1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সফররত ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ফখরুলের বৈঠক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হিজবুল্লাহর মিডিয়া প্রধান বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত রোডম্যাপ: প্রধান উপদেষ্টা বীরগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মনজুরুল ইসলামের মতবিনিময় বিসিবি চলছে জোড়াতালি দিয়ে : ক্রীড়া উপদেষ্টা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত চাওয়া হবে : ড. ইউনূস পতিত সরকার রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল তলানিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ দেখাতে মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে পাবর্ত্যবাসীকে মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে, পাজেপ-এ নবনিযুক্তদের পাবর্ত্য উপদেষ্টা

মেডিকেলে চান্স পেলেও ভর্তি অনিশ্চিত সবজি বিক্রেতার ছেলের

রিপোর্টার
  • আপডেট : শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৩২ বার দেখা হয়েছে

বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক :ক্ষুদ্র শাকসবজি বিক্রেতা হতদরিদ্র আব্দুর রাজ্জাক সর্দারের ছেলে সবুজ আহমেদ কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন। প্রচণ্ড ইচ্ছা শক্তি, অদম্য মেধা ও পরিশ্রমের ফলে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে জন্ম নিয়েও দমে যাননি তিনি। পড়ালেখার মাধ্যমে মেধার স্ফূরণ ঘটিয়েছেন সবুজ।

তবে মেডিকেলে চান্স পেয়েও তার মুখের হাসি মলিন। পড়াশোনার খরচ কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। এবার তাকে ভর্তি হতে হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তার মেডিকেলে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সবুজ আহমেদ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামের নতুন চর স্কুলপাড়ার আব্দুর রাজ্জাক সর্দারের ছেলে। তারা এক বোন ও ছয় ভাই। ভাইবোনের মধ্যে সবুজ পঞ্চম। ছোট থেকেই তিনি লেখাপড়ায় খুব আগ্রহী ছিলেন। সব সময় ক্লাসে প্রথম হয়েছেন।

কৃতিত্বের সঙ্গে সব পথ পাড়ি দিয়ে পড়াশোনায় সাফল্য এনেছেন তিনি। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসএসসি ও এইচএসসিতেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ-৫। এলাকাবাসী, শিক্ষক ও পরিবারের সবার স্বপ্ন ছিল সবুজ একজন ভালো চিকিৎসক হবেন।

সবার স্বপ্নকে প্রাধান্য দিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন সবুজ। নিজের প্রচেষ্টা, মা-বাবার ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় মেডিকেল কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সফলতা অর্জন করেছেন তিনি।

রাজশাহী সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিলেন সবুজ। লিখিত পরীক্ষায় ৭৪ নম্বর পেয়েছেন। সবমিলিয়ে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ২৭৪। তার এই সাফল্যের সংবাদে আনন্দ উৎসবের আমেজ বইছে দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। বন্ধু-বান্ধব ও এলাকাবাসীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন সবুজ। বাড়িতে ছুটে আসছেন গর্বিত শিক্ষক, আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তার সাফল্যে খুশি পরিবারের সবাই।

পড়াশোনার প্রতি অদম্য আগ্রহের কারণেই শিক্ষার এ দুর্লভ সুযোগ পেয়েছেন সবুজ। তাদের পরিবারে সদস্য সংখ্যা আটজন। হাটে সবজি বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাকের সামান্য আয়ের ওপর নির্ভর করেই চলে অভাবের সংসার। এ অবস্থায় ছেলেকে ভর্তি করার টাকা তাদের নেই। তাই তিনি বিত্তবান মানুষের কাছে সাহায্য-সহযোগিতা চেয়েছেন।

ছেলের ভর্তি হওয়ার অনিশ্চয়তায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বাবা আব্দুর রাজ্জাক সর্দার বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার ছয়টা ছেলে ও একটা মেয়ে। খুব দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিয়ে আমার ছেলে বড় হয়েছে। কখনো খাবার জুটেছে, কখনো জোটেনি। আমি শাকসবজি, ডাটা এইসবের ব্যবসা করি।

অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যেও সন্তানের পড়ালেখায় উৎসাহ দিয়েছি, বহু কষ্ট করে তাকে পড়িয়েছি। নদী ভাঙনে আমাদের সব জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। শুধু বাড়ির জমিটা আছে।

তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। কিন্তু তাকে ভর্তি করার মত টাকা-পয়সা আমাদের নেই। চিন্তা করে কোনো কূলকিনারা পাচ্ছিনা, কিভাবে ভর্তি করাবো? কিভাবে বই কিনে দিবো? কিভাবে খরচ চালাবো।

সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি। আপনারা সবাই আমার ছেলের জন্য সাহায্য করুন। আল্লাহ যদি রহমত করে তাহলে আমার ছেলে দেশের মানুষের সেবা করবে। আপনারা যদি সাহায্য করেন তাহলে ছেলেটাকে ডাক্তারি পড়াতে পারবো। না হলে আমার কোনো ক্ষমতা নাই পড়ানোর।

তিনি আরও বলেন, আমি খুব কষ্ট করে ছেলেদের বড় করেছি। বড় ছেলেটা এমএ পাস, মেজাজটা বিএ পাস। নোয়া ছেলেটা আইএ পাস। এই ছেলেটা ডাক্তারি লাইনে গিছে। সবার ছোট ছেলেটা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।

প্রধানমন্ত্রী যদি একটু খেয়াল করে আমার ছেলের দিকে তাহলে আমার ছেলে ডাক্তার হতে পারবে। আল্লাহর রহমতে এবং দশের দোয়ায় ছেলে এ পর্যন্ত পৌঁছেছে। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া, আল্লাহ আমাদের দিকে একটু তাকাও।

সবুজের চাচি রেহেনা খাতুন বলেন, তারা খুব গরিব মানুষ। খেয়ে না খেয়ে, অনেক কষ্ট করে করে বড় হয়েছে। আল্লাহ যেন গরিব মানুষের ছেলেটার দিকে তাকাই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি আর আল্লাহর কাছে দোয়া করি। ছেলেটা অনেক বড় ডাক্তার হোক।

সবসময় লেখাপড়া করতো। এবার সে ডাক্তার হওয়ার চান্স পেয়েছে। চারিদিকে খুব সুনাম হচ্ছে। কিন্তু তারা গরীব মানুষ, লেখাপড়ার খরচ চালাবে কিভাবে? সরকার তাদের পাশে দাঁড়াক, সাহায্য করুক।

মা মনজুরা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে খুব মেধাবী আর আমরা খুব গরিব। আমার স্বামী শাকসবজির ব্যবসা করে। ছেলেকে পড়াতে গিয়ে অনেক সময় বাজার করতে পারিনি। ছোটবেলা থেকে আমাদের স্বপ্ন ছিল ছেলেটাকে ডাক্তার করবো। ছেলে ডাক্তারি চান্স পেয়েছে।

কিন্তু টাকার অভাবে তার পড়ালেখা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে আমাদের। শশুরের ৮ বিঘা জমি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। তাই সন্তানের পড়া চালাতে গিয়ে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাই। ছেলের ভর্তির টেনশনে ঘুম হয় না।

আমাদের জীবন খুব কষ্ট পার হচ্ছে। ঘর ছাড়া আমাদের কিছু নাই। এখন ছেলের লেখাপড়া চালানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই সরকার ও দেশের মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।’

স্থানীয়রা বলেন, সবুজ নামের ছেলেটি ছোট থেকেই খুব মেধাবী। সে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। তার বাবা একজন সবজি ব্যবসায়ী। নিজ গ্রামে ও আশে পাশের গ্রামের হাটে শাকসবজি বিক্রি করে। তাদের অভাব-অনটনের সংসার। মেডিকেলে ভর্তি করানো ও পড়াশোনা চালানো তার বাবার পক্ষে সম্ভব না।

এ নিয়ে ওই পরিবারের চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটছে। সরকার ও দেশের বিত্তবান মানুষদের কাছে আমরাও সাহায্যের আবেদন করছি। তাছাড়া তাদের কোন সামর্থ্য নেই পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়ার। এই গ্রাম ও আশেপাশের এলাকায় কোন ডাক্তার নেই, আমাদের জানামতে কেউ চান্সও পায়নি। আমরা চাই সাহায্যের জন্য সবাই এগিয়ে আসুক। পড়ালেখা শেষ করে সে ভালো চিকিৎসক হোক।

বৈরাগীর চর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, সবুজ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। কিন্তু তার পরিবার খুব গরীব। ২০১৪ সালে সবুজ আমাদের স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। সে গরিব হওয়ায় স্কুলের বেতন সম্পূর্ণ ফ্রি করে দিয়েছিলাম। একই সঙ্গে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলেছিলাম। সবাই তাকে সাহায্য করেছে। কেউ কখনো প্রাইভেট পড়ানোর টাকা নিতো না। সৌজন্যে সংখ্যার বই যেগুলো পেতাম সেগুলো সবুজকে দিয়ে দিতাম।

ছোট থেকেই সবুজ খুব বিনয়ী, নম্র ও ভদ্র। তাকে নিয়ে আমাদের অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, সবুজ মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় অস্বচ্ছল পরিবারের পক্ষে তাকে পড়াশোনা করানো সম্ভব না। এজন্য আমরাও সবার কাছে সহযোগিতা আবেদন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা তাকে সহযোগিতার জন্য চেষ্টা করবো।

বৈরাগীর চর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জহুরুল ইসলাম মধু বলেন, সবুজ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। সে গরিব-দুখী পরিবারের সন্তান। নানান সমস্যায় জর্জরিত কষ্টের মধ্যেও পড়াশোনা ছাড়া কিছু বোঝে না। আমার শিক্ষকতা জীবনে তার মতো পড়ুয়া ছাত্র দেখিনি কখনো। কোন ক্লাসে প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়নি সে। সে টাকার অভাবে স্কুল ড্রেস বানাতে পারতো না। আমরা তাকে ছাড় দিতাম। তাছাড়া ফ্রি প্রাইভেট পড়ানো হতো।

প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনায় আমরা তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। তাকে নিয়ে আমাদের ও এলাকার মানুষের একটা স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে, চিকিৎসক হয়ে সে এলাকার মুখ উজ্জ্বল করবে, সবুজ আমাদের গর্ব ও অহংকার। আমাদের স্কুলের বয়স প্রায় ৬০ বছর। এ সময়ে কেউ মেডিকেলে চান্স পায়নি। আমাদের স্কুলের সবুজ একমাত্র ছাত্র যে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। তার শিক্ষা জীবনে প্রত্যেকবার সে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে।

এলাকাবাসী এবং স্কুলের শিক্ষক সহ সবার একটা স্বপ্ন ছিল যে সবুজ চিকিৎসক হবে। তার পরিবারের পক্ষে লেখাপড়া খরচ বহন করা অসম্ভব ব্যাপার। তার ভর্তি হওয়াটা এখন অনিশ্চয়তায়।

স্কুলের বায়োলজি বিভাগের শিক্ষক বলেন, সবুজ শিক্ষকদের কথার বাইরে কখনো যেত না। শিক্ষকরা যেভাবে নির্দেশ দিতেন সে শতভাগ পালন করত। তার হাতের লেখা খুবই সুন্দর। সবদিক দিয়ে পড়াশোনায় সে ভালো। কষ্টের মধ্য দিয়ে না খেয়ে দিন গেছে তার।

সবুজ আহমেদ বলেন, আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া, আলহামদুলিল্লাহ, যিনি আমাকে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছেন। আল্লাহর পর আমি আমার মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মা-বাবা সহ ভাইদের অবদানের কথা বলে শেষ করার মতো না।

তাছাড়া চাচা-চাচি, শিক্ষকদের অবদান অনস্বীকার্য। পরিবার, প্রতিবেশী ও শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতায় আজ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছি। কিন্তু ভর্তি হওয়ার টাকা আমার পরিবারের নেই। এজন্য সরকার ও দেশের বিত্তবান মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি। আমার ভর্তি এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে।

তিনি বলেন, আমি যখন প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হই। তখন থেকেই এলাকাবাসী, আমার মা-বাবা, পাড়া-প্রতিবেশী ও শিক্ষকদের স্বপ্ন ছিল আমি যেনো বড় হয়ে চিকিৎসা হতে পারি। এ পর্যন্ত আমাদের এলাকায় কোন ডাক্তার নেই। তারা আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো, আমি চেষ্টা করেছি এবং আল্লার রহমতে মেডিকেলে চান্স পেয়েছি।

সবুজ আরো বলেন, জীবনে অনেক কষ্টই সহ্য করতে হয়েছে। অর্থের অভাবে না খেয়ে থাকতে হয়েছে। স্কুল ড্রেস, বই, খাতা কিনতে পারেনি। তাছাড়া এইচএসসি লেভেলে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তির পর সেখানে মেসে থেকে পড়াশোনা করতাম। বিত্তবান পরিবারের ছাত্ররা স্বাধীনভাবে ইচ্ছা মত খরচ করতো।

কিন্তু আমি অর্থের অভাবে না খেয়ে থেকেছি। সারাদিন একটি পাউরুটি খেয়ে পার করেছি। গরিব শাকসবজি ব্যবসায়ী বাবা ঠিকমতো টাকা দিতে পারতেন না। অর্থের অভাবে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। একটি টাকা প্রয়োজনে খরচ করতে গেলেও বারবার ভাবতে হয়েছে, টাকার অভাবে কাদতে হয়েছে অনেক।

আব্বা শাকসবজি বিক্রি করে আমাদের ৬ ভাই ও এক বোনকে বড় করেছেন। বাবা কষ্ট বুঝতে দেননি কোনোদিন। সমস্যার মধ্যেও আব্বা শুধু বলতো, ঠিকমতো পড়াশোনা কর, জীবনে অনেক বড় হতে হবে। আব্বা আমাকে কোনদিন হাটে নিয়ে যাননি, আমাকে বলতো তোর কাজ শুধু পড়াশোনা করা।

তিনি বলেন, স্কুল জীবনে আমি প্রথম ছাড়া সেকেন্ড হয়নি কখনো। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি। ছোটবেলায় যখন আমাকে নিয়ে সবাই স্বপ্ন দেখতো তখন খুব ভয় লাগতো, কিন্তু নানা সংকট আর অভাব-অনটনের মধ্যেই আমি চেষ্টা করেছি তাদের স্বপ্নপূরণ করার।

মেডিকেলে চান্স পাওয়ার জন্য অনেক আগে থেকে আমি প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম। কারণ হঠাৎ করে তিনমাস বা চারমাস মাস পড়ালেখা করে ভর্তি যুদ্ধে টিকে থাকা কঠিন। যারা আমার মতো মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন দেখেন। তাদের দীর্ঘ প্রস্তুতি নিতে হবে, প্রচুর পড়ালেখা করতে হবে।

সবুজ বলেন, চিকিৎসক পেশাটা অনেক মহৎ একটা পেশা। আমি অসহায়-দরিদ্র এবং এলাকার মানুষদের ফ্রিতে চিকিৎসা দিবো। এলাকাবাসীর বিপদে সবসময় পাশে থাকবো। আমাদের এলাকায় কোনো চিকিৎসক নেই। এজন্য মানুষের অনেক কষ্ট হয়।

তাদের কষ্ট দূর করার জন্য সবাই স্বপ্ন দেখতো আমি যেনো ডাক্তার হই। তাদের দোয়া ও আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি, ইনশাআল্লাহ ভালো চিকিৎসক হতে পারবো। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নের কথা শুনে অনেকে বলতো যে, এই দরিদ্র পরিবারের ছেলে কিভাবে চিকিৎসক হবে, কিভাবে পড়াশোনা চালাবে। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে আমি সফল হয়েছি।

দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, সবুজ নামের যে ছেলেটি কুষ্টিয়া মেডিকেলে চান্স পেয়েছে সে খুবই মেধাবী। তবে তার পরিবার দরিদ্র। সবুজের বাবা শাকসবজির ব্যবসা করে। কোনোরকমে তাদের সংসার চলে।

আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় তার বাবা ছেলেকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছেন। মেডিকেলে পড়াশোনার খরচ তার বাবার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। তাই আমি মনে করি দরিদ্র মেধাবী ছেলেটির পড়াশোনার দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল জব্বার বলেন, অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল বা অভাবের কথা তারা যদি আমাদের জানান তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে। টাকার অভাবে কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হবে না।

অসচ্ছল ও মেধাবী ওই ছাত্রের পড়ালেখার দায়িত্ব সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখব।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com