বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রেমিকার বাড়িতে যান এসএসসি পরীক্ষার্থী জাহিদুল। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই প্রেমিকার খালা তার ছেলেকে নিয়ে বোনের বাড়িতে আসেন। ঘরে ঢুকেই জাহিদুলকে দেখে কিলঘুষি মারতে থাকেন।
এ সময় দুর্বল হলে ঘরে থাকা রশি দিয়ে জাহিদুলের গলায় ফাঁস দেন প্রেমিকার ভাই। এরপর তার মা- বাবা, খালা ও খালাতো ভাই তাকে ধরে রাখেন। একপর্যায়ে জাহিদুল নিস্তেজ হলে গ্রাম্য চিকিৎসককে ডাকলে তিনি জানান, মারা গেছে। পরে সবাই মিলে লাশ বিলে ফেলে যান তারা।
এসএসসি পরীক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল মোট ছয়জন বলে দাবি পুলিশের। এর মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুইজনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এদিকে, ওই কিশোরী প্রেমিকাকে রাজশাহীর সেফ কাস্টডিতে পাঠানো হয়েছে। আর কিশোরীর বাবা, ভাই ও খালাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাগাতিপাড়া থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোস্তফা কামাল।
এসআই মোস্তফা কামাল জানান, ২৮ আগস্ট সকালে বাগাতিপাড়া বিল থেকে পীরগঞ্জ সাধুপাড়া স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী উপজেলার কাকফো এলাকার রাশুর ছেলে জাহিদুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই রাতেই নিহতের মা জাহেদা বেগম অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
ওই মামলায় নিহতের কিশোরী প্রেমিকাকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন দুপুরে তাকে আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে তার বয়স বিবেচনায় সেফ কাস্টডিতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
তিনি আরো জানান, অভিযান চালিয়ে ওই কিশোরীর ভাইকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার বাড়িতে আসে জাহিদুল। তার মা তাকে বিষয়টি জানানোর পর সে তার খালাকে জানায়। এরপর ওই খালা ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে আসে। বোনের ঘরে ঢুকেই জাহিদকে দেখে কিলঘুষি মারতে থাকেন। এরপর দুর্বল হলে ঘরে থাকা রশি দিয়ে জাহিদুলের গলায় ফাঁস দিয়ে টেনে ধরে।
এ সময় তার মা, বাবা, খালা ও খালাতো ভাই জাহিদকে ধরে রাখেন। ওই ছেলে নিস্তেজ হওয়ার পর তারা স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসককে ডাকলে তিনি জানান, মারা গেছে।
রাত ১২টার দিকে সবাই মিলে লাশ ওই বিলে ফেলে যান। কিশোরীর ভাইয়ের দেওয়া তথ্য মতে তাদের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে জাহিদুলের মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এরপর কিশোরীর বাবা ও খালাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।
আদালত ওই তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। কিশোরীর ভাই ও বাবা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।