ওই গৃহবধূর দুটি শিশুসন্তানও রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নে। একসঙ্গে দুই স্বামী থাকার ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানান, স্ত্রী ও তার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ সুখের কথা ভেবে কয়েক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসে চলে যান ওই গৃহবধূর স্বামী। এ সুযোগে একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম সাবু (৪০) নামে বহু বিয়ে পাগল এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। একপর্যায়ে ঘটনাটি সমাজে জানাজানি হলে মানুষ ওই প্রবাসীর বাড়ির দিকে নজরদারি বাড়িয়ে দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ওই পরকীয়া প্রেমিক শফিকুল ইসলাম সাবু ওই প্রবাসীর বাড়িতে প্রবেশ করে গোপন অভিসারে মিলিত হয়। এ সময় গ্রামবাসী ঘরে ঢুকে ওই প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন। এরপর তাদের মারধর করে পৌরশহরের ইসলামপুর মহল্লা মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ও কাজী মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল আলীমকে ডেকে তাদের বিয়ে দেয়া হয় কাবিন রেজিস্ট্রি করে।
তবে রাষ্ট্র ও ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী পূর্বের স্বামীকে তালাক প্রদান না করেই দ্বিতীয় বিয়ের এ কাবিন রেজিস্ট্রি ও বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপকহারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে পরকীয়া প্রেমিক শফিকুল ইসলাম ইসলাম সাবু পরকীয়া প্রেম ও দৈহিক মেলামেশার কথা স্বীকার করলেও বিয়ের বিষয়ে তার অসম্মতির কথা জানান। তিনি বলেন, আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসী। এ বিয়ে আমি মানি না। আমি গ্রামবাসীর বিচার চাই।
ওই গৃহবধূ জানান, আমার প্রথম স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই শফিকুল ইসলাম আমার সঙ্গে পরকীয়া করে আসছে। তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আমাকে বিয়ে না করে টালবাহানা করে শুধু সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। গ্রামবাসীর হাতে আটক না হলে সে আমাকে বিয়ে না করে শুধু আমার দেহই ভোগ করত। আল্লাহ যা করেন তা ভালোর জন্য করেন।
গ্রামবাসী জানান, স্বামী বিদেশে স্ত্রী-সন্তানের জন্য শরীরের ঘাম ঝরাচ্ছেন আর এদিকে স্ত্রী পরকীয়ায় মত্ত হয়ে আনন্দ ফুর্তিতে দিন কাটাচ্ছে। তাই আমরা বিষয়টি সহজভাবে মেনে নিতে পারিনি। হাতেনাতে আপত্তিকর অবস্থায় তাদের আটক করে গ্রামবাসী মিলে ওদের বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে কাজী মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমাকে পূর্বের স্বামী থাকার কথা গোপন রেখে কাবিন রেজিস্ট্রি ও বিয়ে সম্পন্ন করেছেন গ্রামবাসী। এ বিয়ে বৈধ নয়। পূর্বের স্বামীকে তালাকের দিন থেকে ৩ মাস ১৩ দিন ইদ্দত পালনের পর দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে একজন স্ত্রী। এছাড়া যদি সে আগেই বিয়ে করে অথবা প্রথম স্বামীকে তালাক না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে তাহলে তা রাষ্ট্র ও মুসলিম পারিবারিক আইনবিরোধী। এক্ষেত্রে ঠিক তাই ঘটেছে।