জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী মোঃ জাহিদুর রহিম মোল্লা : ভিসা জটিলতায় এবছর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের জোড়া মসজিদের ১২৪তম বার্ষিক ওরস শরিফে ভক্তদের নিয়ে যেতে পারেনি রাজবাড়ীর ওরস স্পেশাল ট্রেন।
বাংলাদেশ-ভারত সরকার যৌথভাবে ১৯০২ সাল থেকে এই ওরস স্পেশাল ট্রেনটি চলাচলের ব্যবস্থা করে আসছে। কিন্তু এবছর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও ভিসা জটিলতায় যেতে পারেনি। যার কারণে তারা দুঃখ পেয়েছেন।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজবাড়ী আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়ার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে করোনার কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে ওরস স্পেশাল ট্রেন যায়নি। এই স্পেশাল ট্রেনটিতে প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজবাড়ী থেকে প্রায় ২ হাজারের বেশি ভক্ত রাজবাড়ী আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়ার উদ্যোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে যেতেন।
তবে এবার ওরসে যেতে না পারলেও মেদিনীপুরের সঙ্গে মিল রেখে একই দিন সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজবাড়ীর বড় মসজিদ খানকা শরিফে বড় পরিসরে ওরস শরীফ আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করেছে আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া। এখানে সব বয়সী প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার ভক্তবৃন্দের সমাগম হবে বলে আশা করছেন তারা। এরইমধ্যে ওরস আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের জোড়া মসজিদে হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ) এর বংশধর হযরত আল বাগদাদী আল মেদিনীপুরী (আ.) মশহুর নাম ‘মওলাপাক’ এর ১২৪তম ওরস শরীফ ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। গতবছর আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়ার উদ্যোগে ওরস শরীফে যোগ দিতে রাজবাড়ী থেকে ওরস স্পেশাল ট্রেনে ২৪টি বগি সংবলিত ট্রেনে ১ হাজার ৩১৮ জন পুরুষ, ৮৫৩ জন নারী ও ৮৫ শিশুসহ মোট ২ হাজার ২৫৬ জন যাত্রী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে যান। এই স্টেশাল ট্রেন ছেড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার লোকের সমাগম ঘটতো। এবার ট্রেন না যাওয়ায় সেসব কোনো কর্মযজ্ঞ নেই। তবে ওরস উদযাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে রাজবাড়ীর বড় মসজিদ খানকা শরীফ।
রাজবাড়ীর বড় মসজিদ খানকা শরিফের পেশ ইমাম হাফেজ শাহজাহান জানান, প্রতিবছরের মতো এবছরও বড় মসজিদ খানকা শরিফে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে সঙ্গে মিল রেখে ওরস শরিফের আয়োজন করা হয়েছে। তবে এবার ভিসা না পাওয়ায় যে ভক্তবৃন্দ ও মুরিদানরা পশ্চিমবঙ্গে ওরসে যেতে পারেননি তারাও এখানকার ওরসে অংশ নেবেন। সোমবার মাগরিবের নামাজের পর থেকে সারারাত চলবে ওরসের কার্যক্রম। ভোরে কিয়াম ও দোয়া মোনাজাত শেষে ফজরের নামাজ শেষে তবারক বিতরণের মাধ্যমে শেষ হবে ওরস শরীফ।
রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত জানান, এবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ওরস যাত্রী নিয়ে স্পেশাল ট্রেন যাওয়ার কোনো নির্দেশনা আসেনি।