রাজধানীতে বড় দুই দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা গেছে।
সকালে নিউমার্কেট, বাংলামটর, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, পল্টন মোড়, বাড্ডা, নতুন বাজার, রামপুরা, এবং মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও তেজগাঁও এলাকায় গাড়ি ধীগতিতে চলতে দেখা গেছে। এ সময় রাস্তায় নেমে দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামী মানুষ। কিছু এলাকায় গাড়ি থেমে থাকায় অনেকে হেঁটে রওনা হন।
গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দেওয়ার পর থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও একই দিন ঢাকায় কর্মসূচি দেয়। এর পর থেকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর কর্মসূচির সমান্তরালে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। এক পর্যায়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি তৃণমূল পর্যায়েও পৌঁছায়।
বিএনপিদলীয় সূত্র জানিয়েছে, আজকের সমাবেশ থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় জনসমাবেশ কিংবা মহাসমাবেশের ঘোষণা করা হতে পারে।
পূজার কারণে আগামী ১০ দিন রাজপথে কোনো কর্মসূচি থাকবে না।
নয়াপল্টন ঘিরে বিএনপিসহ সমমনাদের ৬ সমাবেশ আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগসহ এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করবে বিএনপি। দুপুর ২টায় এ সমাবেশ শুরু হবে। এটিকে ঘিরে সমমনা দলগুলো সমাবেশ করবে।
বিএনপির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিকেল সাড়ে ৩টায় গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে, ১২ দলীয় জোট একই সময়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটও বিকেল ৩টায় পুরানা পল্টন আল-রাজী কমপ্লেক্সের সামনে সমাবেশ করবে।
এ ছাড়া লেবার পার্টি সকাল ১১টায় পুরানা পল্টন ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সামনে, এলডিপি কারওয়ান বাজার দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, এটা তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে কেন্দ্র করে এবারও আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, আগামী ২৮ অক্টোবর তারা ঢাকায় বড় সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পূজার সময় যেহেতু দলের কোনো কর্মসূচি থাকবে না, তাই সরকারকে কিছু বার্তা দেওয়ার জন্য এ সমাবেশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য আসবে।
গতকাল বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি কর্মসূচিই শান্তিপূর্ণ। বুধবারের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নিয়ে সরকারের দিক থেকে নানাভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ গায়েবি মামলা দিচ্ছে এবং গ্রেপ্তার করছে। আমরা মনে করি, এসবে কোনো কাজ হবে না। চলমান আন্দোলন বিজয়ের সিংহদুয়ার অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে। ঢাকাবাসীসহ বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মী-সমর্থকদের সরকারি চক্রান্ত ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে বুধবারের জনসমাবেশকে সফল করতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
মাঠে থাকবে আ. লীগ
ঢাকায় বিএনপির কর্মসূচির দিনে রাজপথে থাকছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও। তারা আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ ডেকেছে। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে এ সমাবেশ হবে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে এ সমাবেশ হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বড় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শেখ রাসেল দিবসে আমরা শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের আহ্বান করেছি। এতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীদের বড় জমায়েত নিয়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সমাবেশ সফল করতে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বৈঠক করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। এর আগে গত সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সংগঠনের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক হয়। এতে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদেরও ডাকা হয়েছিল। সেখানে দলের নেতাকর্মীদের বিপুল জমায়েত নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে নির্দেশনা দেন মহানগর উত্তরের নেতারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, ‘সমাবেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে। স্বাভাবিক কারণেই তাদের জমায়েত বেশি থাকবে। আমরা ঢাকা মহানগর উত্তরের পক্ষ থেকেও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমরা নিয়মিত রাজপথে কর্মসূচি পালন করব।’