বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে এবার টি-২০ সিরিজ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে লড়াকু সংগ্রহ করেছে টাইগাররা।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-২০তে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আগে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা
নাঈম ওয়ানডে সিরিজের সময় চলা টি-২০ দলের অনুশীলনেও ছন্দে ছিলেন না মোটেও। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি ছিল তার। সেই থেকেই হয়তো, ৩২ ম্যাচের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নাঈম আজ শুরুতে স্ট্রাইক দিয়েছিলেন অভিষিক্ত মুনিম শাহরিয়ারকে।
এরপর স্ট্রাইক পেলেন, তবে টিকতে পারলেন না বেশিক্ষণ। দ্বিতীয় ওভার করতে আসা ফজলহক ফারুকি প্রথম বলটা করেন ইনসুইংগিং ইয়র্কার। লাইন ধরতে পারেননি নাঈম। বল গিয়ে সোজা আঘাত হানে প্যাডে।
ফারুকি এরপর জোরালো এক আবেদনই করেছিলেন। তবে আম্পায়ার সাড়া দেননি তাতে। সোজা রিভিউ করে বসেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী।
রিভিউতে দেখা যায় ব্যাটের সংযোগ হয়নি, বলও মিডল স্টাম্পের নিচের অংশে আঘাত হানতো। তাতে প্রথম সফলতা পায় আফগানরা। নাঈম ফেরেন ৫ বলে ২ রান করে। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এ ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে মুনিম শাহরিয়ারে ও টি-২০ তে অভিষেক হয়েছে ইয়াসির আলি রাব্বির। টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশের ৭৪ ও ৭৫তম খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক হলো মুনিম এবং ইয়াসিরের।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বলেই দারুণ লফটেড শটে বাউন্ডারি। দারুণ আভাস দিয়ে শুরু করলেন মুনিম শাহরিয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না অভিষেক রাঙাতে। পারলেন না খুব ঝড়ো ব্যাটিং করতেও।
শুরুর ওই বাউন্ডারির পর মুজিব উর রহমানকে টানা দুটি বাউন্ডারি মারেন মুনিম। কিন্তু পারেননি রশিদ খানের সামনে। ফ্লাইটেড ডেলিভারি একটু আগেভাগেই সু্ইপ করার চেষ্টা করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বল শেষ মুহূর্তে নেমে যায় আচমকা। শাফল করে সুইপ করার চেষ্টায় ব্যাটে-বলে করতে পারেননি মুনিম। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
মুনিম রিভিউ নেন। কিন্তু বল লাগত মিডল স্টাম্পে। হারাতে হয় রিভিউ। মুনিমের অভিষেক ইনিংস শেষ ১৮ বলে ১৭ রানে।
চার নম্বরে নেমে দলকে টানতে পারলেন না সাকিব আল হাসান। বিপিএলে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়া অলরাউন্ডার বিদায় নিলেন ৬ বলে ৫ রান করে। লেগ স্পিনার কাইস আহমেদ প্রথম ওভারেই পেলেন সাফল্য।
কাইসের ফ্লাইটেড বলে একটু আগেই সুইপ করার পজিশনে গিয়ে ব্যাট চালান সাকিব। একটু বাড়তি লাফিয়ে বল লাগে সাকিবের ব্যাটের ওপরের দিকে। সহজ ক্যাচ উঠে যায় শর্ট ফাইন লেগে। ক্যাচ নিতে একটুও বেগ পেতে হয়নি ফিল্ডার মুজিব উর রহমানকে।
এদিকে কাঈস আহমেদকে ডিপ মিড উইকেটে বিশাল ছয়ে যেন রানের ফোয়ারা ছোটানোর আভাস দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ১০ রানের বেশি করতে পারেননি টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। ৭ বলে ১ ছয়ে তিনি এই রান করেন। আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে তিনি ফেরেন। তিনে নামা লিটনকে কেউ সঙ্গ দিতে পারছেন না। মুনিম-সাকিবের পর এবার ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ।
ফিফটির পর ইনিংসটিকে বেশি দূর টানতে পারলেন না লিটন। আউট হয়ে গেলেন দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা ফজলহক ফারুকির বলে।
ফারুকির স্লোয়াল শর্ট ডেলিভারিতে বলের নিচে গিয়ে গায়ের শক্তিতে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন লিটন। কিন্তু মন্থর গতির কারণে টাইমিং হয়নি। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
লিটন আউট হলেন ৪৪ বলে ৬০ রান করে। সবশেষ টি-টোয়েন্টি ফিফটিতে ২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিলেন ৪৫ বলে ৬০।
থিতু হয়েও শেষ পর্যন্ত টিকতে পারলেন না আফিফ হোসেনও। লিটনের বিদায়ের পরপর তিনি আউট হয়ে গেলেন ২৪ বলে ২৫ রান করে।
আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ফুল লেংথ বল বৃত্তের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন আফিফ। কিন্তু শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারেননি ঠিকমত। তাতে জোর হয়নি শটে। কাভারে সহজ ক্যাচ নেন মোহাম্মদ নবি।