জুনায়েদ আহম্মেদ, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে ছিনতাই করতে গিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিরা লাল দেবনাথ (৫৫) কে হত্যার দায়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, হিরা লালের সাথে থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনতাই করতে গিয়ে গ্রেপ্তার জিয়াউর রহমান তুষার, সজিব হোসেন বাহার ও মোবারক হোসেন এ হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে। এসময় হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়। রবিবার দুপুরে পুলিশ সুপার মো: আকতার হোসেন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারকৃত তুষার রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের লুধুয়া, বাহার বামনী গ্রামের ও মোবারক দালাল বাজার এলাকার বাসিন্দা। ডাকাতিসহ বিভিন্ন ঘটনায় মোবারকের বিরুদ্ধে ২০টি ও বাহারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮টি মামলা রয়েছে। তবে তুষারের বিরুদ্ধে আগে কোন মামলা নেই। এ চক্রে সে নতুন।
গ্রেপ্তার তিনজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, প্রতিদিনই দোকান বন্ধ করে হিরালাল টাকা ও স্বর্ণালংকার সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে যান। এতে পরিকল্পিতভাবে তার কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনতাইয়ের ছক সাজায় অপরাধীরা। মোবারক কাজিরদিঘির পাড় বাজারে থেকে মোবাইলফোনে হিরালালের অবস্থান জানায়। পরে হিরালাল দোকান বন্ধ করে বের হলে মোবারক, বাহার ও তুষার মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থল গিয়ে দাঁড়ায়। তখন তুষার মোটরসাইকেলেই ছিল। বাহার ও মোবারক নেমে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। পরে বাহার স্বর্ণালংকারসহ টাকা ছিনতাইয়ের জন্য হিরালালের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে। একপর্যায়ে হিরালালের চিৎকারে লোকজন আসতে শুরু করলে বাহার ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করে। পরে তারা মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। হিরালালের চিৎকার চেঁচামেচির কারণে তারা স্বর্ণালংকার ছিনতাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো: আকতার হোসেন জানান, হত্যার ঘটনার পর পরই রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু অপরাধীরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। পরে তুষারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রত্যন্ত হাওড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে হত্যার ঘটনায় জড়িত গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে বাহার ও পরে গ্রেপ্তার দুইজনের সহায়তায় রায়পুর থেকে মোবারককে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর (শুক্রবার) রাতে সদর উপজেলার কাজির দীঘিরপাড় বাজারের মাতৃ শিল্পালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী হিরালালকে উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের তেঁতুলতলা এলাকায় ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা। ঘটনার পরদিন নিহতের ছেলে প্রীতম দেবনাথ অজ্ঞাতদের আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।