বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : করোনা সংক্রমণরোধে বিধিনিষেধ আরোপের প্রায় পাঁচ মাস পর শর্তসাপেক্ষে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কক্সবাজারে পর্যটকদের আগমন শুরু হয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষও আগত পর্যটকদের বরণ করে নিচ্ছেন।
শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিনের জন্য কক্সবাজারের বেশিরভাগ হোটেলের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
তবে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সৈকতে কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের দেখা মেলেনি। তবে সকালের তুলনায় বিকালের দিকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত যে পর্যটকরা এসেছেন তারা যে যার মতো আনন্দ হৈ-হুল্লোড়ে ব্যস্ত। সমুদ্র স্নান, বালিয়াড়িতে দৌড়ঝাঁপ, সূর্যাস্ত দেখাসহ আনন্দমুখর সময় পার করছেন তারা। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী ও কবিতা চত্বর পয়েন্টে ১০ থেকে ১২ হাজারের মতো পর্যটকদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা বলছেন, করোনা কখনো একেবারে আর শেষ হবে না, করোনার সঙ্গে লড়াই করে অভ্যস্ত হতে হবে সবাইকে। মন ভালো রাখতে গেলে বিনোদন প্রয়োজন। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে তারা কক্সবাজার ভ্রমণ এসেছেন।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষে পর্যটন স্পট খুলে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট হলেও রয়েছে সংশয়। তাদের মাঝে পরবর্তী লকডাউনের আশঙ্কা বিরাজ করছে। ভয় পাচ্ছেন তারা, যদি আবারো লোকসান গুনতে হয়।
হোটেল সী-উত্তরার জেনারেল ম্যানেজার ওসমান রশিদ বলেন, ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ আসনের ৩০ শতাংশ কক্ষ তিন দিনের জন্য বুকিং হয়েছে। হোটেলের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি পালন করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরও ভয় একটাই- আবার যদি লকডাউনের ঘোষণা আসে।
হোটেলের বীচ হলিডের পরিচালক হাফিজুর রহমান লাভলু বলেন, আগামী তিন দিন হোটেলের কক্ষ আর ভাড়া দেওয়া যাবে না। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ হোটেলের কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে থেকে কিছুসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার এসে পৌঁছেছে। বাকিরা যথাক্রমে বৃহস্পতিবার ভোরে বা রাতে এসে পৌঁছবে।
হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজ, রেস্তোরাঁ মালিকদের সাতটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, এর মধ্যে প্রায় প্রতিটি হোটেলের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কক্ষ টানা তিন দিন আগামী শনিবার পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কক্সবাজারে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। দীর্ঘদিন পর হোটেল খোলায় হোটেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পর্যটকদের বরণ করে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসন ও জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা পর্যটন এলাকার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক সজাগ রয়েছে। মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বলা হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পর্যটন স্পট ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ অমান্য করলে শাস্তি পেতে হবে। যদি দেখা যায় যে করোনার সংক্রমণটা আমাদের জন্য আশঙ্কাজনক বা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না; তাহলে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি কিংবা সরকারের নির্দেশনার আলোকে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।