বঙ্গনিউজবিডি, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার পাইকগাছায় কড়া তৎপরতা থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাল্য বিয়ের অপতৎপরতা থামছেনা। ভ্রাম্যমাণ আদালত সহ বিভিন্ন প্রকার সাজা বা অর্থদন্ড দিলেও কমছে না এ বাল্য বিয়ে। গত এক সপ্তাহে ৪টি বাল্য বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি হয়েছে আইন বহির্ভূত নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এবং ১টি হয়েছে কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়ের বাবার বাড়িতে। এর বাহিরে গোপণে বাল্য বিবাহ হচ্ছে অহরহ। হিন্দু রীতিতে মন্দিরে বাল্য বিবাহ সংখ্যা কম নয়। বাল্য বিবাহ একবার হয়ে গেলে কিছু হয় না এমন ধারনা থেকে আইন বিরুধী কাজ সংগঠিত হচ্ছে। বাল্য বিবাহের সাথে জড়িত কাজি ও পুরোহি সহ অন্যান্যদের কেউ আইনের আওতায় আনলে এ অপরাধ তৎপরতা নিয়ন্ত্রন করা যাবে বলে এমনটি জানান পাইকগাছা নাগরিক বাস্তবায়ন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাড. প্রশান্ত মন্ডল।
গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রাড়–লী গ্রামের আবু সায়েদ মালী তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে পার্শ্ববর্তী কাটিপাড়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে মাসুম বিল্লাহর সাথে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে দেন। লক্ষীখোলার রুহুল আমিন গাজী তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে দেন পার্শ্ববর্তী রফিকুল সরদারের ছেলের সাথে। শুক্রবার হরিঢালীর আতিয়ার রহমানের ছেলে আনারুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী শ্যামনগরের আবুল হোসেনের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে। ৪দিন নিখোঁজ থাকার পর অভিযান চালিয়ে ছেলের মামার বাড়ি থেকে ছেলে ও মেয়েকে আটক করা হয়। একই রাতে হরিঢালীর গৌরাঙ্গ বিশ্বাস তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে ডুমুরিয়া থানার পঞ্চানন বিশ্বাসের ছেলে সমীর বিশ্বাসের সাথে কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার হকের নেতৃত্বে তাদের উদ্ধার করা হয়। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক মো. আলতাফ হোসেন, আনসার কমান্ডার আবু হানিফ, ইউনিয়ন লিডার মো. ফয়সাল হোসেন ও ভিডিপি সদস্য আব্দুস সামাদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন। ৪টি বাল্য বিয়েতে উপজেলাপ্র্রশাসন পৃথকভাবে ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করেন। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা বাল্যবিবাহ নিয়ে মহিলা সমিতির মাধ্যমে গ্রামে সভা সমাবেশ করে মানুষকে বুঝালেও আমাদের অগোচরে তারা নাবালিকা ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক মো. আলতাফ হোসেন বলেন, আনসার ও ভিডিপির খুলনা জেলা কমান্ড্যান্ট হাফিজ আল মোয়াম্মার গাদ্দাফী মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নির্দেশে আমরা তাৎক্ষণিক অভিযানে অংশ নিচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, কিছু অসাধু মানুষের কারনে এ অপতৎপরতার রশি টেনে ধরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা এ নিয়ে থানার ওসি এজাজ শফীকে নিয়ে আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় করেছি। কিন্তু ফল হচ্ছেনা। তবে আগামীতে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।