বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী সুমন মিয়ার সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে শান্তার পারিবারিকভাবে মোবাইলে বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পরেই শান্তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে যান সুমন। সেখানে প্রথমে সুখেই কাটছিল শান্তার দিন। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন থাকলো না। শুরু হলো দাম্পত্য কলহ। তাও আবার যৌতুক নিয়ে।
সুমন ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য শান্তাকে তার বাবার কাছ থেকে টাকা আনতে বলেন। একপর্যায় শান্তাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন তিনি। বিষয়টি জানার পর সুমনকে কয়েক দফায় ৭ লাখ টাকা দেন শান্তার বাবা ছালাম শিকদার। কিন্তু টাকা দিয়ে বাঁচাতে পারল না মেয়ে। অবশেষে জীবন দিতে হলো শান্তাকে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে।
রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শান্তা ইসলাম উপজেলার ফতেপুর ইউপির থলপাড়া গ্রামের ছালাম শিকদারের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের খোকা মাস্টারের ছেলে সুমন মিয়া প্রায় ৮ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। পরবর্তীতে সেখানেই ব্যবসা শুরু করেন। বছর খানিক আগে থলপাড়া গ্রামের ছালাম শিকদারের মেয়ে শান্তা ইসলামকে পারিবারিকভাবে মুঠোফোনে বিয়ে করেন সুমন। বিয়ের ছয় মাস পরেই নববধূকে দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে যান তিনি। এর কয়েক দিন পর থেকেই তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। সুমন ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য শান্তাকে তার বাবার কাছ থেকে টাকা আনতে বলেন।
একপর্যায় শান্তাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন তিনি। বিষয়টি জানার পর সুমনকে কয়েক দফায় ৭ লাখ টাকা দেন শান্তার বাবা ছালাম শিকদার। রোববারও শান্তাকে নির্যাতন করা হয়। বিকেলে মেয়েকে একাধিকবার কল দেন বাবা ছালাম শিকদার। কিন্তু দীর্ঘ সময় তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ছালাম শিকদার আফ্রিকায় বসবাসরত তার আত্মীয়দের বিষয়টি জানান।
খবর পেয়ে রাতেই কয়েকজন আত্মীয় সুমনের বাসায় যান। ঘরের বাহির থেকে তালা মারা দেখতে পেয়ে তারা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ তালা ভেঙে শান্তার মরদেহ দেখতে পান। নিহতের শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম ও পেটে ১৪টি চাকুর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রউফ মিয়া বলেন, ‘সুমন ব্যবসা বড় করার জন্য শান্তাকে তার বাবার কাছ থেকে টাকা নিতে বলে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এক পর্যায়ে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ছালাম শিকদার লোন নিয়ে কয়েক দফায় সুমনকে ৭ লাখ টাকা দেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘রোববার শান্তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আফ্রিকায় বসবাসরত আত্মীয়দের বিষয়টি জানান ছালাম শিকদার। তারা সুমনের বাসায় গিয়ে ঘর তালা মারা দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে শান্তার মরদেহ উদ্ধার করে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আগামী বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার শান্তার মরদেহ দেশে আসতে পারে।’