বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ভালো থাকতে শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি প্রয়োজন মানসিক সুস্থতাও। আর আমাদের মন সবচেয়ে বেশি অসুস্থ করে তোলে দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ। চিন্তা করা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তবে দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ নিমিষেই কেড়ে নেয় মনের সুখ-শান্তি; যা জন্ম দেয় বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক রোগ। তাই ভালো থাকতে দুশিন্তামুক্ত ও মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে।
তবে কাজটি খুব কঠিন নয়। নিয়মিত ইয়োগা, মেডিটেশন, ব্যায়ামের মতো কিছু সুঅভ্যাসের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই শারীরিকভাবে সুস্থ এবং মানসিক চাপমুক্ত ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারেন।
যোগব্যায়াম
দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি সমস্যা। মানসিক চাপ কাটাতে যোগচর্চার বিভিন্ন আসন খুব ভালো কাজ করে। নাড়িশোধন প্রাণায়াম বা অনুলোম বিলোম প্রাণায়ামের মাধ্যমে নার্ভ শান্ত হয়। ফলে দুশ্চিন্তা লাঘব হয়। শীতলীকরণ, জানুশিরাসন, শবাসন, পদহস্তাসন ইত্যাদি যোগচর্চার বিভিন্ন আসনের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন এবং পেশির সামঞ্জস্য হয়। এতে শরীর দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে বিশ্রামে যেতে পারে।
তবে যোগব্যায়াম অবশ্যই কোনো অভিজ্ঞ গুরুর কাছে বা ভালোমানের প্রতিষ্ঠানে শেখা উচিত।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা দূর করতে শবাসন পদ্ধতি-
১. প্রথমে হাত শরীরের দুই পাশে মেলে রেখে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন।
২. দুই পায়ের মাঝখানে ৬ ইঞ্চি পরিমাণ ফাঁকা থাকবে।
৩. ডান হাত শরীর থেকে ৬ ইঞ্চি পরিমাণ ডানদিকে থাকবে এবং বাম হাত শরীর থেকে ৬ ইঞ্চি পরিমাণ বাম দিকে থাকবে। এ সময় হাতের তালু থাকবে আকাশের দিকে।
৪. এবার খুব ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। মনকে সমস্ত চিন্তামুক্ত করুন এবং শরীরকে শিথিল করে দিন। মনে মনে ভাবুন আপনার শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ এবং আপনি খুব আরাম পাচ্ছেন।
মেডিটেশন করুন
মেডিটেশন হচ্ছে যোগব্যায়ামের ৮টি ধাপের একটি। তাৎক্ষণিক ক্লান্তি ও মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন অত্যন্ত কার্যকর। মেডিটেশনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। দূর হয় হতাশা ও নেতিবাচকতা। মেডিটেশন আমাদের শরীরকে শিথিল এবং মন প্রশান্ত করে। ফলে দুশ্চিন্তা দূর হয়ে দেহ-মনে সুখানুভূতি হয়। তাই নিয়মিত মেডিটেশন করুন।
যেতে পারেন জিমে
নিরাপদে এবং সঠিকভাবে শরীরচর্চা করতে যেতে পারেন শরীরচর্চা কেন্দ্রে। এরোবিকস, জোম্বা ড্যানস, স্টেপার ড্যানসসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম শরীরচর্চা কেন্দ্রে গিয়ে করতে পারেন।
প্রতিদিন হাঁটুন
হাঁটা হচ্ছে কম পরিশ্রমে উপযুক্ত একটি ব্যায়াম। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন। এতে শরীরের ক্যালরি ঝরে শারীরিকভাবে আপনি হয়ে উঠবেন ফিট, আর থাকবেন স্ট্রেসমুক্ত।
সময় দিন
শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিদিন নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখুন। আর এ সময়টা আপনি ব্যয় করুন একদমই নিজের মতো করে। এ সময় গান শুনে, বই পড়ে, সিনেমা দেখে কিংবা আপনার ভালো লাগার যে কোনো কিছু করে সময় কাটাতে পারেন। এছাড়া সম্ভব হলে প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে সবুজ প্রকৃতিতে কিছুটা সময় কাটান।
হাসুন
হয়তো হাসার মতো পরিস্থিতি নেই, তবু চেষ্টা করুন হাসার। কারণ হাসি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, মন ভালো রাখে আর বিষণ্নতা দূর করে।
প্রয়োজন বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত ঘুম
একটানা কাজ না করে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ৫-১০ মিনিট বিশ্রাম নিন। আর লম্বা কাজের পর আয়েশ করে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিন এবং প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান।