বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ২০০৬ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। সেদিন টাইগারদের প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। আজ (২২ জুলাই) এই ফরম্যাটে নিজেদের ১০০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রতিপক্ষ সেই জিম্বাবুয়ে। অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফীসের মতো এই ম্যাচেও জয়ের স্বাদ এনে দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের শততম ম্যাচটি জয়ে রাঙাল বাংলাদেশ দল।
এই ১০০ ম্যাচের মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৫ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ১২টি করে খেলেছে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ভারত আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছে ১১টি করে ম্যাচ। ১০টি ম্যাচ খেলেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬টি করে। এছাড়া আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া নেদারল্যান্ডের, ওমান, কেনিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেপাল, স্কটল্যান্ড ও হংকংয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
এদিন হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের সামনে ১৫৩ রানের টার্গেট দেয় জিম্বাবুয়ে। এই সমীকরণ মেলাতে বেগ পেতে হয়নি টাইগারদের। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও নাঈম শেখের ব্যাটে জয়ের মালা গাঁথা হয়ে যায় সফরকারীদের। বিজয়ের দিনেও অবশ্য খানিক আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সৌম্যকে। ফিফটির দিকে ছুঁটছিলেন তিনি, তবে ইনিংসের ১৪তম ওভারে দৌড়ে ২ রান নিতে গিয়ে বিপত্তি বাঁধান। এনগারাভার থ্রো সরাসরি আঘাত হানে স্টাম্পে। এতে সৌম্য কাটা পড়েন ৪৯ রানে।
সৌম্যর মতো ভুল পথে হাঁটেননি নাঈম শেখ। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন তিনি। ৪০ বলে পঞ্চাশ রানের কোটা পূরণ করার পরেও থামেননি নাঈম। মাহমদুউল্লাহ রিয়াদ ১২ বলে ১৫ রান করে রান আউট হওয়ার পর নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন নাঈম। শেষ পর্যন্ত ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৫১ বলের ইনিংসটি সাজান ৭টি চারের মারে। সঙ্গে সোহান অপরাজিত থাকেন ১৬ রানে। ৮ উইকেট ও ৭ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ দল।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মুস্তাফিজের বলে ৭ রান করে আউট হন ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানি। এরপর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলের হাল ধরেন রেগিস চাকাভা। ওয়েসলি মাধেভেরেকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মাত্র ৩৮ বলে জমা করেন ৬৪ রান। সাকিবের বলে মাধেভেরে ২৩ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে তাদের পার্টনারশিপ। এরপর চাকাভাও দ্রুত মাঠ ত্যাগ করেন।
চাকাভাকে দুর্দান্ত এক রান আউটে ফেরান নুরুল হাসান সোহান। জিম্বাবুয়ের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান আউট হন ২২ বলে ৪৩ রান করে। যেখানে ৫টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন তিনি। ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ৯১ রান তোলা জিম্বাবুয়ে চাকাভার উইকেট হারানোর পর খেই হারিসে বসে। টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। সিকান্দার রাজা (০), তারিসাই মুসাকান্দা (৬) ও ডিওন মেয়ার্স (৩৫) আউট হলে স্কোর বোর্ডে বড় রান তোলার স্বপ্নে ভাটা পড়ে জিম্বাবুয়ের।
১৫ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২০ রান। এরপর আর কোনও ব্যাটসম্যান বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হলে ১৯তম ওভারে থামে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। অলআউট হওয়ার আগে কোনরকমে দেড়শ ছাড়ায় তারা। ১৫২ রানের পুঁজি পায় স্বাগতিকরা। বল হাতে দাপট দেখিয়েছেন টাইগার পেসাররা। ৩ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শরিফুল ২ উইকেট নিতে ৩ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ১৭। সৌম্য সরকারও ১৮ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।