নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী আটকের পর ছিনিয়ে নিয়েছে তার সহযোগীরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তার সহযোগীদের অধিকাংশই বরিশাল নগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারের পুত্র ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী রাফি সিকদারের অনুসারী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কথিত ছাত্রলীগ কর্মী শাহরিয়ার সানকে গেটের নিরাপত্তা রক্ষীর কক্ষে আটক করে একদল শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার কিছু ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষের দরজা ভেঙে শাহরিয়ার সানের সহযোগীরা নিয়ে যায় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।ছাড়িয়ে নিতে নেতৃত্ব দেয় রবিন আহম্মেদ নামে এক ছাত্রদল নেতা যিনি অপর ছাত্রদলের নেতা দাবীদার রাফি সিকদারের ঘনিষ্ঠ সহচর। এমনকি এই ঘটনার পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাফি সিকদারকে বেশ সক্রিয় থাকতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, গত ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ওপর হামলা এবং ১ আগস্ট পুলিশের কাছে শিক্ষার্থীদের ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার আসামি শাহারিয়ার সান।
তাকে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ক্যাম্পাসে পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেটের নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে তার সহযোগীরা এসে ওই কক্ষের দরজা ভেঙে তাকে নিয়ে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের ভোলা রোডে মিছিলও করেছেন তারা।
এ বিষয়ে সান বা তার সহযোগীদের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে বরিশাল নগর বিএনপির একাধিক নেতা জানান, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাবেক নেতা মনিরুজ্জামান খান ফারুক কে আহবায়ক, জাতীয় যুব সমাজ থেকে আসা জিয়াউদ্দীন সিকদার কে সদস্য সচিব এবং সাবেক ছাত্রদল নেতা দীর্ঘ ১৬ বছর রাজপথে থেকে সরকার পতনের আন্দোলন সংগ্রামে একাধিকবার জেল জুলুম হামলা মামলার শিকার আফরোজা খানম নাসরিন কে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করে বরিশাল মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই মুল ধারার বিএনপি নেতাকর্মীরা আলাদা প্লাটফর্ম তৈরী করেন। দলের পরীক্ষিত নির্যাতিত নিবেদিত নেতা আফরোজা খানম নাসরিন কে মেনে নিলেও কোনো ভাবেই মেনে নেয়নি ফারুক-জিয়াকে। আর এই দুই নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে দখল বাজী, চাঁদাবাজি সহ বিস্তার অভিযোগ। পাশাপাশি জিয়া উদ্দিন সিকদার ও তার ছেলে চিহ্নিত মাদক কারবারি দলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে ৫ আগষ্টের পরে এখন পর্যন্ত কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে মহানগর বিএনপির একাধিক নেতা। নেতৃবৃন্দ আরও জানায় দলের হাইকমান্ডকে একাধিকবার অবগত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে দিন দিন একের পর এক অপরাধ করেই যাচ্ছেন। আর এই অসৎ নেতাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল। অনতিবিলম্বে জাপা মুক্ত বরিশাল মহানগর বিএনপি চান তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. গোলাম রাব্বানী জানিয়েছেন তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন।
অপরদিকে বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একটু ঝামেলা হয়েছে বলে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সদস্যরা গেলে তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে নিষেধ করে। পরে আর তাদের কিছু জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই বিস্তারিত জানেন না বলেও জানান ওসি।