বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কাশতলায় একটি বাড়ি থেকে দুই নারীসহ তিনজনের লাশ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, শাহজালাল প্রথমে সুমি বেগম ও জমেলা বেগমকে ছুরি দিয়ে হত্যা করে। পরে সে নিজেই ছুরি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
টাঙ্গাইলের এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, শাহজালাল প্রথমে সুমি বেগম ও জমেলা বেগমকে ছুরি দিয়ে হত্যা করে। পরে সে নিজে আত্মহত্যা করে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সুমি বেগম ও জমেলা বেগমের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং রেঞ্জ দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। আর শাহজালালের বুকের মধ্যে ছুরির একটিমাত্র আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জমিলা বেগমের ভাই মোখলেছ বলেন, শাহজালালের সঙ্গে সুমি এক বছর আগে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। পরে ভাগনে তার শিশু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কয়েকমাস আগে সুমিকে ফিরিয়ে এনে আবার ঘর-সংসার শুরু করে সৌদি চলে যায়। জয়েন উদ্দিন বিদেশ চলে যাবার পরেও সুমির সঙ্গে শাহজালালের যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব ছিল। সেই যোগাযোগ থেকে রাতের কোনো এক সময় হয়তো শাহজালাল সুমিদের ঘরে প্রবেশ করে থাকতে পারে।
এসপি বলেন, জয়েন উদ্দিন বিদেশ চলে যাওয়ার পরও সুমি বেগমের সঙ্গে শাহজালালের সম্পর্ক ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, শাহজালাল সুমিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই বাসায় গিয়েছিল। কিন্তু সুমি পারিবারিকভাবে যেতে রাজি না হওয়ায় এ ঘটনা ঘটতে পারে। বাইরে থেকে অন্য কেউ ঘরে প্রবেশ করেছে এমন কোনো তথ্য প্রমাণ এবং নমুনা পাওয়া যায়নি। এ হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বস্তু ও ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে।
এ ঘটনার পরে তাদের ঘরের দেয়ালে রক্ত দিয়ে সুমিকে উদ্দেশ্য করে কয়েকটি ভুল বানানে লেখা দেখা যায়। সেখানে রয়েছে, ‘এমনটা হতো না যদি আমার সুমী আমার কাছে থাকতো। এই সবকিছুর জন্য সুমীর বাবা দায়ী।’
এসপি বলেন, “এ লেখাটি কে লিখেছে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দেয়ালের লেখার সঙ্গে সন্দেহভাজনদের লেখা মিলিয়ে দেখা হবে। সন্দেহভাজনদের লেখাগুলো সংগ্রহ করেছি। এ লেখাগুলোর মতামত আনার জন্য সিআইডি প্রেরণ করা হবে।
শনিবার সকালে ঘাটাইল উপজেলার দিগর ইউনিয়নের কাশতলার খামারপাড়া থেকে ওই গ্রামের জয়েন উদ্দিনের স্ত্রী সুমি বেগম (৩০), জয়েনের মা জমেলা বেগম (৬৫) এবং কালিহাতি উপজেলার সাতুটিয়া বাজার এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে শাহজালাল (২৫) এর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুমির ছেলেকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর এসপি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), সিআইডি, র্যাব ও ডিবি পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।