বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: রাজারবাগ দরবার শরীফের সব সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে পীরের আবেদন খারিজ করেছেন চেম্বার আদালত। এর ফলে রাজারবাগ পীর ও রাজারবাগ দরবার শরীফের সব সম্পদ তদন্ত করতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এ আদেশ দেন। আদালতে রাজারবাগ পীরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুকুল।
এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমানের সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে দরবার শরিফ বা পীরের অনুসারীদের কোনো অংশ জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে বলা হয়। দুটি তদন্তই ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
পীর দিল্লুর রহমানের ‘অনুসারীদের’ করা মানবপাচারসহ বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় নাকাল আট ভুক্তভোগীর রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রাজারবাগ দরবার শরিফ ও পীর দিল্লুর রহমানের সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনটি করেছিলেন আট ব্যক্তি।
তারা হলেন- মো. আব্দুল কাদের, মাহবুবুর রহমান খোকন, ফজলুল করিম, জয়নাল আবেদিন, মো. আলাউদ্দিন, জিন্নাত আলী, আইয়ুবুর হাসান শামীম, নাজমা আক্তার ও নারগিস আক্তার। তাদের অভিযোগ, পীর দিল্লুর রহমানের অনুসারীরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচারসহ ফৌজদারি মামলা করে হয়রানি করছে।
এসব মামলা কারা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয়। এ প্রতিবেদনটিও ৬০ দিনের মধ্যে দিতে বলেছেন আদালত।
এছাড়া হয়রানি, অপদস্ত করতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফৌজদারি মামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (বিশেষ শাখা), অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপরাধ তদন্ত বিভাগ), ঢাকার জেলা প্রশাসক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপ মহাপরিদর্শক, গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমান ও মামলাগুলোর বাদীসহ ২০ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এর আগে রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, মানবপাচারসহ অন্যান্য অভিযোগে ৪৯ মামলা করা হয়। এসব মিথ্যা মামলায় বেশ কিছুদিন কারাভোগ করেন তিনি। অপরাধ না করেও এসব মিথ্যা মামলার আসামি হওয়া থেকে বাঁচতে তিনি উচ্চ আদালতের দারস্থ হন। তার করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলার বাদীদের খুঁজে বের করতে গত ১৪ জুন সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ সেপ্টেম্বর সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রতন কৃষ্ণনাথ ৬ পৃষ্টার তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেন।
সেখানে বলা হয়, রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে হয়রানিমূলক মামলার সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট উষ্মা প্রকাশ করেন।