বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : রাজধানীর কদমতলীতে বাবা, মা ও বোনকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত মেহজাবিন মুনকে দিয়ে তার মা অনৈতিক কাজ করিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে বেশ কয়েকবার অন্য পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করা হয় মেহজাবিনকে। ওই ঘটনার পর থেকেই মায়ের প্রতি ক্ষোভের জন্ম হয় মেয়ে মেহজাবিন মুনের। পরবর্তীতে বাবা মাসুদ রানাকে বিষয়টি অবহিত করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত ক্ষোভের জন্ম থেকেই এ ধরনের হত্যার পরিকল্পনা করে মেহজাবিন। এমন তথ্যই পেয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
মামলার সংশ্লিষ্টরা বলেন, কদমতলীর বাসায় মা, বাবা ও বোনসহ তিনজনকে মেহজাবিন নিজেই হত্যা করেছে। প্রাথমিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে সে। অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোর ঘটনাটি জেনে মেহজাবিনকে বিয়ে করে তার স্বামী শফিক—এমন তথ্য পুলিশকে জানিয়েছে সে।
রবিবার (২০ জুন) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কদমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক জাকির হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত মেহজাবিনকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করি আদালতের কাছে। আদালত ৪ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। মেহজাবিন যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এর পেছনে আর কোনও ক্ষোভ রয়েছে কীনা এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। মামলায় আরেক আসামি মেহজাবিনের স্বামী চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পরবর্তীতে তার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ পরিদর্শক জাকির হোসেন জানান, বোন জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামী শফিকের অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে মেহজাবিনের কোনও মাথাব্যথা নেই। এ ধরনের ঘটনা সে বিশ্বাস করে না। মায়ের আচরণের কারণেই ক্ষোভ থেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে ৩ জনকে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৮ জুন) দিবাগত রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে শ্বাসরোধ করে বাবা মাসুদ রানা, মা মৌসুমী ও বোন জান্নাতুলকে হত্যা করে মেহজাবিন। এরপর শনিবার (১৯ জুন) সকাল ৮টায় মেহজাবিন ৯৯৯-এ ফোন করে জানায়, সে তার বাবা, মা ও বোনকে খুন করেছে। তাদের যেন দ্রুত উদ্ধার করা হয়। আর দেরি হলে তার স্বামী এবং সন্তানকেও খুন করে ফেলবে সে। পরবর্তীতে কদমতলি থানাকে এ বিষয়টি অবহিত করা হলে, পুলিশ গিয়ে কদমতলীর ওই বাসা থেকে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় আহত অবস্থায় আরও দুজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেহজাবিন তার বাবা মা ও বোনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তবে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে ঘটে যাওয়া এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও কোনও কারণ লুকিয়ে আছে কিনা এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় আর কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।