বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী (১৪) তার বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে। আর মেয়েকে ধর্ষণ করতে স্বামীকে সহযোগিতা করত মেয়েটির সৎ মা (২৭)।
সোমবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে বাবার হাতে যৌন নির্যাতনের মর্মস্পর্শী অভিযোগ জানাচ্ছিল মেয়েটি। ঘটনার পর পরই তার বাবাকে থানা পুলিশ আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পশ্চিম কালিয়ানিকান্দা গ্রামে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মেয়েটির বখাটে বাবা (৩৫) দীর্ঘদিন ধরে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সহযোগীতায় তার নিজের মেয়েকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে আসছিল। ধর্ষণের প্রথম ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি। ওই রাতে মেয়েটির সৎ মা গভীর রাতে তার শোবার ঘরে এসে তাকে ঘুম থেকে তুলে উত্তর পাশের কক্ষে নিয়ে যায়।
এ সময় মেয়েটির বাবা জোরপূর্বক ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। পরে আরো ১০ থেকে ১৫ বার মেয়েটি তার সৎ মায়ের সহযোগীতায় বাবার হাতে ধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনাটি কাউকে না বলতে হুমকিও দেওয়া হয় মেয়েটিকে। ধর্ষণের পর ট্যাবলেট খাওয়ানো হতো বলে জানায় ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে।
মেয়েটি জানায়, বাড়িতে একটি ঘরে তার মা-বাবা থাকে, আর পাশের ঘরে সে থাকে। প্রায় সময় আমার কক্ষে এসে বাবা আমাকে ধর্ষণ করত। আমি নানার বাড়ি চলে আসার আগের রাতেও আমাকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি সেদিন পেট ব্যথায় কাতরাচ্ছিলাম। পরে আমাকে ধর্ষণ করতে চাইলেও আমার সৎ মা বলে, দেখ না মেয়েটি পেট ব্যথায় কাতরাচ্ছে। পরে ওই রাতে আমার বাবা আর কিছু হয়নি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করে ওই মেয়ে।
মেয়েটির নানা মামলার বাদী আব্দুল খালেক বলেন, মেয়ের বাবা খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ। আমার মেয়েকে তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। ৭ বছর আগে আমার মেয়ে দুর্ঘটনায় মারা যায়। তার পর থেকেই আমার নাতনি তার বাবার বাড়িতেই থাকত। পরে তার বাবা আরেকটি বিয়ে করে।
আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ কম ছিল। আমার নাতনি মাঝে মধ্যে বেড়াতে আসত। ১৪ আগস্ট রাতে আমার নাতনি হঠাৎ আমার বাড়িতে এসে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে কান্নাকাটি করতে থাকে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে শুধু বলে আমি আর ওই বাড়িতে যাব না ওরা সবাই খারাপ। পরে আমার স্ত্রীকে ঘটনা খুলে বলে। আমি সঙ্গে সঙ্গেই আমার আত্মীয়দের সহযোগীতায় ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনা খুলে বলি। ফোন করার কিছুক্ষণ পরই পুলিশ এসে তার বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। এখন আমাকে তার পরিবার থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে তার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় মেয়েটির সৎ মা মামলার পলাতক আসামির সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কেন যে অভিযোগ করল এটা আমি বলতে পারি না। আমার স্বামী যদি এমন কাজ করে থাকে তাহলে যেটা আইন বিচার সেটাই হবে।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহীনুজ্জামান খান বলেন, আমরা ৯৯৯-এর মাধ্যমে একটি ধর্ষণের সংবাদ পায়। সঙ্গে সঙ্গেই আমরা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করি। এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানায় ১৫ আগস্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। মামলার অপর আসামি মেয়েটির সৎ মা। তাকে ধরার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।