বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: নিজের ৪ বছরের মেয়েকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ডা. ইব্রাহিম রহমান রুমি ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য। তিনি ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মসিউর রহমানের বড় ছেলে।
এ ঘটনায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় গত ১ ডিসেম্বর মামলা করেছেন মেয়ের মা আফিয়া বিনতে শাহ্। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার না করায় আগাম জামিন নিয়ে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষে বাদীর মা মাগফুরা আহমেদ বলেন, আমার মেয়ে আফিয়া বিনতে শাহে্র সঙ্গে ইব্রাহিম রহমান বিয়ে হয় ২০১৬ সালে। এরপর আমার মেয়ের গর্ভে একটি মেয়ে সন্তান আসে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে মেয়েকে পাশবিক নির্যাতন করতো সাবেক সাংসদ পুত্র। অনেকবার পারিবারিকভাবে সমাধান করার চেষ্টা করা হলেও তাদের সংসার টিকেনি। ক্ষমতা ও টাকার গরমে আমরা থানা-পুলিশও করতে পারিনি। পরে পারস্পরিক সিদ্ধান্তেই চার বছর পর তারা আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু বিপত্তি বেধেছে একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে।
মাগফুরা আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, একজন পিতা কখনো চার বছরের শিশু কন্যার সঙ্গে এমন পাশবিক যৌন নির্যাতন কিভাবে করে তা আমার মাথায় আসে না। কিন্তু আফসোস এখন এই ব্যক্তি জামিন পেয়ে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও ধর্ষণের অপরাধে মামলা হয়েছে। এরপরও ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটির সদস্যের পদে থেকে ইব্রাহিম রহমান রুমি ক্ষমতার জোরে আগাম জামিন নিয়েছেন। আমি বুঝতে পারছি না কোথায় বিচার চাইবো?
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিবাহ বিচ্ছেদের পর আফিয়া বিনতে শাহ্ মেয়েকে নিয়ে আলাদা বসবাস শুরু করেন। এরপর চলতি বছরের ২৩ মার্চ মেয়ে সুফিয়া রহমানকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে জোর করে মেয়ের বাবা নিয়ে যায়। এরপর প্রায় ৬ মাস ইব্রাহিম রহমান রুমি মেয়েকে নিজের কাছে রাখে। এরপর আদালতের নির্দেশে ২২ অক্টোবরে সফিয়াকে হেফাজতে নেয় আফিয়া বিনতে শাহ্। এরপর মেয়ের যৌনাঙ্গে ক্ষত চিহ্নসহ নানা আলামত দেখতে পাওয়া যায়। এরপর মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে ডাক্তার জানায়, ছোট্ট মেয়েকে ধর্ষণসহ নানাভাবে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. ইব্রাহিম রহমান রুমি বলেন, যখন একটি মামলা আদালতে চলমান থাকে তখন এ বিষয়ে কথা বলা উচিত না।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ এক জিনিস, প্রমাণ আরেক জিনিস। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।
এ বিষয়ে কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। ছোট শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে কী না এ বিষয়ে ডাক্তারি রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে। এর আগে কিছুই আর বলতে চাই না।
তিনি আরো বলেন, ধর্ষণের অনেক অভিযোগ আমরা পাই। কিন্তু মেয়েকে বাবার ধর্ষণের কেস এর আগে আমি পায়নি।