বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: শেয়ারবাজারের চার কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে উঠে যাচ্ছে। কোম্পানি চারটি হলো খুলনা পাওয়ার, শাহজিবাজার পাওয়ার, বিএসআরএম লিমিটেড ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম। আজ বুধবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভা শেষে সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শেয়ারবাজারে আজ বুধবার পর্যন্ত মোট ছয়টি কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস আরোপ ছিল। উল্লিখিত চারটি কোম্পানি ছাড়া বাকি দুটি হচ্ছে বেক্সিমকো লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংক। এই ছয় কোম্পানির মধ্য থেকে বেক্সিমকো ও ইসলামী ব্যাংক বাদে বাকি চারটির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিএসইসি জানিয়েছে, ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে। সেই হিসাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে এসব কোম্পানিতে আর ফ্লোর প্রাইস থাকছে না।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, কমিশন সভায় সিদ্ধান্তের পরপরই তা কার্যকরে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, কোম্পানি চারটি ফ্লোর প্রাইস আগামীকাল লেনদেন শুরুর আগেই প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে তারা।
দরপতনের ৩ শতাংশ সীমা থাকছে না
এদিকে নতুন করে চার কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি শেয়ারের দরপতনের ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সীমাও তুলে নেওয়া হয়েছে। শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে ৩ শতাংশের বদলে আগের নিয়মে সার্কিট ব্রেকার বা নির্ধারিত মূল্যসীমা আরোপ হবে। অর্থাৎ দরপতনের ক্ষেত্রেও আগের স্বাভাবিক নিয়ম পুনর্বহাল হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে। তাতে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারবে। আজ বুধবার পর্যন্ত তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩ শতাংশের বেশি কমার সুযোগ ছিল না।
শেয়ারবাজারের টানা পতন ঠেকাতে গত ২৫ এপ্রিল দরপতনের সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ মূল্যসীমা বেঁধে দিয়েছিল বিএসইসি। ওই সময় বিএসইসির এ–সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছিল, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দাম এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। যদিও সাধারণ সার্কিট ব্রেকারের নিয়মে দামভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমার সুযোগ ছিল। এখন ৩ শতাংশ সীমা বাতিল করে আগের মতো ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতনের সার্কিট ব্রেকারের নিয়ম ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে ২০২০ সাল থেকে কয়েক দফায় শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়। এর ফলে শেয়ারের দাম বিএসইসির বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সীমার নিচে নামার কোনো সুযোগ ছিল না। সর্বশেষ দফায় ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সব শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল বিএসইসি। এরপর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর একটি বড় অংশের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে যায়। এতে দেড় বছর ধরে এসব কোম্পানির শেয়ারের তেমন কোনো লেনদেন হয়নি। পুঁজিবাজারেও একধরনের স্থবিরতা নেমে আসে। এ অবস্থায় বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে কয়েক ধাপে শেয়ারবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। সর্বশেষ ধাপে আজ বুধবার চারটি কোম্পানির শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকা বেক্সিমকো লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির একজন কর্মকর্তা জানান, এ দুটি কোম্পানির সঙ্গে আরও কিছু বিষয় জড়িত রয়েছে। সেসব বিষয়ের সুরাহা করে এ দুটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।