২০১৭ সালে মিশা-জায়েদ প্যানেল কমিটি ক্ষমতায় আসার পর শিমুর ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। তার সদস্য পদ বাতিল করে দিয়ে সহযোগী সদস্য করা হয়। এমনকি সদস্য হিসেবে সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ছিলেন প্রয়াত এই অভিনেত্রী। সেই ক্ষোভে নিজের ভোটাধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করেছিলেন শিমু। নানান সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
গেল চার বছর ধরে যিনি সহযোগী সদস্য থেকে নিজের সদস্য পদ ফিরে পেতে ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন, সেই শিমু মৃত্যুর পরদিনই সমিতির সদস্য হয়ে গেলেন!
গেল ১৯ জানুয়ারি এফডিসিতে দেখা গেল শিমুর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ব্যানার তৈরি করেছে মিশা-জায়েদ প্যানেল। যার একটি দেওয়া হয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নামে, অন্য একটি আছে মিশা-জায়েদ প্যানেলের নামে। ব্যানারগুলোতে শিমুর পরিচয় দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সদস্য চিত্রনায়িকা শিমু’। এই পরিচয় দৃষ্টি কেড়েছে সবার। জন্ম দিয়েছে আলোচনারও।
অনেকে বিষয়টিকে মৃত শিমুর সঙ্গে উপহাস হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, যে শিমুকে মিশা-জায়েদ নেতৃত্ব সদস্য থেকে সহযোগী সদস্য বানিয়ে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল সেই তারাই মৃত্যুর পর তাকে সদস্য বানিয়ে দিল। শিমুর মৃত্যুর আবেগকে কাজে লাগিয়ে শিল্পীদের সমর্থন নিজেদের দিকে টানতেই এই কৌশল অবলম্বন করছে তারা। ভোটের রাজনীতি গেল চার বছর ধরে শিল্পী সমিতিতে অবহেলিত শিমুকে যেন গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। তাকে নিয়ে কথা বলে আবেগ ছড়াতে পারলেই যেন লাভ। আর সেই লাভই ঘরে তোলার চেষ্টা চলছে।
১৯৯৮ সালে সিনেমায় অভিষেক হয় অভিনেত্রী শিমুর। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। তিনি প্রায় ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এ ছাড়াও অর্ধশতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। দুই দশকেরও বেশি সময় অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেছেন শিমু।
অভিনেত্রী হিসেবে দেশের খ্যাতনামা পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন শিমু। এর মধ্যে রয়েছেন প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলাম, পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, এ জে রানা, শরিফুদ্দিন খান দীপু, এনায়েত করিম ও শবনম পারভীন।
তাছাড়া শিমু অভিনয় করেছেন দেশের প্রথম সারির অভিনেতা শাকিব খান, রিয়াজ, অমিত হাসান, বাপ্পারাজ, জাহিদ হাসান ও মোশাররফ করিমসহ অনেকের বিপরীতে। প্রযোজক হিসেবেও দেখা গেছে তাকে।
প্রসঙ্গত, গেল সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে কেরাণীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকা থেকে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর (৩৫) বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শিমুকে হত্যা করার অভিযোগে তার স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদকে গ্রেফতার করেছে কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশ। তাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। নিহতের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন এই অভিনেত্রী।