সীমান্ত সিরাজ : রক্তিম জুলাই ২৪- এ ঐতিহাসিক বিজয়ের পর তরুণদের কল্পনায় একটি নতুন বাংলাদেশ” র্শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র এবং ইউনিটি ফর হিউম্যান প্রোসপেক্ট এর উদ্যোগে সোমবার ঢাকার রায়ের বাজার হাই স্কুল অডিটোরিয়ামে এ সংলাপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিক সীমান্ত সিরাজ এর সঞ্চালনায় ও মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র’র মহাসচিব মাহবুল হক এর সভাপতিত্বে উক্ত সংলাপে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. মু শফিকুল ইসলাম মাসুদ, আমার বাংলাদেশ পার্টির সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সেক্রেটারী রাশেদ খান,জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব,মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র ‘র পরিচালক(স্বাস্থ্য) মো: জিযানুর কবির,রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়’র প্রধান শিক্ষক মেহেরুন নেছা,হাজারীবাগ থানা বিএনপি”র সাবেক সাধারন সম্পাদক মো: আব্দুল আজিজ,ইউনিটি ফর হিউম্যান প্রোসপেক্ট এর নির্বাহী পরিচালক মো: সোহেল রানা প্রমুখ।এছাড়াও বাংলাদেশের তৃণমূল জনগোষ্ঠির প্রতিনিধি, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে তরুনদের পক্ষ থেকে বলা হয় জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক বিজয়ের সুফল সবার জন্য। এক্ষেত্রে আপামর জনতার ভুমিকা ছিল অগ্রগামী ।আমরা লক্ষ্য করেছি দীর্ঘ ১৬ বছরে হাজারো মানুষকে খুন,গুম ও আয়নাঘরের মত ভয়ংকর নির্যাতনের সেল-এ রেখে নিষ্ঠুর ও অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। একই সাথে রক্তাক্ত জুলাইয়ে দুই হাজারের অধিক নিহত ও ত্রিশ হাজারের অধিক আহত হয়েছে, যার অধিকাংশই নিম্ন আয়ের তরুণ জনগোষ্ঠি। যখনি কোন অন্যায় অবিচারের সীমা অতিক্রম করেছে, তখনি আপামর জনগণ প্রতিবাদী হয়ে রাজপথে নেমেছে। ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে বাংলাদেশের তরুণরা দেখতে চায়, যেখানে কোন ধরনের বৈষম্য থাকবে না, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ থাকবে, কোন ধরনের বল প্রয়োগ থাকবে না এবং যেখানে সকল নাগরিক ভয়ভীতি ও বৈষম্য ছাড়াই মানবাধিকারের সুরক্ষা পাবে। এই জুলাই বিপ্লবের সার্বজনীন শ্লোগান ছিল “We Want Justice” যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ও সার্বভৈৗমত্বের মূল চেতনার সাথে সংগতিপূর্ণ।
ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন- বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই, আমরা এদেশের বাসিন্দা থেকে নাগরিক হতে পারি নাই, যে রাষ্ট্র থেকে আমাদের ঘরে খাবার পৗঁছায় না কিন্ত বাহিবের বের হলে লাঠি খেতে হয় এমন বাংলাদেশ আমরা চাইনা।
ড. মু শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন- তরুণরা বলেছে লাখো শহীদের রক্তে কেনা এই দেশটা কারো বাপের না। সামনে অনেকেই জুলাই বিপ্লবের উপরে পিএইচডি ডিগ্রী নেবে। শহীদদের এখনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, এখনো কোন রাজনৈতিক দল উল্লেখযোগ্যভাবে শহীদদের পাশে দাড়াঁয়নি। বাংলাদেশ একটি কল্যানকর রাষ্ট্র হিসাবে তৈরি করাই হবে জুলাই বিপ্লবের স্বার্থকতা।
জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠির ভোটার আইডি কার্ড দেওয়া হয়নি, তাদের কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই এবং অনেকেই এখনো ভোটার হতে পারে নাই, কেউ কেউ ভোটার হলেও ভোট দিতে পারে নাই। তাদের ভোটাধিকার ফেরত দেওয়া হোক।
গনঅধিকার পরিষদ নেতা রাশেদ খান বলেন- আওয়ামী পরিবারের কাউকে এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নাই, এমপি থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদেরও গ্রেফতার করা হয়নাই এবং দল হিসাবে আওয়ামীলীগ কে বাতিল করতে হবে।
বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন আওয়ামীলীগ ১৫ বছর জনগণের ভোটে ক্ষমতায় ছিল না ।বাংলাদেশের রাজনীতি দুইভাগে বিভক্ত তাই ভারতের আধিপত্যবাদ কে মোকাবেলা করে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে সামনে রেখে আমাদের কঠিন ঐক্য গড়তে হবে, হাসিনার বিচার করতে হবে।
বক্তারা রক্তাক্ত জুলাইয়ে আহতদের সর্ব্বোচ্চ ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা, ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আন্তর্জাতিক মানের পুর্নবাসনের দাবী জানান।গত ১৬ বছরে যারা খুন,গুম ও আয়না ঘরের মত ভয়ংকর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার আহবান করেন। সেইসাথে অবাধ ও সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে সুনির্দ্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষনা করার দাবী করেন তারা।