বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : মাদারীপুরে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার পরও ছেলে-পুত্রবধূর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাননি ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা। মাসে ভরণ-পোষণের মাত্র আড়াই হাজার টাকা চাওয়ায় তাকে দিনভর পেটানোর পর অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে হাসপাতালের বারান্দায়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে ভুক্তভোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী। বিষয়টি অমানবিক উল্লেখ করে পুলিশ সুপার জানান, দোষীদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, যে বয়সে সন্তান আর নাতি- নাতনির সঙ্গে সুখের সময় কাটানোর কথা। সেই বয়সে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতড়াচ্ছেন ৬৫ বছর বয়সী সার্থকবান বিবি।
কি করেননি একমাত্র সন্তান দেলোয়ার তালুকদারের জন্য। বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে ছেলেকে নতুন ঘর তুলে দিয়েছেন। এছাড়া ১৪ শতাংশ জমিও লিখে দিয়েছেন ছেলের নামে। তবু সুখ মেলেনি মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের কুমড়াখালী গ্রামের ঐ বৃদ্ধার।
স্থানীয়রা জানায়, খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ছেলে দেলোয়ার ও তার স্ত্রী মাকসুদা বেগম প্রায়ই মারধর করত সার্থকবান বিবিকে। ৩ মাস আগে প্রতিবেশীরা ঐ বৃদ্ধার থাকার জন্য ছোট একটি ঘর তুলে দেন। ছেলে মাসে মাত্র আড়াই হাজার টাকা ভরণ-পোষণ দেবে এমন সালিশিও করে দেন মাতব্বররা। দুই মাস টাকা দিলেও চলতি মাসের ভরণ-পোষণের টাকা চাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়ালো সার্থকবান বিবির। মঙ্গলবার দিনভর তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করে ছেলে ও পুত্রবধূ। রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১টার দিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
গুরুতর আহত সার্থকবান বিবি বলেন, আমার একটাই ছেলে। ওর নামে আমার বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া সব সম্পত্তি লিখে দিছি। এরপরও আমাকে বিভিন্ন সময় ছেলে, ছেলের বউ আর নাতিরা মারধর করে। ঠিকমতো খেতেও দেয় না। কালকেও আমাকে মেরে ফেলে রেখে গেছে।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ঘটনার পর ঘরে তালা দিয়ে পালিয়েছে অভিযুক্ত দেলোয়ার ও স্ত্রী। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।