বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মাদ্রাসায় পড়েও পছন্দের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে খুশি মাহবুবা মেহেনাজ। নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার কড়িহাটি ছালেমিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ২০২১ সালে জিপিএ ফাইভ পেয়ে দাখিল পাস করেন তিনি। পরে স্থানীয় চাটখিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২৩ সালে জিপিএ ফাইভসহ উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন।
সদ্য প্রকাশিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে মেহেনাজ জাতীয় মেধায় ১০৩৪তম স্থান লাভ করেন। সে তার পছন্দের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন।
মেহেনাজ কড়িহাটি ছালেমিয়া ফাজিল মাদ্রাসার গণিতের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসানের বড় মেয়ে। তার মা মারজাহান বেগম একজন গৃহিণী।
মেহেনাজ বলেন, মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছেটা দশম শ্রেণি থেকেই। কলেজে ওঠার পর ইচ্ছাটা আরও প্রবল হয়েছে। কলেজে পড়ার সময় থেকেই একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি মেডিকেলে ভর্তির কিছু প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলাম। তখন থেকেই আমি সাদা এপ্রোনের সঙ্গে স্টেথোস্কোপ পরা নিজেকে কল্পনা করতাম। এভাবে নিজেকে নিজেই অনুপ্রেরণা দিতাম।
চাটখিল মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, গতবারের মতো এবারেও আমাদের একজন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন। সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য মেহেনাজকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের কলেজ থেকে পাস করা অনেকেই এখন ডাক্তারি পেশায় সুনামের সঙ্গে নিযুক্ত আছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে বিষয়টা আমার জন্য গর্বের।
মেহেনাজ বলেন, সারাদিন কলেজ করে এসে আবার টিউশন করানোর পর খাওয়ার সময় থাকত না। মা তখন নিজ হাতে ভাতের প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে খাইয়ে দিতেন। আমার জীবনের কঠিন সময়গুলোতে আমার মা আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আমায় এগিয়ে দিয়েছেন। আমি যখনই হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতাম, আমার মা আমায় আবার উঠে দাঁড় করিয়েছেন। তবে মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফলের পর মায়ের মুখের হাসিটা দেখে অতীতের সব কষ্টগুলা ভুলে গেছি। বাবাও শেষ দিকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন। মাদ্রাসা থেকে কলেজে আসার পর কলেজের স্যারেরা অনেক বেশি সাহস দিয়েছেন। স্যারদের কথা শুনলে নিজের ভেতর একটা আলাদা কনফিডেন্স পেতাম।
এমবিবিএস পাস করে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার পাশাপাশি বিসিএস দিয়ে চিকিৎসা পেশায় নিজেকে ভালোভাবে উৎসর্গ করার ইচ্ছে আছে বলেও জানিয়েছেন মেহনাজ।
এ বছর সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০৪টি মেডিকেল কলেজের ১১ হাজার ৬৭৫টি আসনের জন্য ১ লাখ ৪ হাজার ৩৭৪ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেন। ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৫ হাজার ৩৮০টি এবং বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ৬৭টি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৬ হাজার ২৯৫টি।