বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, পৌরসভার কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের সক্ষমতা না থাকলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা পূর্বক বিদ্যমান আইন অনুযায়ী প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদে রূপান্তরিত অথবা পরিষদ ভেঙে পুনর্নির্বাচন দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এছাড়া পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অডিট করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
সোমবার (০৫ জুলাই) স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহের (সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদে ও ইউনিয়ন পরিষদ) রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ ও হিসাব সংরক্ষণের পদ্ধতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত অনলাইন সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নিজস্ব আয় দিয়ে পরিচালনা ব্যয় নির্বাহ করা ও উন্নয়ন কাজে অবদান রাখা এবং নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পৌরসভা সৃষ্টি হয়েছে। এখন যদি এসব প্রতিষ্ঠান নিজ কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং জনগণকে সঠিক সেবা প্রদানের সক্ষমতা না থাকে তাহলে পৌরসভা হিসেবে টিকে থাকার যৌক্তিকতা হারাবে। যা বিদ্যমান আইনে আছে। এই আইনের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে পৌরসভা থেকে ইউনিয়ন পরিষদে রূপান্তর বা পরিষদ ভেঙে পুনর্নির্বাচন দেওয়া হবে।
পৌরসভা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বেশিরভাগ পৌরসভা তাদের কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করছে। যে সমস্ত পৌরসভা পুরোপুরি বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না তার সুনির্দিষ্ট কারণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মো. তাজুল ইসলাম আরও বলেন, পৌরসভাগুলোতে আয় এবং ব্যয়ে স্বচ্ছতা আনা হবে। এলক্ষ্যে এক্সটার্নাল অডিটের ব্যবস্থা করা হবে। এই জন্য সংশ্লিষ্টদের ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এসময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সকল প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের ত্রৈমাসিক বিবরণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও তা অনুসরণ না করে পৌরসভাগুলো আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অযৌক্তিক লোক নিয়োগ দিয়ে থাকলে সেই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, এখন থেকে পৌরসভায় আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ দিতে হলে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
মন্ত্রী জানান, প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের অধীন এলাকার জন্য কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং পরিবার পরিকল্পনাসহ অনেক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত আছে। এই সমস্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী সকল কর্মচারী ইউনিয়ন পরিষদে নিয়মিত অফিস করলে জনগণ আরও অধিক সেবা পাবেন। তাই এটা নিশ্চিত করতে হবে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জেলা পরিষদকে অধিক কার্যকর করার জন্য জেলা পরিষদ আইনের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা ও অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক রাজস্ব ব্যয়ের অতিরিক্ত অর্থ উন্নয়ন খাতে স্থানান্তর করতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঞ্চালনায় সভায় এই বিভাগের সকল অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব এবং সংশ্লিষ্ট শাখার উপ-সচিবগণ অংশ নেন।