ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : বিএনপি’র মহা সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভোটের অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, নিজের অধিকার আদায়ে সবাইকে ৫ আগস্টের মতো আবারও রাজপথে নেমে আসতে হবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বলা হচ্ছে, বিএনপি তো আন্দোলন করে শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে পারেনি। কিন্তু প্রকৃত সত্য এটাই যে বিএনপি ১৫ বছর আন্দোলন করেছে বলেই শেখ হাসিনা পতনের আন্দোলন সফল হয়েছে ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি ১৫ বছর লড়াই করেছে বলেই ছাত্র-জনতা হাসিনাকে বিদায় দিতে পেরেছে। ছাত্র-জনতা সাহস করে দাঁড়িয়েছিল বলে সাধুবাদ জানাই। তবে এর পেছনে ছিল বিএনপির ১৫ বছরের ত্যাগ আত্মবলিদান কারাভোগ দুর্বিষহ নির্যাতন সহ্য করেও হার না মানা সংগ্রাম। তিনি তারেক জিয়াকে দেশত্যাগে বাধ্য করা, খালেদা জিয়াকে কারাভ্যন্তরে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং নিজের ১শ ২২টি মামলা এবং ১১ বার কারারুদ্ধ হবার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, এখনো স্বৈরাচার আমলের মামলা নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের কোর্ট-কাচারিতে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। বিএনপির দীর্ঘ ১৫ বছরের রাজপথের আন্দোলন ও ত্যাগের ইতিহাসটি এমনই রক্ত অক্ষরে লেখা।
তিনি সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সদর থানা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশে কোনো সাম্প্রদায়িকতা নেই, বরং ভারতে সাম্প্রদায়িকতা আছে যা পুরো বিশ্ব জানে। এ অবস্থায় সকল ষড়যন্ত্র উগ্রবাদ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা ও প্রতিহত করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ভোট চাইতে আসি নাই। দেশ, মাটি, মানুষের জন্য প্রয়োজন হলে আবার ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে,সে কথা বলতে এসেছি ।’
দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এ সময় তিনি দায়িত্বশীলদের আরও সচেতন ও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অনেকে যারা দ্বায়িত্বশীল জায়গায় আছেন, তাদের উল্টাপাল্টা কথা বলা বন্ধ করতে হবে। দায়িত্বশীল জায়গায় বসে ভুল কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। দেশের মানুষ অনেক নির্যাতন সহ্য করেছে এবার শান্তি চায়। আমরা নির্বাচন চাই, যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চাই, ঘুষ-দুর্নীতি-দখলবাজি বন্ধ করতে চাই।
দলের সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে “ভিশন বাংলাদেশ টুয়েন্টি-থার্টি” দিয়েছিলেন। আর আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব ২০২২ সালে ৩১ দফা দিয়েছেন। সেই ৩১ দফা কী, সংস্কার প্রস্তাব। এই সংস্কারটা আমরা চাই। এই সংস্কার বলতে বুঝি, আমরা যেন ভোটটা দিতে পারি, আমাদের দেশে যেন শান্তি থাকে, জিনিসপত্রের দাম যেন কম হয়, মারামারি যেন না হয়, চুরি–ডাকাতি যেন না হয়। আর কথায় কথায় ঘুষ যেন দিতে না হয়। এ রকম একটা বাংলাদেশ আমরা চাইছি।
তিনি সবাই মিলে সুন্দর শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানান। শহীদ জিয়ার স্বপ্ন অনুযায়ী একটি গণতান্ত্রিক দেশই আমাদের স্বপ্ন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সদর থানা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে জেলা বিএনপি’র সহসভাপতি ওবায়দল্লাহ মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন ও যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী, সহ-সভাপতি নুর করিম, জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম শরীফ বক্তব্য দেন।