বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : এডিস মশা নিধনে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। রোববার (১১ জুলাই) থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ এই অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, এডিস মশার জন্ম ড্রেনে হয় না, এডিস মশা জন্ম খালে হয় না। এটি অত্যন্ত অভিজাত একটি মশা। এরা অভিজাত এলাকাতেই বংশ বিস্তার করছে। নির্মাণাধীন ভবনেই ৬২ শতাংশ ডেঙ্গু মশার চাষ হয়। সুতরাং যে সকল বাসাবাড়িতে ডেঙ্গুর চাষ হয় আমরা সে সকল বাসাবাড়িতে যাব এবং ফাইন করব। ফাইন ছাড়া কোন গতি নাই।
শনিবার (১০ জুলাই) সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আয়োজিত এডিস মশা নিধনে বিশেষ চিরুনি অভিযান উদ্বোধনের পূর্বে এসব কথা বলেন মেয়র। এসময় পাশে ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল বাকী, ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পারসিয়া সুলতানা প্রিয়াংকা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল ইসলাম প্রমুখ।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল থেকে আমাদের ৫৪টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে। আপনারা দেখেছেন কিভাবে বাসাবাড়িতে মশা লালন পালন করছি। বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন ফার্মগুলোতে মশা লালন পালন করছি। ইতিমধ্যে রিহ্যাব সভাপতি এবং গৃহায়নের নেতৃবৃন্দকে ডেকেছি তাদের বলে দিয়েছি দায়িত্ব নেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, এডিস মশা বিশেষ করে কনস্ট্রাকশন যে বাসা বাড়ি আছে ৬২ শতাংশ এডিস মশাই এই বাসা বাড়িতে চাষ হয়। সুতরাং যে সকল বাসাবাড়িতে ডেঙ্গুর চাষ হয় আমরা সেসকল বাসা-বাড়িতে যাব এবং ফাইন করব। ফাইন ছাড়া কোন গতি নাই।
মেয়র বলেন, করোনার সময় হওয়ায় অনেক বাসাবাড়ির উপরে আমাদের লোকদের উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। নিচ থেকে গেইট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বাসার মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা শুধু আপনাদের বাসার ছাদ চেক করব, গ্যারেজ চেক করব, আপনারা কোন অব্যবহৃত জিনিস রেখেছেন কি না? চেক করব এব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা চাই। পাশাপাশি সকল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে বলেন, যে সকল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী আছে আপনারা আমাদের ডিএনসিসিকে অবহিত করুন। রোগীরাও আমাদেরকে জানান। আমাদের লোক গিয়ে ওই রোগী বাসার আশপাশে স্প্রে করে দিয়ে আসবে।
মেয়র বলেন, এডিস মশা জন্ম হয় পরিষ্কার পানিতে। কারো দোষারোপ না করে বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার করি।
লোক দেখানো অভিযান বলে নাগরিকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমরা অ্যাপসের মাধ্যমে প্রত্যেক বাসা চিহ্নিত করছি। প্রত্যেকটি বাসার ঠিকানা আমাদের কাছে আছে। এটা লোক দেখানো নয়। আমাদের কাছে তালিকা আছে ১৭২০টি বাসায় যেখানে গতবার লার্ভা পেয়েছি তাদের এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছি। প্রত্যেকটি মনিটরিং করছি অ্যাপসের মাধ্যমে। গতকাল (শুক্রবার ৯ জুলাই) পর্যন্ত ঢাকাতে ১৬৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে উত্তরের ৩৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। আমাদের কথা একজনও যেন ভর্তি করতে না হয়।
মেয়র বলেন, নির্মাণাধীন ভবনে যেখানে শ্রমিকরা থাকেন তাদের খাটের তলায় পর্যন্ত লার্ভার চাষ। গুলশানের অভিজাত এলাকায় আপনারা (ভবনের মালিকরা) একটু কষ্ট করে বাসাগুলোতে দেখেন।
নগরবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যার বাড়ি তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে, যে ফ্লাটের মালিক তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে, ডেভেলপার কোম্পানিকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তাহলে ৬৫ শতাংশ মশা কমে আসবে। নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করব এডিস মশার জন্ম ড্রেনে হয় না, এডিস মশার জন্ম খালে হয় না, এটি অত্যন্ত অভিজাত একটি মশা। অভিজাত এলাকাতেই বংশ বিস্তার করছে।