বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : সিলেট নগরের একটি আবাসিক হোটেলে দুই তরুণীকে রাতভর আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে।
ঘটনাটি গত ২৩ আগস্ট ঘটলেও সোমবার (২৯ আগস্ট) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে পৃথক মামলা করেন ভুক্তভোগী দুই তরুণী।
মামলায় আসামিরা হলেন- সিলেট নগরের পশ্চিম পাঠানটুলা এলাকার রানা আহমদ ওরফে শিপলু (৩৫), সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ নয়াবাজারের বাসিন্দা জুবেল (৩১), সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের মোহাইমিন রহমান ওরফে রাহি (৩৩), সুনামগঞ্জ সদর থানার হরিনাপাটি গ্রামের নাবিল রাজা চৌধুরী (৩৫) ও সুজন (৩৫) এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার তানজিনা আক্তার ওরফে তানিয়া (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি পাঁচ থেকে ছয়জন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে আইএলটিএস কোর্সের জন্য সিলেট নগরে আসেন বালাগঞ্জ উপজেলার এক তরুণী। এখানে এসে আরেক তরুণীর সঙ্গে নগরের শাহজালাল উপশহরের একটি বাসায় থাকতেন। সে সুবাদে ওই এলাকার একটি বিউটি পার্লারে গিয়ে তানজিনা আক্তার তানিয়া (২৫) নামের এক তরুণীর সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়।
গত ২৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানিয়া ফোন করে ওই তরুণীকে বলে- তার ভাইয়ের জন্য এবি পজিটিভ রক্ত প্রয়োজন। রক্ত দিতে ওই দুই তরুণী রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে যান। সেখানে যাওয়ার পর তানিয়া বলেন, রক্ত দেওয়ার আগে তার এক চাচাতো ভাইয়ের বাসায় একটু প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন শেষ করে তারা হাসপাতালে যাবেন।
এ কথা বলে কৌশলে ওই দুই তরুণীকে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলের ৪র্থ তলায় নিয়ে যান। সেখানে তাদের দুইজনকে আলাদা দুটি কক্ষে বসিয়ে রাখেন। এ সময় তানিয়ার সহযোগী কয়েকজন তরুণ ও যুবক এসে ওই দুই তরুণীকে আটকে রাখেন এবং পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
এছাড়াও ভিকটিম এক তরুণীর (১৮) কাছ থেকে তার মোবাইল ও নগদ টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যান তানিয়া ও বাকি অভিযুক্তরা।
পরদিন (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে ভিকটিম দুই তরুণীকে একটি কক্ষে নিয়ে তাদের কাছ থেকে ‘ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি’ এ মর্মে স্বীকারোক্তি নেয়া হয় এবং এ কথাগুলো মোবাইলে ভিডিও করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার ৫ দিন পর দুই ভিকটিম তরুণী জালালাবাদ থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ঘটনার শিকার দুই তরুণীকে সোমবার চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে।
মামলার পর আসামিদের আটক করতে অভিযান চলছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি। তবে ঘটনার শিকার দুই তরুণীর মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।