বঙ্গ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন বলেছেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়। ১৯২৮ সাল থেকে এ পদ্ধতি চলে আসছে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে দলীয় বা রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকবে, তবে সেখানে প্রার্থী বা তার আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না। আর এক্ষেত্রে এক নম্বর ডকুমেন্ট হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রকে বিবেচনায় নেয়া হবে।
চেয়ারম্যান আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) এর সচিবালয়স্থ অফিসক্ষে তাঁর সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
চেয়ারম্যান বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশন চলতি বছরের ৬ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করেছে এবং আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে কমিশনের রিপোর্ট দাখিল করার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যেসব সুপারিশ করছি এর মধ্যে কিছু স্বল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ সময় ও কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। আর কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব শুধু সুপারিশ করার এবং বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের।
সফর রাজ হোসেন বলেন, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশকে ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। তিনি বলেন, কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয় সেটির ক্ষেত্রেও হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তার পরিবারকে ফোনে জানাতে হবে।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি হচ্ছে আমাদের এক নম্বর শত্রু। তিনি বলেন, পুলিশসহ সরকারের সব বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা গত ১৫ বছরসহ নিকট অতীতে দেখেছি পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগগুলোতে কিভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় কাজ হয়েছে। অনেকে দুর্নীতি করেছে এবং পদোন্নতি নেওয়ার চেষ্টা করেছে৷ এসব বন্ধে সুপারিশের কাজ চলছে।
বৈঠকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মোঃ রফিকুল হাসান, পুলিশের ডিআইজি মোঃ গোলাম রসুল, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) টাঙ্গাইলের কমান্ডেন্ট (ডিআইজি) মোহাম্মদ আশফাকুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মোঃ জারিফ রহমান সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।