বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ২১৩ আসন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজয়ে হ্যাট্রিক গড়লেও শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে ১ হাজার ৯৫৩ ভোট পরাজিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিতলেন শুভেন্দু অধিকারী। গণনার শুরুটা হয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিয়ে। তবে বাজি মাত বিজেপি প্রার্থীরই। রোববার সকালে ছক ভেঙে পোস্টাল ব্যালটে তৃণমূলের এগিয়ে থাকার প্রবণতা শুরু থেকেই দেখা গিয়েছিল। বেলা বাড়তেই এগিয়ে থাকার নিরিখে ব্যবধান বাড়াতে থাকে তৃণমূল।
দুপুর ১২টা বাজতেই পশ্চিমবঙ্গের ভোট কাঙ্খিত লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তৃণমূল কংগ্রেস। ট্রেন্ডের নিরিখে ২০০-র বেশি আসনে এগিয়ে যায় তৃণমূল। সরকার গড়ার স্বপ্ন তো দূর, ৭৫-রে থমকে গিয়েছে বিজেপি। পর্যুদস্ত বাম-কংগ্রেস ও আইএসএফ-এর জোট সংযুক্ত মোর্চা। এবার পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা বাম ও কংগ্রেস শূন্য। ভাঙড়ে জয় পেয়েছেন আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি।
এছাড়াও মমতার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভার বেশিভারভাগ মন্ত্রীরাই ভোটে জয়ী হয়েছেন। বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন সুব্রত মুখপাধ্যায়, জাভেদ খান, ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু, মন্টুরাম পাখিরা, শশী পাঁজারা। ভবানীপুরে রুদ্রনীল ঘোষকে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। একদা বাম ঘাঁটি যাদবপুরেও জয় পেয়েছেন তৃণমূলের দেবব্রত মজুমদার।
এবার পশ্চিমবঙ্গ মেরুকরণের ভোট হয়েছে। ফলাফলেই তা স্পষ্ট। এই লড়াইয়ে মমতার নেতৃত্বে তৃণমূলেই ভরসা রেখেছেন বঙ্গবাসী। ধুয়ে-মুছে গিয়েছে বাম-কংগ্রেস। সিপিএম নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই তোপ দেগে দলের সিদ্ধান্ত যেসব নেতৃত্ব উপর থেকে চাপিয়ে দেন পরাজয়ের দায় তাদেরই নিতে হবে বলে দাবি করেছেন দমদম উত্তরের বাম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য।
গত লোকসভায় উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে বিপর্যয় হয়েছিল তৃণমূলের। ২০১৯ লোকসভার নিরিখে উত্তরবঙ্গের ৩৭টি আসনে এগিয়েছিল বিজেপি, ১৩টিতে তৃণমূল। একুশের হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে অবশ্য উত্তর বাংলায় ভোট পুনরুদ্ধার করেছে জোড়া-ফুল শিবির। এবার তৃণমূল জয় পেয়েছে ২৭ আসনে, বিজেপির ঝুলিতে ২৬টি। জঙ্গলমহলেও সাফল্য পেয়েছে ঘাস-ফুল শিবির। কংগ্রেসকে ঘরাশায়ী করে মালদা-মুর্শিদাবাদেও বিরাট সাফল্য পয়েছে তৃণমূল।
তবে, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিভিন্ন দলের দলবদলুরা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ, প্রবীর ঘোষাল, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজাতা মণ্ডল, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সব্যসাচী দত্ত, বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, শীলভদ্র দত্ত। সূত্র : ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস