গৌরাঙ্গ বিশ্বাস, বিশেষ প্রতিনিধি : দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে উদ্বোধন হলো যমুনা রেল সেতু। মঙ্গলবার দুপুর ১২:১০ মিনিটে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশন থেকে উদ্বোধনী ট্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।
এর আগে সকাল ১১:০০টায়, রেল স্টেশন চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সেতুটির উদ্বোধন করেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন—
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আফজাল হোসেন,বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি,জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইতো তেরুয়ুকি, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরিফা হক, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
সেতুর নির্মাণ ও বৈশিষ্ট্য
৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবল ট্র্যাক ডুয়েলগেজ এই সেতু
৫০টি পিলার এবং ৪৯টি স্প্যান বিশিষ্ট
১০০ বছর স্থায়িত্বের আধুনিক ইস্পাত নির্মিত কাঠামো
৮৮টি ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা
৩৮টি ট্রেনের ধীরগতির ভোগান্তির অবসান
সেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে অবস্থিত, যা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, ঢাকা ও অন্যান্য অংশের সঙ্গে রেল যোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
রেল যোগাযোগে বিপ্লব
গত ১২ ফেব্রুয়ারি, পরীক্ষামূলকভাবে ১২০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে ট্রেন চালিয়ে সফলতা নিশ্চিত করা হয়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস এই সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেন বলেন,
যমুনা রেল সেতু চালুর ফলে আগের তুলনায় ট্রেন চলাচলের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ হ্রাস পাবে।❞
নির্মাণ ব্যয় ও অর্থায়ন
মোট ব্যয়: ১৬,৭৮০.৯৬ কোটি টাকা, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ: ৭২.৪%
, সরকারি অর্থায়ন: ২৭.৬%, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান: জাপানের ওটিজি ও আইএইচআই।
নতুন ভাড়া কাঠামো
সেতুটি ব্যবহারের জন্য যাত্রীদের পন্টেজ চার্জ দিতে হবে, যা পদ্মা সেতুর মতো ৪৫ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই সেতুর উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রেল খাতে নতুন যুগের সূচনা হলো, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও বেগবান করবে।