বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় মামি শাশুড়ির সঙ্গে স্বামীর পরকীয়ার কথা জেনে যাওয়ায় জীবন দিতে হলো স্বর্ণা আক্তার নামের এক গৃহবধূর। সে বেজগাঁও ইউনিয়নের শাহজাহান ঢালীর মেয়ে স্বর্ণা আক্তার।
জানা যায়, ২০১৭ সালে একই ইউনিয়নের কুড়িগাঁও গ্রামের নুর ইসলাম বেপারীর ছেলে মো. রনি হাসানের সঙ্গে স্বর্ণার বিয়ে হয়। বিয়ের বেশ কিছু দিন পার হলেও স্বর্ণার সন্তান হচ্ছিলো না। এতে তার ওপর প্রায়ই চাপ সৃষ্টি করতো হাসানের পরিবার। এমনকি স্বর্ণাকে তালাক দেওয়ার ভয় দেখাতো হাসান। তবে চিকিৎসা নিয়ে স্বর্ণার যমজ দুটি সন্তান হয়। তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তাদের বয়স এখন দেড় বছর।
স্থানীয়রা জানান, স্বর্ণার স্বামী রনি হাসানের আর্থিক অবস্থা স্বর্ণার বাবার পরিবার থেকে বেশ ভালো। এজন্য হাসানের পরিবার স্বর্ণাকে প্রায়ই হেয় করতো। স্বর্ণার ছোটবোন রুপা জানান, স্বর্ণা কিছুদিন আগে রনি হাসানের ছোটভাই (স্বর্ণার দেবর) রবিনের সঙ্গে তার মামি শাশুড়ির আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এ ঘটনা সে তার স্বামীকে জানান।
এতে রনি হাসান নিজের ভাইকে কিছু না বলে স্বর্ণার ওপর নানান নির্যাতন শুরু করেন। এরপর স্বর্ণা জানতে পারেন রনি হাসানের সঙ্গেও তার মামি শাশুড়ির অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ঈদের পর সন্তান দুটিকে নিয়ে স্বর্ণা বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। এতে রনি হাসানের পরিবার ভাবে মামির সঙ্গে তার স্বামীর পরকীয়ার কথা জানতে পেরে স্বর্ণা তার বাবার চলে গেছে। হয়তো আর আসবে না। তাই নানা ছলচাতুরী করে গত শনিবার রনি হাসানের পরিবার তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে।
স্বর্ণার পরিবারের সদস্যরা জানান, স্বর্ণার বাবা শাহজাহান ঢালীকে বুধবার সকালে ফোনের মাধ্যমে স্বর্ণার সঙ্গে রনির ঝগড়ার কথা জানিয়ে দ্রুত যেতে বলা হয়। এ কথা জেনে শাহাজাহান ঢালী দ্রুত স্বর্ণাদের কামরাঙ্গীর চরের বাসায় যান। সেখানে যেয়ে তিনি দেখতে পান স্বর্ণার স্বামী রনি, তার মা, বোন ও বোনের স্বামী উজ্জ্বল বাসার ড্রইং রুমে বসে গল্প করছেন। এ সময় স্বর্ণার রুম ভেতর দিক দিয়ে বন্ধ ছিল। স্বর্ণার বাবা দরজা ধাক্কা দিতেই মেয়ের মরদেহ দেখতে পান।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় শুধু রনি হাসানকে আসামি করা হয়। এ ঘটনায় রনি হাসান থানায় আত্মসমর্পণ করেন।
এ বিষয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা আত্মহত্যার প্ররোচনার অপরাধে একটি মামলা রুজু করি। প্রাথমিক পর্যায়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী রনি হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা।