1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐকবদ্ধ থেকে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে – আমিনুল হক শহিদ বীরমুক্তিযোদ্ধা মুখলেস্থর রহমান এর কবরস্থান,শ্রদ্ধা নিবেদনের গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা ভারতে পাচারের অভিযোগ ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত *এই জালিয়াতি মানা যায় না* -মাতারবাড়ী আমদানি করা কয়লায় মাটি বাংলা ভাষার বিকৃতি ও রক্ষার উপায়: বাংলাদেশ, কলকাতা ও লন্ডনের প্রেক্ষাপট দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত লামা উপজেলায় সাংবাদিক ইউনিটি ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করবো ।। না দিলে করবো না দলীয় সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত। —বেনজীর আহমেদ টিটো দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফের পক্ষ থেকে কোরআনের পাখিদের ঈদের নতুন জামা বিতরণ

বাংলা ভাষার বিকৃতি ও রক্ষার উপায়: বাংলাদেশ, কলকাতা ও লন্ডনের প্রেক্ষাপট

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫
  • ২৭ বার দেখা হয়েছে

যুক্তরাজ্য বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলা ভাষা পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ ভাষা, যার রয়েছে হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সাহিত্য ভান্ডার। কিন্তু বর্তমানে ভাষার বিকৃতি, অপ্রচলিত শব্দের অপব্যবহার, বিদেশি ভাষার সংমিশ্রণ ও অনিয়ন্ত্রিত বাক্য গঠন বাংলা ভাষার বিশুদ্ধতা নষ্ট করছে। এর প্রধান কারণ আধুনিক প্রযুক্তি, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব, কলকাতার বাংলা ভাষার শৈলীর অতিরিক্ত অনুকরণ, এবং ইংরেজির আধিপত্য। এ বিষয়ে বাংলাদেশ, ভারত (বিশেষত কলকাতা), এবং যুক্তরাজ্যের (লন্ডনের) বাংলা ভাষাভাষী জনগণের ভূমিকা এবং সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হলো।

বাংলাদেশের বাংলা ভাষার চর্চায় বিকৃতি ও সমাধান

বাংলাদেশে বাংলা ভাষার চর্চায় বিভিন্নভাবে বিকৃতি ঘটছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা লেখার ক্ষেত্রে ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাংলা ভাষার প্রতি উদাসীনতা ও বিদেশি ভাষার প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ এর অন্যতম কারণ।
বাংলা ভাষার বিকৃতির প্রধান কারণসমূহ:

১. ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার মিশ্রণ – বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, নাটক-সিনেমায় বাংলা ভাষার সাথে ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার অতিরিক্ত সংমিশ্রণ ঘটছে। যেমন, “মাইন্ড সেট করতে হবে”, “সেলফি তুলবো”, “লুক দারুণ লাগছে” ইত্যাদি।
2. কলকাতার বাংলা উচ্চারণ ও বানানের অতিরিক্ত অনুসরণ – কলকাতার বাংলা ভাষার উচ্চারণশৈলী ও শব্দ প্রয়োগ বাংলাদেশের অনেক সংবাদমাধ্যম ও লেখায় জায়গা করে নিচ্ছে। যেমন, “বিজয়” এর পরিবর্তে “বিজয়ী”, “পোশাক” এর পরিবর্তে “জামাকাপড়”।
3. সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রযুক্তির প্রভাব – ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে বাংলা ভাষার বিকৃত উচ্চারণ এবং ইংরেজি বর্ণমালায় বাংলা লেখা (যেমন “valo achi” ইত্যাদি) দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
4. সঠিক বাংলা শিক্ষার অভাব – শিক্ষার্থীদের বাংলা ব্যাকরণ ও বিশুদ্ধ ভাষাচর্চার প্রতি আগ্রহ কমছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যা তৈরি করবে।

বাংলা ভাষাকে সুরক্ষার জন্য করণীয়:

1. বাংলা একাডেমির কঠোর উদ্যোগ – বাংলা ভাষার বিশুদ্ধতা রক্ষায় সরকার ও বাংলা একাডেমির কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি।

2. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার বাধ্যতামূলক চর্চা – স্কুল-কলেজে বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণ চর্চা বাড়াতে হবে।

3. গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার – সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশুদ্ধ বাংলা ব্যবহারের প্রচার বাড়াতে হবে।

4. আইনি পদক্ষেপ – বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

কলকাতার বাংলা ভাষার বিকৃতি ও প্রভাব

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষায় অনেক পরিবর্তন এসেছে, যা বাংলাদেশের বাংলা ভাষার ওপর প্রভাব ফেলছে।

কলকাতার বাংলা ভাষার প্রধান সমস্যা:

1. অন্যান্য ভাষার অতিরিক্ত সংমিশ্রণ – বাংলা ভাষায় ইংরেজি, হিন্দি ও সংস্কৃতের প্রভাব বাড়ছে।

2. বানানের পরিবর্তন – কলকাতার বাংলা বানানে অনেক পরিবর্তন এসেছে, যা বাংলাদেশের বাংলা ভাষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

3. উচ্চারণের পার্থক্য – কলকাতার বাংলার উচ্চারণশৈলী বাংলাদেশের ভাষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, কিন্তু অনেক মিডিয়া এটি অনুসরণ করছে।

সমাধান:

1. বাংলা একাডেমি এবং পশ্চিমবঙ্গ সাহিত্য একাডেমিকে যৌথভাবে একটি মানসম্পন্ন ভাষারীতি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে।

2. কলকাতার বাংলা ভাষার বিকৃত শব্দের অনুপ্রবেশ বন্ধে বাংলাদেশের মিডিয়া ও সাহিত্য জগতে কঠোর নীতি গ্রহণ করতে হবে।

লন্ডনের বাংলা ভাষার পরিস্থিতি

যুক্তরাজ্যে প্রায় ৮ লাখেরও বেশি ব্রিটিশ বাংলাদেশি বাস করেন, যাদের প্রধান ভাষা সিলেটি বাংলা এবং ইংরেজি। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা চর্চার অভাব দিন দিন প্রকট হচ্ছে।

লন্ডনে বাংলা ভাষার চর্চার প্রধান সমস্যা:
1. বাংলা শিক্ষার অভাব – লন্ডনের স্কুল-কলেজে বাংলা ভাষা শেখার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই।
2. সিলেটি ভাষার প্রভাব – সিলেটি ভাষায় কথা বললেও অনেকে বাংলা লিখতে বা পড়তে জানে না।
3. বাংলা মিডিয়ার সীমিত সুযোগ – লন্ডনে বাংলা ভাষায় সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল থাকলেও নতুন প্রজন্মের আগ্রহ কম।

বাংলা ভাষা সংরক্ষণের জন্য করণীয়:
1. স্কুল-কলেজে বাংলা ভাষা শেখার সুযোগ তৈরি করা – ব্রিটিশ সরকারকে অনুরোধ করে বাংলা ভাষাকে শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা।

2. বাংলা মিডিয়া ও সাংবাদিকতার প্রসার – লন্ডনে বাংলা সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল ও অনলাইন মিডিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

3. বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চা উৎসাহিত করা – তরুণ প্রজন্মের জন্য বাংলা ভাষায় সাহিত্য, গল্প, কবিতা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে।

লন্ডনের বাংলা মিডিয়া ও সাংবাদিকতা:
যুক্তরাজ্যে কয়েকটি বাংলা টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্র কাজ করছে, যেমন:
টিভি চ্যানেল: চ্যানেল এস,ইকরা বাংলা টিভি, এনটিভি, এটিএন বাংলা টিভি, টিভি ওয়ান,
অনলাইন টিভি Arafa TV,
লন্ডন বাংলা টিভি,
এলবি টিভি, A1Tv, Sylhet Tv,
ইসলামি বাংলা টিভি ইত্যাদি বাংলা ভাষা চর্চা করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

সংবাদপত্র: জনমত, সাপ্তাহিক বাংলা পোস্ট, সাপ্তাহিক সুরমা, বাংলা পোষ্ট, অনলাইন পোর্টাল পত্রিকা আরাফাত নিউজ, লন্ডন বাংলা ম্যাগাজিন, দেশ পত্রিকা, বাংলা ভাষা চর্চা করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
শুধু তাই নয় : মসজিদ মাদ্রাসা গুলো ইসলামি শিক্ষা সংস্কৃতি বিকাশ সদনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে তার পাশাপাশি বাংলা ভাষা চর্চা করে নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষা শিক্ষা সংস্কৃতি শিক্ষা দিচ্ছে।
সরকারি বেসরকারি ভাবে
এগুলোর কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করে নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষার চর্চা ও প্রচার বাড়াতে হবে।
উপসংহার
বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও যুক্তরাজ্যে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারের নীতিমালা, বাংলা একাডেমির সচেতনতা, মিডিয়ার ভূমিকা এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ তৈরি করা না গেলে ভবিষ্যতে বাংলা ভাষার বিশুদ্ধতা হুমকির মুখে পড়বে।

প্রস্তাবিত পদক্ষেপ:

1. বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা নিশ্চিত করতে আইনি পদক্ষেপ
2. বাংলা মিডিয়া ও সাহিত্যচর্চার প্রসার ঘটানো
3. বাংলা ভাষার মান সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড তৈরি করা
4. বাংলা ভাষার শিক্ষক ও গবেষকদের সক্রিয় ভূমিকা

বাংলা ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি, নতুবা এটি ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে চলে যাবে।

লেখক গবেষক :
যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেইন

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com