বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ▪ হ-য-ব-র-ল! পুরো ম্যাচে বাংলাদেশকে এক কথায় প্রকাশ করলে এই একটা শব্দই যথেষ্ট। অবশ্য এই আর নতুন কী, এইটাই তো আমাদের বৈশিষ্ট্য। ‘ও বুকেরই সব কষ্ট দু’হাতে সরিয়ে /চলো বদলে যাই।’ আইয়ুব বাচ্চুর এই গানের সুরে স্লোগান উঠেছিল যেন বাংলার ক্রিকেটাঙ্গনে। বিভোর হয়েছিল সবে, নতুন আশা, নতুন ভরসা, নতুন বিশ্বাসে নতুন ভোর দেখবে বলে। নতুন শুরু শব্দটাকে যদিও তাচ্ছিল্য করেছিলেন তিনি, তবুও নতুন শুরুর স্বপ্ন ছিলো চোখে; মুছে সব গ্লানি। তবে লাভ/ক্ষতি কিছুই হয়নি, এতো এখন নিত্যকার কাহিনী।
▪ যদিও দেশ ছাড়ার আগে অতি প্রত্যাশাকে ‘বোকামো’ বলেছিলেন তিনি, তবে একাদশ সাজাতে কি বোকামো হয়নি একটুখানি? যেই নাইম শেখ দলেই ছিলেন না, উড়ে এসে জুড়ে বসলেন তিনিই কিনা। বলা হচ্ছিল, মুশফিক মিরাজের কেউ উদ্বোধনীতে যাবে; বিজয়ের সঙ্গী হবে৷ তবুও কেন দিনশেষে ভরসা সেই নাইম শেখে, কিছু না করেও হঠাৎ ঢুকে গেলেন একাদশে! আচ্ছা, একাদশে জায়গা পেতে আসলে কী করা লাগে?
▪ ঘন-গাঢ় নিকষ কালো ধূসর মলিন রাত্রি, ব্যর্থতার মিছিলে মোসাদ্দেকই শুধু প্রাপ্তি। অথচ খেলবেন না খেলবেন না, প্রশ্ন ছিল খানিক সময় আগে; তবে যেন চুনকালি মাখলেন সমালোচকদের মুখে। নামটা যদিও সৈকত, তবে ক্রিকেটটাকে বুঝেন সমুদ্র সমান। যদিও কখনো ভাটা পড়ে, কিন্তু তার বৈশিষ্ট্য ঠিকই থাকে। যদিও শান্ত দেখায়, কিন্তু জোয়ারের ভয়টা সর্বদাই থাকে। এজন্যই হয়তো থাকেন সাকিবের চোখে, স্বর্ণকারেই তো স্বর্ণ চিনে।
▪ উদ্বোধনীতে ব্যর্থতা, বাংলাদেশের সাথে বরাবরই লেখা। সর্বশেষ ওপেনিংয়ে পঞ্চাশ দেখেছিলেন কবে, স্মরণ আছে কি আপনার মনে? ইতিহাস ঘেটে পেছনে যেতে যেতে, অবশেষে পেয়েছি খুঁজে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, ২৩ ম্যাচ আগে! ভাবা যায়, একটা টেস্ট খেলুড়ে দেশ এভাবেই টি-টোয়েন্টি খেলে। এই ২৩ ম্যাচে মাত্র একবার ৪০ ছুঁয়েছে, বিপরীতে ১১ বারই পারেনি দুই অঙ্কে যেতে। আসলে কিছু বলার থাকে না, যদি নিজেদের লজ্জা না থাকে!
▪ মুস্তাফিজ কি দেশের বাইরে টি-টোয়েন্টি একাদশের যোগ্য? প্রশ্নটা আগেও করেছি, এখনো করছি। প্রশ্ন তুলছি তার সক্ষমতা নিয়েও। দেশের বাহিরে বরাবরই ব্যর্থ তিনি, আইপিএল বাদে বাকী কোথাও নেই তাঁর পুরনো সেই ঝলকানি। দেশের বাইরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ওমান আর স্কটল্যান্ড অধ্যায় বাদ দিলে বলার মতো নেই কিছুই। দেশের বাইরে শেষ ১১ ম্যাচে তার ইকোনমি ১০.৩। উইকেট সংখ্যা ৮ আর উইকেট। আর একটি উইকেট নিতে খরচ করেছেন ৫১.৫৫ রান। এর পরেও তিনি করে একাদশে জায়গা পান, এইটুকুও কি বোঝেন না সাকিব আল হাসান?
▪ তিক্ত হলেও সত্য, বড় আসরে বাংলাদেশ বরাবরই ব্যর্থ। দল তো বহুদূর, কেউ নজর কাড়তে পারেন না এককভাবে। বিশ্বমঞ্চে পারেন না নিজেদের চেনাতে, পারেনা বাংলার ক্রিকেটে সত্যিই বাঘ আছে তা জানাতে। ফলে আফগানরা পারলেও বাংলাদেশীরা পারে না, পারে না নিজের নামে দেশকে চেনাতে। ফলে আজ টেস্ট স্ট্যাটাসের ২২ বছর পেরোলেও শুধুই সাকিব একাই আছেন, বিশ্বজুড়ে যিনি লাল-সবুজের পরিচয় বহন করেন। যদি বিশ্ব আসরে নিজেদের চেনাতে পারতেন, ফ্র্যাঞ্জাইজি ক্রিকেটেও বেশ কদর পেতেন।
▪ ওহ! আহ! ইশ! যদি, কিন্তু, তবে; এই আক্ষেপগুলো কি আদৌ ফুরাবে? যদিও ১৩০-এর কম লক্ষ্য নিয়ে জেতার আশা করাটাই বোকামি, তবুও স্বপ্ন দেখতে দোষ কি? ১৫ ওভার নাগাদ সব ঠিকই ছিলো, তবে অবশেষে ফের এলোমেলো। এ যেন এক নিত্যকার অভ্যাস, স্বপ্ন দেখিয়েও ভেঙে দেয় বিশ্বাস। আসলে এত হাঁসফাস করে ক্রিকেট হয় না, ক্রিকেট সাহসীদের খেলা। যেখানে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বহু দূর, ফলেই সর্বদাই আমাদের আকাশে গোধূলি বেলা।
▪ খেলা শুরু হবার পূর্বেই প্রবাসী বাংলাদেশীদের বাংলাদেশ বাংলাদেশ স্লোগানে মুখরিত পুরো চত্বর, এ যেনো শারজার বুকে একখণ্ড বাংলাদেশ। ফলে, চেয়েছিলাম ওদের জন্য হলেও জিতে যাক বাংলাদেশ। চেয়েছিলাম শতমাইল পাড়ি দিয়ে, অসংখ্য বাধা পেড়িয়ে প্রিয় লাল-সবুজ দলকে সমর্থন দিতে আসা প্রবাসী ভাইদের জন্য হলেও জিতে যাক বাংলাদেশ। কিন্তু…