বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ক্যান্ডিতে আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। প্রথম দিন শেষে চালকের আসনে রয়েছে বাংলাদেশ।
যদিও ব্যাট হাতে নেমে শুরুতেই কালবৈশাখিতে লণ্ডভণ্ড হওয়ার আভাস দিয়েছিলেন ওপেনার সাইফ হাসান। ৬ বলে মোকাবিলা করে ফার্নান্দোর বলে আউট হন। রানের খাতা শূন্য রেখেই। টাইগার সমর্থকদের চোখে হতাশার ছায়া নেমে আসে এই আতঙ্কে।
এই বুঝি একের পর এক সাজঘরে ফেরার প্রতিযোগিতায় নামবেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা।
কিন্তু সাইফের আউট হওয়া নিয়ে স্বাগতিকদের উল্লাস মাটিয়ে মিশিয়ে দেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবার। টেস্টকে ওয়ানডে স্টাইলে খেলে মাত্র ৫২ বলে ক্যারিয়ারের ২৯তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম।
অপরপ্রান্তে সতর্ক-সাবধানী হয়ে খেলতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে ১৪৪ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন তামিম-শান্ত।
এ সময় ৯০ রানে অপরাজিত ছিলেন তামিম। আর শান্ত ১২৭ বলে পূরণ করেছিলেন তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক।
তামিমের সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে দিয়ে নার্ভাস নাইনটিতে আউট হয়ে গেলেন তামিম। বিশ্ব ফার্নান্ডোর বলে লাহিরু থিরিমান্নের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তামিম।
তামিম আউট হয়ে গেলে শান্তর সঙ্গী হন অধিনায়ক মোমিনুল হক। এবার মোমিনুলকে নিয়ে দুর্দান্ত জুটি গড়েন শান্ত। সিনিয়র সতীর্থ তামিমের ভুল থেকে মাঠেই শিক্ষা নিয়ে ঠিকই তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে গেলেন শান্ত।
২৩৬ বলে শতক পূরণ করলেন শান্ত। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির মুখ দেখলেন এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
শান্তর শতকের পর পর হাফসেঞ্চুরির দেখা পান মোমিনুলও। ম্যাচের ৭৮তম ওভারে ১১৭ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি।
অপরাজিত থেকেই দিন শেষ করেছে শান্ত-মোমিনুল জুটি।
৯০ ওভার শেষে তামিমের পর আর কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩০২ রান। শান্ত ২৮৮ বল খেলে ১২৬ রানে এবং মোমিনুল ১৫০ বল খেলে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন। অর্থাৎ তৃতীয় উইকেটে শান্ত-মোমিনুল জুটির সংগ্রহ ১৫০ রান।
আগামীকাল দ্বিতীয়দিনে এ সংগ্রহকে কতদূর টেনে নেয় এ জুটি তাই দেখার বিষয়।
আজ সাইফের আউটটি ছাড়া লংকান বোলাদের সাফল্য নেই একটিও। তামিমকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করলেও ১০১ বলে ১৫ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯০ রানের ইনিংস খেলে ভিত রচনা করে দিয়ে যান তামিম।
বাংলাদেশ দলের বড় প্রাপ্তি শান্তর ব্যাটে রান।
বয়সভিত্তিক আর ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করা এই ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বরাবরই ব্যর্থ ছিলেন।
ওয়ানডে বা টেস্টের কোনোটিতেই তার ব্যাট হাসছিল না। সাকিবের অনুপস্থিতির কোনো সুযোগই কাজে লাগাতে পারছিলেন না।
বারবার কম রানে সাজঘরে ফেরায় সমালোচনা সইতে হচ্ছিল তাকে। সবশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে দুই ইনিংসে করেছিলেন মাত্র ১৮ আর ১২ রান। এমন পারফরম্যান্সে জাতীয় দলেই তার থাকাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
ক্যারিয়ারের এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলংকায় পাল্লেকেলেতে দূর্দান্ত এক ইনিংস খেললেন শান্ত। সমালোচকদের জবাব দিলে ব্যাট হাতেই।
বলতে গেলে অনেক সাধনার পর সেঞ্চুরির মুখ দেখলেন শান্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে তার ইনিংসগু্লো ছিল-২৫, ০, ৪ আর ১১ রানের। ৬ টেস্ট শেষে গড় মাত্র ২১.৯০। এমন গড়ও হতো না যদি দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তার ৭১ রানের ইনিংসটি না থাকত ।
যা ছিল এতোদিন পর্যন্ত তার সর্বোচ্চ। আজ নিজের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেলেন শান্ত। ২৩৫ বলে ১২ চার ১ ছক্কায় সেঞ্চুরি হাঁকালেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (১ম দিন শেষে)
টস : বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৩০২/২ (৯০ ওভার)
শান্ত ১২৫*, তামিম ৯০, মুমিনুল ৬৪*
বিশ্ব ৬১/২