বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: সুরা আর রাহমানে আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘ফাবি আইয়ে আলায়ে রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান’ অর্থ, তোমরা আমার কোন কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে? আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর সর্বত্র। আমাদের শরীরটা আল্লাহর নিয়ামত। আমরা কি তা কখনো চিন্তা করে দেখেছি? সুরা ফাতিরে আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর। আল্লাহ ছাড়া কি কোনো স্রষ্টা আছে? যে তোমাদের আসমানসমূহ ও জমিন থেকে রিজিক দান করে? তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।’ আয়াত ৩। এই যে তীব্র গরমের দাবদাহ চলছে আর মানুষ অস্থির হয়ে পড়ছে ঠিক এমনই সময় তাঁর বান্দাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফলের ব্যবস্থা করে তাদের নিয়ামত দান করেছেন। আম জাম লিচু কাঁঠাল তরমুজ কলা আঙুর খেজুর সব তাঁরই দান। সুরা কাফে আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি ও তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা। আর তাতে উদ্গত করেছি নয়নপ্রীতিকর সর্বপ্রকার উদ্ভিদ।’ আয়াত ৭। ‘আর আসমান থেকে কল্যাণময় বৃষ্টি বর্ষণ করি আর তা দ্বারা উৎপন্ন করি উদ্যান আর শস্যদানা। আর সমুন্নত খেজুর গাছ যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খেজুর।’ আয়াত ৯-১০। আল কোরআনে আরও বিবৃত হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য বৃষ্টি দ্বারা উৎপাদন করেন জয়তুন, খেজুর গাছ, আঙুর, এবং সব ধরনের ফল। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ সুরা নাহল, আয়াত ১১।
এ আয়াতে স্পষ্টভাবে আল্লাহতায়ালার নিয়ামত অভিনব রহস্যসহকারে জগৎ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, এতে চিন্তাশীলদের জন্য প্রমাণ রয়েছে। মানুষের চিন্তা করা দরকার যে শস্যকণা বা কোনো ফলের আঁটি মাটির নিচে ফেলে রাখলে তাতে পানি না দিলে আপনা- আপনি বিরাট গাছে পরিণত হতে পারে না। তা থেকে বিভিন্ন বর্ণ, রং বা মিষ্টি স্বাদের ফল-ফুল উৎপন্ন হতে পারে না। সবই আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কারিগরি ও রহস্য। আল্লাহ বলেন, ‘যিনি আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আসমান থেকে তোমাদের জন্য পানি বর্ষণ করেছেন আবার তা দিয়ে জমিনে উদ্যান তৈরি করেছেন অথচ তার একটি ছোট বৃক্ষ পয়দা করারও ক্ষমতা তোমাদের নেই। বল এসব কাজে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো ইলাহ আছে কি?’ সুরা নামল, আয়াত ৬০।
সুরা ইবরাহিমের ৩৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামত গণনা শুরু কর তবে তা গুনে শেষ করতে পারবে না।’
মানুষ আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতের কথা জানলেও অধিকাংশ নিয়ামতের কথা তার অজানাই রয়ে গেছে। আমাদের অজান্তেই আল্লাহ আমাদের অনেক নিয়ামত দান করেছেন। ঋতুভিত্তিক কত মৌসুমি ফল যে আমাদের জন্য তিনি নিয়ামত হিসেবে দান করেছেন তার কতটুকুই বা আমরা জানি।
আল্লাহর অনুগ্রহে উৎপাদিত সব মৌসুমি ফলের উপকারিতা আর তার গুণাবলি বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের যেসব নিয়ামত দিয়েছেন সেজন্য তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো।’ তিরমিজি। আল্লাহর প্রতি ইমান আনা আর তাঁর আনুগত্য করাই হলো সবচেয়ে বড় কৃতজ্ঞতা। এর মাধ্যমেই আমরা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি।
সুরা নাহলে আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামত গণনা শুরু কর তা শেষ করতে পারবে না।’ আয়াত ১৮। লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার