বঙ্গনিউজবিডি, মিজানুর রহমান: একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের অবনমন অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অপমানজনক। এই ক্লাবের সাথে প্রথম হতে বিভিন্ন পর্যায়ে যাঁরা জড়িত ছিলেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন জনাব সাইফুদ্দীন মানিক, জনাব এ. বি.এম মুসা, জনাব কর্ণেল মালেক, জনাব সাদেক হোসেন খোকা, স্থপতি জনাব মোবাশ্বের হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আমানউল্ল্যাহ,জনাব কিউ এ মালেক সহ আরো অনেকে।
এই ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ অর্জনঃ- ১৯৭৪ সালে প্রতিটি খেলায় অনেক গোলের ব্যবধানে জিতে দ্বিতীয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন। ১৯৭৫ সনে প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে প্রথম খেলায় লীগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী ক্রীড়া চক্রকে ১-০ গোলে পরাজিত করে এবং এর মাধ্যমেই এই দলটির ঢাকার মাঠে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভাব ঘটে।
২০০৩-০৪ ও ২০০৫ মৌসুমে জিতে নেয় ঢাকা লীগ, ২০০৪ সালে ঘরে তোলে জাতীয় লীগের শিরোপা। ১৯৮০ সালে প্রথম বছরে জিতে নেয় ফেডারেশন কাপ। এরপর আরো দুইবার চ্যাম্পিয়ন যথাক্রমে ১৯৯১ এবং ২০০৫ সালে। ১৯৮১ সালে আগাখান গোল্ড কাপে ব্যাংকক ব্যাংক ক্লাবের সংগে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন এই ক্লাবের উল্লেখযোগ্য অর্জন। এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে খেলেছেন দেশের বহু নামী এবং দামী খেলোয়াড়। তাঁদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত খেলোয়াড় জনাব হাসানুজ্জমান খান বাবলু,জনাব মহসীন,জনাব সেলিম,জনাব ওয়াসীম,জনাব লাবলু,জনাব নান্নু,জনাব মান্নান,জনাব খসরু, জনাব মানিক, জনাব আরমান, জনাব আলফাজ,জনাব সুজন,জনাব টিটো,জনাব বিপ্লব,জনাব রজনী,জনাব মনি,জনাব জুবু, জনাব লিটন ও জনাব আতাসহ আরো অনেকে।এই ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন শ্রেষ্ঠ ও নামকরা দুজন স্ট্রাইকার জনাব কাজী সালাউদ্দীন ও জনাব এনায়েত। জনাব কাজী সালাউদ্দীন বর্তমানে বাফুফের সভাপতি। দীর্ঘসময় এই ক্লাবের কোচের দায়িত্বে ছিলেন একসময়ের পাকিস্তান জাতীয় দলের খেলোয়াড় জনাব গফুর বালুচ।স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশে থেকে যান এবং এই ব্রাদার্স ইউনিয়ন টিমের কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করে খেলোয়াড় তৈরির একজন কারিগর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। একজন সেরা কোচ হিসেবেও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।এই ক্লাবের অনেক বিশাল অর্জন অল্প পরিসরে লেখে শেষ করা যাবে না।দীর্ঘ ৪৬ বছর পর একটানা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগসহ শীর্ষ পেশাদার লীগে অংশ গ্রহণকারী এই দলটি পেশাদারী লীগের দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাওয়ায় এই দলের প্রাক্তন অনেক খেলোয়াড়ের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।বিশেষ করে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত খেলোয়াড় জনাব হাসানুজ্জজ্জমান খান বাবলু এবং মহসীন।এই দুজন খেলোয়াড় ক্লাবের এই অবনমন সহ্য করতে পারছেন না।জনাব বাবলু বলেন, “আমাকে মানুষ এখনো ব্রাদার্স এর বাবলু নামেই চিনে। ব্রাদার্সের এই অগ্রযাত্রার বিশেষ ভূমিকায় ছিলাম আমি,সেলিম ও মহসীন। আমাদের তৎকালীন সময়ে ত্রিরত্ন বলে দর্শকেরা আক্ষা দিয়েছিলো”।জনাব বাবলু বলেন, “এই ক্লাবের জন্য আমি জেলও খেটেছিলাম। এই ক্লাবের সাথে আমার অনেক ইতিহাস জড়িত”। আজ তাঁকে তাঁর এই প্রিয় দলের অবনমন দেখে যেতে হচ্ছে যা অত্যন্ত হৃদয় বিদারক।এই দল গড়ার পেছনে তাঁর,সেলিম এবং মহসীনের অনেক হৃদয়গাঁথা শ্রম জড়িত বলে জানান।