বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: দিনব্যাপী গণঅনশন শেষে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সোমবার (২২ নভেম্বর) ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। শনিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে দিনব্যাপী গণঅনশন শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার দাবিতে একই সঙ্গে তাকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও সারাদেশে জেলা এবং উপজেলায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। তারপরও দাবি আদায় না হলে আবারও কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমাপনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে নেত্রী তার সারা জীবন এদেশের মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। অল্প বয়সে স্বামী হারিয়ে দুটি শিশু সন্তান নিয়ে জনতার কাতারে মিশে গিয়েছেন। যিনি এই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। যিনি নারীদের ক্ষমতায়নে কাজ করেছেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। যিনি তিনবার জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। সেই নেত্রী খালেদা জিয়া। যাকে আমরা মা বলে জানি। তাকে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বেআইনিভাবে আগের রাতে নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা তাকে তিন বছরের বেশি সময় কারাগারে আটক করে রেখেছে। একটাই কারণ তারা জানে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে এ দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতে পারবে না। জনগণের ভোটের অধিকার কেউ কেড়ে নিয়ে পারবে না।
তিনি বলেন, আজকে এ সরকারের শুধুমাত্র অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার লিপসার কারণে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা-গুম করেছে।
দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ তিনি জীবন-মৃর্ত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমরা বিদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে বার বার কথা বলেছি, তারা বলছেন বাংলাদেশে তাকে যতটা চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব তা দেওয়া হয়েছে। এখন তাকে বিদেশে নিয়ে না গেলে আর তাকে সুস্থ করা যাবে না।
তিনি বলেন, পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে অবিলম্বে তাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় যে আন্দোলন শুরু হলো এই আন্দোলন আপনাকে আপনার গদিচ্যুত করবে। আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত।
সকাল ৯টা থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় গণঅনশনে আরো বক্তব্য দেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
এছাড়া আরো বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতীক), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির একাংশের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, এলডিপির অপর অংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার একাংশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব প্রফেসর আব্দুল করিম, ন্যাপ ভাসানীর নেতা অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন প্রমুখ।