নারায়ণগঞ্জ – ১ রূপগঞ্জ আসনের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন মেম্বার এর বাড়িতে অবস্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার নির্বাচনী ক্যাম্প আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় এলাকার বাসিন্দা ঘুমন্ত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পে দেয়া দেওয়া আগুন আশপাশের বাড়ি ঘরে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ঘুম থেকে জেগে ছোটাছুটি করে সাধারণ মানুষ এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে নাওরার ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন প্রতিবেদককে বলেন, আমরা রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত দেড়টার দিকে ঘুম থেকে জেগে বেশ কিছু মহিলার চিৎকার শুনতে পাই। দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি পুরো এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার কেটলি প্রতীকের ভোট ক্যাম্প পুরোটা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর আগে গত ২৯ তারিখে এই ক্যাম্পটি স্থাপনের সময় রাতের বেলা ক্যাম্প থেকে ১৯ টি চেয়ার জোরপূর্বক নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। শুরুতে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা ভোট ক্যাম্পটি স্থাপনে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে ক্যাম্প স্থাপনের কারণে তারা ঐদিন রাতেই ১৯ টি চেয়ার নিয়ে যায় এবং গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে ভোট করলে প্রানে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। এরপরও কেন সরিয়ে না ফেলার কারণে আজ রাতে পুড়িয়ে দিল।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের ছেলে ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তাফিজুর রহমান নীরব বলেন, আমরা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান মোশারফ রফিকুল ইসলামের ভয়ে গেল ছয় মাস ধরে এলাকার ছেড়ে পালিয়ে ছিলাম। ২৯ তারিখ থেকে মাত্র দুই তিন দিন ধরে এলাকায় অবস্থান করছি। গেল কয় বছর ধরে আমাদের এলাকার প্রায় ৫০ টি বাড়ি ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে রফিকুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা। আগামী ৭ তারিখের ভোটের পর সবাইকে এলাকা ছাড়া করা হবে এই ঘোষণা দিয়ে গত কয়েকদিন ধরে নির্বাচনী প্রচার মাইকে মাইকিং করে বেড়াচ্ছে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা।
তাদের রক্ত চক্ষু ভিক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী কেতলি প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে প্রচারণা শুরু করি। এটা সহ্য করতে না পেরে আন্ডার রফিকের সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়িতে আগুন দিল। নাওড়া গ্রামের ওমর ফারুক, মোহাম্মদ শাহীন, রুবেল হোসেন, কানা মোজাম্মেল, জাহিদুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, লিটন হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মিজানূর রহমান, অপু, আউয়াল, জসীম উদ্দীন জসু, তরিকুল ইসলাম, এমদাদুল দুলাল এবং মোহাম্মদ রাকিব প্রকাশ্যে এসে আগুন দেয়। আগুন দেওয়ার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল এখনই বুঝি তারা পুরো এলাকায় আক্রমণ শুরু করবে।
বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ও রুপগঞ্জ থানার ওসিকে জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।