বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: বেতন বৃদ্ধি ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের অপসারণসহ ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন গাজীপুরের শ্রীপুরে আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা। এছাড়া, গাজীপুর মহানগর, সদর, কালিয়াকৈর, রাজেন্দ্রপুরসহ আরও কয়েকটি এলাকাতেও বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করছেন একাধিক কারখানার শ্রমিকরা।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় উপজেলার ধনুয়া এলাকায় অবস্থিত আরএকে সিরামিক কারখানা থেকে মিছিল নিয়ে বের হন শ্রমিকরা। সকাল ৭টায় তারা কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা কথা বললে বেলা ১১টায় অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, কোনো বিষয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা তাদের মূল্যায়ন করে না। ভালো কোনো প্রতিক্রিয়াও তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। তারা দায়িত্বে আসার পর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন শ্রমিকরা। এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী শ্রমিক ও বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয় না। বিষয়গুলো নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে একাধিকবার কোম্পানি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো সমাধান দেননি। তাই এই ভারতীয় কর্মকর্তাদের অপসারণ এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে মানসম্মত বেতন ও ইনক্রিমেন্ট নিশ্চিতসহ ১১টি দাবি জানানো হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।
এদিকে, শ্রমিক নিয়োগে নারী-পুরুষের বৈষম্য রোধে গাজীপুর মহানগরের বাসন এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আরেকটি শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি, চাকরিতে পুরুষদের চাইতে নারী শ্রমিকদের নিয়োগে অগ্রাধিকার বেশি দেওয়া হয়। তারা এ ধরনের বৈষম্য চান না।
একইদিন সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটেডের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে চাকরিপ্রত্যাশী শ্রমিকরা।
রাজন্দ্রেপুর এলাকায় আন্দোলন করছে ইউনি হেলথ্ ফার্মাসিউটিক্যালস নামের একটি ওষুধ উৎপানদকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। বেতন বৈষম্যসহ দূর করাসহ কয়েকটি দাবি তুলেছেন তারা।
এছাড়া কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় ট্রান্সকম বেভারেজে ২০ দফা দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার থেকেই আন্দোলন করে আসছিল শ্রমিকরা। বুধবার সকালেও তারা ভারতীয় কর্মকর্তাদের অপসারণ, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে নিয়োগকৃত শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণ, ৫ তারিখের মধ্যে বেতন প্রদান, নারী শ্রমিকদের নৈশকালীন ডিউটি বাতিলসহ ২০ দফা দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর শ্রীপুর ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আজিজুল হক জানান, বুধবার সকাল থেকেই কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে।