরাকের টাইগ্রিস-ইউফ্রেটিস নদীতেও এ মাছ পাওয়া যায়। সেখানে এ মাছের কদর কে করে, তা জানা নেই। কিন্তু বঙ্গে যে এ শুধু মাছ নয়, তা প্রমাণ করে দেয় পরিসংখ্যানও। গোটা বাংলাদেশের জিডিপি’র ২ শতাংশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আসে এই মাছ থেকে।

কেন একটি দেশের আয়ের এত বড় জায়গা জুড়ে আছে এই মাছ? তা বোঝার জন্য অর্থনীতির মোটা বইয়ের পাতা উল্টানোর দরকার নেই। বরং গরম সরষের তেলে এই মাছের টুকরো পড়ার পরে যখন ছ্যাঁক করে আওয়াজ হয়, তখন বাতাসে যে গন্ধ ভেসে ওঠে, তা প্রাণভোরে নেয়াটাই যথেষ্ট। তাহলেই মাথার মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে সব সমীকরণ। অর্থনীতির জটিল সব অঙ্ক সুর করে কানের কাছে গেয়ে উঠবেন অখিলবন্ধু ঘোষ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের হাজার তত্ত্ব যেন তখন চৌরাসিয়ার বাঁশি।

ফিরে আসা যাক যাত্রাপথে। জুনের সেই দুপুরে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে নদীপথ যাত্রা। ইঞ্জিন লাগানো ছোট ডিঙি নৌকায় আমরা চলেছি তো চলেছি! অবশেষে পৌঁছোলাম মাওয়ার উত্তর পারের নদীকূলে। ছোট ছোট হোটেল, খাবারের দোকান। সবই বছরের পর বছর ধরে গজিয়ে উঠেছে এখানকার ফেরিঘাটের কল্যাণে।

২৫ জুনের পরে এই সব দোকানের ভবিষ্যৎ কী হবে? মানুষ যদি ফেরিঘাট আর ব্যবহার না করেন? পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে সত্যিই কি এই সব ডিঙি নৌকার আর প্রয়োজন থাকবে? স্থানীয়রা এসব প্রশ্ন ভেবে আশঙ্কায়। কিন্তু তাই বলে তাদের অতিথি আপ্যায়নে কোনো ত্রুটি নেই। আর সেই আপ্যায়ন-পূজার প্রধান উপাচারই হলো ইলিশ-রন্ধন।

কীভাবে রান্না হবে এই ইলিশ? নদীপথ পেরিয়ে বাংলাদেশের অন্ধিসন্ধি ঘুরে তার পাকস্থলীর মধ্যে ঢুকে যখন এত দূর পৌঁছেছি— নিজের পাকস্থলীর পরিতৃপ্তির জন্য— তখন শুধু খাদ্যসুখ নয়, রন্ধন-সুখ থেকেও আমায় বঞ্চিত রাখা যাবে না। বসে পড়লাম রান্নায় হাত লাগাতে।

দু’কুড়ি কাটিয়ে ফেলেছি এই গ্রহে। কিন্তু এত তাজা ইলিশ জীবনে কখনো দেখিনি! কেন দেখিনি? উত্তর বেশ সহজ। কারণ বরফ ছাড়া ইলিশ কখনো দেখিনি। তাজা ইলিশ সামান্য থেকে সামান্যতম সময়ের জন্যও বরফে রাখলে তার স্বাদ সম্পূর্ণ বদলে যায়। দিল্লিতে ইলিশ খেয়েছি। কলকাতায় তো খেয়েছিই। কিন্তু একেবারে তাজা ইলিশ এই দুই জায়গাতেই পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই জুনের এই দুপুরের অভিজ্ঞতা, আমার কাছে একেবারে নতুন।

দুপুরে ইলিশ মাছ খাওয়া হবে। সেই রান্নার প্রতিটি ধাপ খুব মনোযোগ দিয়ে দেখলাম। কীভাবে আঁশ ছাড়ানো হয়, কীভাবে কাটা হয়, পরিষ্কার করা হয়, কীভাবে রান্না হয়।

পৃথিবীর সেরা খাবারগুলোর ক্ষেত্রে রন্ধনশিল্পীরা যে তত্ত্বে বিশ্বাসী, এক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় নেই। একেবারে তাজা রান্না করুন, খুব বেশি ভজকট কিছু করবেন না, তা সে মশলাই হোক, কিংবা রন্ধন প্রক্রিয়াই হোক— সব থাকবে সহজ-সরল-একমাত্রিক।

ঠিক ১৫ মিনিটে তৈরি হলো এই মাছ। কীভাবে? সেটিও পাঠকবর্গের স্বার্থে ১০টি ধাপে দিয়ে রাখলাম।

১। প্রতিটি মাছ থেকে ডিমগুলো আলাদা করে নিন।

২। প্রতি ১ কিলোগ্রাম মাছ থেকে লেজ আর মুড়ো বাদ দিলে ১০-১২টি টুকরো পাওয়া যাবে। সেই টুকরোগুলো ১০০ গ্রাম হলুদ, ১০০ গ্রাম মরিচ গুঁড়া, আন্দাজমতো লবণ, প্রয়োজনমতো সরিষার তেল দিয়ে মাখিয়ে রাখুন।

৩। ডিম থেঁতো করে গুঁড়িয়ে নিন। মশলা আর লবণে মাখিয়ে দিন। তেল দেবেন না।

৪। মাছ ও ডিম মশলা মাখিয়ে রেখে দিয়ে, একটি পাত্রে সরিষার তেল গরম করুন। অল্প আঁচে ১ কিলোগ্রাম কাঁচা পেঁয়াজের টুকরো দিন।

৫। পেঁয়াজ ভেজে আলাদ করে রেখে দিন।

৬। ওই তেলে মাছের ডিমগুলো ভেজে নিন। সেটিও আলাদা করে রেখে দিন।

৭। গরম তেলে এবার মাছের টুরোগুলো দিন। গনগনে আঁচে ৪ থেকে ৬ মিনিট ভাজুন।

৮। ভাজা মাছ তুলে নিন। তার উপরে ডিম ভাজা আর পেঁয়াজ ভাজা ছড়িয়ে দিন।

৯। ইচ্ছা হলে এর উপরে ধনে পাতা আর কাঁচা মরিচও ছড়িয়ে দিতে পারেন।

১০। ভাজা তেলটি কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিয়ে মাছের উপর ছড়িয়েও দিতে পারেন।

এবার আসা যাক অন্তিম পর্বে। বাঙালি মাত্রই জানেন ইলিশ মাছ সাদা ভাতের সাথেই খেতে সবচেয়ে ভালো লাগে। আমিও স্থানীয় কালিজিরা চালের ভাত দিয়েই এই মাছ খাব বলে ভেবে নিলাম। পশ্চিমবঙ্গে যেমন বাসমতী, বাংলদেশে তেমনই এই কালিজিরা চাল।

আপনি কি ইলিশ খেতে পছন্দ করেন? তাহলে এর চেয়ে সুখকর খাদ্য আপনি জীবনে কখনো খেয়েছেন কি না, সন্দেহ আছে। বাড়িতেও যদি কখনো ইলিশ রান্না করতে চান, তাহলে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত ধাপগুলো পর পর করে দেখতে পারেন।

মাছের পদ বলতে সরষেবাটা, ঝোল বা কালিয়া খেয়েই যারা এতদিন রসনাতৃপ্তি করে এসেছেন, পদ্মাপারের ছোট হোটেল জীবনদর্শনের মতো করে তাদের একটিই শিক্ষা দেয়— যত কম হবে, তত ভালো হবে। কারণ এ ইলিশের গল্প ইলিশই নায়ক, তার ঝোল বা কাই নয়। তাই পার্শ্বচরিত্রকে সরিয়ে রেখে, হোক ইলিশচর্চা। জিভে লেগে থাকুক বাঙালিকে দেয়া প্রকৃতির উপহার।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com