বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মাদার বখ্শ হল থেকে বিছানাপত্রসহ এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হলের ১৫৩ নম্বর কক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়া হয়। পরে আবাসিক শিক্ষক গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মহিবুল্লাহ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদ হাসান সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী বলে জানা গেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও হল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে হল প্রাধ্যক্ষের মাধ্যমে ১৫৩ নম্বর কক্ষে ওঠেন মহিবুল্লাহ। আজ দুপুরে ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী গিয়ে তার বিছানাপত্র বের করে দেন। তাকে রুম থেকে চলে যেতে বলেন। মহিবুল্লাহ বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানান। পরে প্রাধ্যক্ষ হলের আবাসিক শিক্ষক সাজু সরদারকে সেখানে পাঠান।
সাজু সরদার বিষয়টি সমাধানে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগ, হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রিন্স, ছাত্রলীগ কর্মী আশিকুর রহমান অপুকে নিয়ে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে বসেন।
সেখানে উপস্থিত হন সাংবাদিকরা। আবাসিক শিক্ষক বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগ সমাধানে রাজি হননি। এক পর্যায়ে সাংবাদিকরা বিছানা বের করার বিষয়ে আবাসিক শিক্ষক সাজু সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এসময় এক সাংবাদিক হলের সিট বাণিজ্য নিয়ে কথা বলতেই উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে যান।
এসময় ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগ বলেন, ‘এতোক্ষণ লিগ্যাল কথা হচ্ছিল। সিট বাণিজ্যের বিষয়টি এলো কেন? এখন আমি এই ছাত্রকে হল থেকে নামিয়ে দেবো। কে আসে আসুক। আপনি (আবাসিক শিক্ষক), প্রভোস্ট স্যার আর সাংবাদিক আসুক সমস্যা নাই।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘ওই সিটে আমাদের ছাত্রলীগের এক কর্মী ওঠার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে অন্যজন ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। পরে হাউজ টিউটর বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছেন।’
হলের আবাসিক শিক্ষক সাজু সরদার বলেন, ‘হলের সিট নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। আমি দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছিলাম। এসময় উচ্চস্বরে সোহাগ ওই শিক্ষার্থীকে যেকোনো মূল্যে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীকে রুমে থাকার নির্দেশ দিয়েছি।’
সার্বিক বিষয় মাদার বখশ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শামীম হোসেনকে একাধিকার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।